#Budget2019: দেশের শিক্ষায় কত টাকা বরাদ্দ করল কেন্দ্র?

নয়াদিল্লি: পাঁচ বছরে ছ’বার বাজেট পেশ করল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকার৷ মধ্যবিত্ত, কৃষক, গ্রামীণ অর্থনীতি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য বাজেটে বেশ কিছু চমক দিয়েছেন রেলমন্ত্রী ও অস্থায়ী অর্থমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল৷ কিন্তু, ২২ পাতার গোটা বাজেট ভাষণে কোথায় গেল শিক্ষার মান উন্নয়নের প্রসঙ্গ? কত বাড়ল শিক্ষায় বাজেট বরাদ্দ? কোথায় গেল স্থানীয় চাকরির আশ্বাস? কোথায় গেল

0cd3f7b0cf06c17b71c38b8a7872e4f1

#Budget2019: দেশের শিক্ষায় কত টাকা বরাদ্দ করল কেন্দ্র?

নয়াদিল্লি: পাঁচ বছরে ছ’বার বাজেট পেশ করল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকার৷ মধ্যবিত্ত, কৃষক, গ্রামীণ অর্থনীতি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য বাজেটে বেশ কিছু চমক দিয়েছেন রেলমন্ত্রী ও অস্থায়ী অর্থমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল৷ কিন্তু, ২২ পাতার গোটা বাজেট ভাষণে কোথায় গেল শিক্ষার মান উন্নয়নের প্রসঙ্গ? কত বাড়ল শিক্ষায় বাজেট বরাদ্দ? কোথায় গেল স্থানীয় চাকরির আশ্বাস? কোথায় গেল বছরে দু’কোটি কর্মসংস্থানের বার্তা? দীর্ঘ বাজেট ভাষণে কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে ঠিক কী জানালেন অস্থায়ী অর্থমন্ত্রী?

এদিন বাজেট পেশ করে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ালেন খুবই সামান্য৷ গত অর্থবর্ষের তুলনায় বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো হলেও তা উল্লেখযোগ্য ভাবে কম৷ তবে, শিক্ষা ঋণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে এবারের বাজেটে৷ শিক্ষায় বাজেট বরাদ্দ প্রসঙ্গে ঠিক কী বলেছেন অস্থায়ী অর্থমন্ত্রী?

এদিন পীযুষ গোয়েল বলেন, ‘‘এখন শেষে শিক্ষা ঋণের উপর কোনও বাড়তি কর দিতে হবে না৷ একই সঙ্গে জাতীয় পেনশন স্কিম, চিকিৎসা বীমা, চিকিৎসা ব্যয় উপর প্রবীণ নাগরিকদের ঋণের ক্ষেত্রেও লাগবে না কোনও বাড়তি কর৷’’ এদিন শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০১৮-১৯ সালে দেশের উন্নয়নে মোট ব্যয় ২৪,৫৭,২৩৫ কোটি টাকা থেকে বেড়েছে ২০১৯-২০ সালে তা বাড়ানো হয়েছে ২৭,৮৪,২০০ কোটি টাকা৷ ৩,২৬,৯৬৫ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে৷ সেন্ট্রাল স্পনসর স্কিমস (সিএসএস) বরাদ্দা বাড়ানো হয়েছে ৩,২৭,৬৭৯ কোটি টাকা৷ জাতীয় শিক্ষা মিশনের বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে৷ গত বর্ষে ছিল, ৩২,৩৩৪ কোটি টাকা৷ এবার তা বাড়িয়ে ৩৮,৫২৭ কোটি টাকা করা হয়েছে৷ গতবারের তুলনায় ৬,২৩৮কোটি টাকা৷ শিশু শিক্ষায় বেড়েছে নামমাত্র৷ গতবছর এই খাতে ছিল ২৩,৩৫৭ কোটি টাকা, এবার তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৭,৫৮৪ কোটি টাকা৷

