কলকাতা: গত দেড় বছরে অনেকখানি বদলে গিয়েছে মানুষের জীবন৷ কর্ম জীবনের পাশাপাশি প্রভাব পড়েছে শিক্ষাক্ষেত্রেও৷ অনেকেরই পড়াশোনার সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটেছে৷ সেই ঘটতি পূরণ করতেই নয়া শিক্ষাবর্ষে অফলাইনে একশো দিনের ‘ব্রিজ কোর্স’ বা ‘সেতু পাঠ্যক্রমের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গত দেড় বছর ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় ধারাবাহিক পড়াশোনার সঙ্গে ছিন্ন হওয়া সম্পর্ক জোড়া দেওয়াই এর উদ্দশ্য৷ সেই সঙ্গে পাঠ্যক্রম কমিটির তরফে জানানো হয়েছে ষষ্ঠ, অষ্টম ও একাদশ শ্রেণিতে পাঠ্য হিসেবে জায়গা পাচ্ছে করোনা৷
আরও পড়ুন- স্কুলে ভর্তির নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য সরকার, কবে থেকে মিলবে ফর্ম?
রাজ্য শিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, অফলাইন ক্লাস শুরু হওয়ার পর প্রত্যেক শ্রেণিতেই পুরনো সিলেবাস ঝালিয়ে নিতে ব্রিজ কোর্স পড়ানো হবে। এ প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের পাঠ্যক্রম কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার বলেন, ‘‘১০০ দিনের মধ্যে এই ব্রিজ কোর্স শেষ করতে হবে৷ এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ১০০ দিনের সেতু পাঠ্যক্রম। ব্রিজ কোর্সের জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।” ২ জানুয়ারি ‘বুক ডে’ বা বই