শিক্ষার পাশাপাশি কংস্থানের প্রসঙ্গ উঠে আসে৷ মোদি সরকারের উন্নয়ন প্রসঙ্গ তুলে ধরা হলেও অমিল কর্মসংস্থানের স্থায়ী সমাধান৷ এদিন বাজেট ভাষণে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘ দেশের অর্থনীতির বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে কর্মসংস্থান৷ আর সেই কারণে গত দুবছরে EFO দপ্তরে নাম নতুভুক্ত করেছেন অন্তত দু’কোটি চাকরিপ্রার্থী৷’’ এদিন তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বের বৃহত্তম যুবশক্তির দেশ ভারত৷ দেশের কর্মসংস্থান বাড়াতে আমরা প্রধানমন্ত্রী কুশল বিকাশ যোজনার মাধ্যমে এক কোটি চাকরিপ্রার্থীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে৷ মূদ্রা যোজনার মাধ্যমে সাড়ে ১৫ কোটি যুবককে ৭ লক্ষ ২৩ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকিযুক্ত ঋণ দেওয়া হয়েছে৷ এই দুই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে বেকারত্ব কমেছে৷ এই মুহূর্তে ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্টাটআপ হাব হিসাবে পরিণত হয়েছে৷ MSME সেক্টরের মাধ্যমেও ৫৯ মিনিটের মধ্যে ১ কোটি ঋণ দেওয়া হয়েছে৷’’

কিন্তু, বিকল্প কর্মসংস্থানের কথা বলা হলেও স্থায়ী চারকির বিষয়ে মুখ খোলেননি অস্থায়ী অর্থমন্ত্রী৷ গত পাঁচ বছরে দেশে কত কর্মসংস্থান হয়েছে, তাও জানাননি রেলমন্ত্রী ও অস্থায়ী অর্থমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল৷ ভোটের আগে কর্মসংস্থান ইস্যুতে নির্দিষ্ট দীশা না থাকায় চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে৷

শুক্রবার লোকসভা নির্বাচনের মাত্র দু’মাস আগে আজ মোদি সরকারের অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করে৷ বিরোধীদের হট্টগোলের মধ্যে দিয়েই শুরু হয় মোদি সরকারের শেষ বাজেট৷  বাজেট পড়তে শুরু করেন রেলমন্ত্রী ও অস্থায়ী অর্থমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল৷ তুমুল বিতর্ক উপেক্ষা করেই ইংরেজিতে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন গোয়েল৷ এদিন বাজেট পেশ করে অস্থায়ী অর্থমন্ত্রী জানান, আয়করের উর্ধ্বসীমা দ্বিগুন বাড়ানো হয়েছে৷ পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর ছাড়ের ঘোষণা করা হয়েছে৷ ফলে, ৩ কোটি করদাতা মুক্তি পাবেন বলেও জানান তিনি৷ একই সঙ্গে ৮০ সি অনুযায়ী দেড় লক্ষ টাকা বিনিয়োগে ৬.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে করছাড় মিলবে বলেও জানান তিনি৷ ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস থেকে বার্ষিক ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত সুদ করমুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়৷ চাকুরিজীবীদের স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন ৪০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার করার কথাও জানান তিনি৷ একই সঙ্গে TDS ছাড়ের ঘোষণাও করেন তিনি৷ মহিলাদের জন্য এই ছাড়ের ঘোষণা করা হয়৷

ব্যবসায়ীদের রিটার্ন এখন সম্পূর্ণ অনলাইন, সহজ ও সরল করা হয়েছে বলেও জানান তিনি৷ স্বাধীনতার পর থেকে জিএসটি দেশের সবচেয়ে বড় কর সংস্কার বলেও জানান তিনি৷ ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে জিএসটি সংস্কার করা হয়েছে বলে আশ্বাস দেন অস্থায়ী অর্থমন্ত্রী৷ বলেন, ‘‘৯৯.৫৪ শতাংশ রিটার্ন পাশ করে দেওয়া হয়েছে৷ প্রত্যক্ষ কর আদায় ৬.৩৮ লক্ষ কোটি থেকে বেড়ে হয়েছে ১২ লক্ষ কোটি টাকা৷  প্রত্যক্ষ কর সরলীকরণ করা হয়েছে৷’’ এদিন তিনি জানান, দেশের ইতিহাসে ১ কোটি আয়কর জমা করিয়েছেন৷ জানান, জিএসটি চালু হওয়ায় রাজ্যের আয় ১৪ শতাংশ বেড়েছে৷

অন্যদিকে, কর্মসংস্থান প্রসঙ্গেও বেশ কিছু প্রস্তাবের কথা জানান অস্থায়ী অর্থমন্ত্রী৷ এদিন তিনি জানান, গ্রাচুইটির সীমা বাড়াবো হবে৷ গ্রাচুইটির সীমা বেড়ে ৩০ লক্ষ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷ একই সঙ্গে PF-এর ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়ানোর কথা জানানো হয়েছে৷ কোনও শ্রমিকের মৃত্যু হলে পিএফের টাকা দ্বিগুন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷ এমনকী, ESI-র উর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ১৫ হাজার থেকে ৩১ হাজার টাকা করা হয়েছে৷ একই সঙ্গে বোনাস পাওয়ার ক্ষেত্রেও উর্ধ্বসীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ একই সঙ্গে আশা-কর্মী, বিড়ি শ্রমিক ও অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য বাজেট ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে বলে জানান গোয়েল৷

অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য নতুন পেনশন যোজনার ঘোষণা হল ২০১৯ অন্তর্বর্তী বাজেটে। নতুন এই প্রকল্পের নাম প্রধানমন্ত্রী শ্রম যোগী মন্ধন৷ অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকরা ৬০ বছরের পর থেকে মাসে ৩ হাজার টাকা করে পেনশন পাবেন। তার জন্য মাসে ১০০ টাকা করে জমা করতে হবে। তবে যাদের আয় ১৫ হাজার টাকার মধ্যে তাঁরাই এই যোজনার আওতায় পড়বেন।

এক পদ এক পেনশনে ব্যবস্থায় নয়া পদক্ষেপ প্রস্তাব কেন্দ্রীয় বাজেটে৷ এই প্রকল্পে ইতিমধ্যেই ৩৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানান অস্থায়ী অর্থমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল৷ একই সঙ্গে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দা বেশ খানিকটা বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি৷

এগিন বলেন, ‘‘দেশের প্রতিটি কোনে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে পেরেছি৷ বিদ্যুৎ, জল ও বাড়ি তৈরির জন্য আমরা উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছি৷ আগামী ২০২২ সালের মধ্যে সবার জন্য ঘরে আমরা তুলে দিতে পারব৷’’ প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ গ্রামে স্বচ্ছভারত প্রকল্প পৌঁছে গিয়ে বলেও জানান তিনি৷

বলেন, ‘‘কৃষকের সফলের দাম ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে৷ বেড়েছে ফসলের সহায়ক মূল৷’’ এদিন তিনি বলেন, ‘‘কৃষকদের চাহিদা মেটাতে পেরেছে সরকার৷ তাঁদের আয় দ্বিগুন করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি৷’’ কৃষকদের আয় বাড়াতে দুহেক্টর কম জমি আছে এমন কৃষকদের ৬ হাজার টাকা দেওয়ার কথাও জানান তিনি৷ এই খাতে ১২ হাজার কোটি টাকা খবর হবে বলেও জানান৷ সারাসরি কৃষকদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে বলেও জানান তিনি৷ এছাড়াও ‘‘গো-মাতার সুরক্ষার জন্য কেন্দ্র যা যা করার তাই তাই করবে৷’’ বলেন অস্থায়ী অর্থমন্ত্রী৷  গো-মাতার উন্নয়নকল্পে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করার ঘোষণা করেন তিনি৷ কামধনু আয়োগ প্রকল্প চালু করার কথাও জানা তিনি৷

বলেন, ‘‘বিশ্বের সব থেকে দ্রুত গতিতে ছুটছে ভারত৷ কমেছে মূল্যবৃদ্ধি৷’’ আর্থিক বৃদ্ধির হার বেড়েছে বলেও জানা তিনি৷ মূল্যবৃদ্ধির হার ৫ শতাংশের নীচে নিয়ে আনা হয়েছে বলেও জানান তিনি৷ অনাদায়ী ঋণ ৩ হাজার কোটি টাকা ভারতে এসে বলেও জানান তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *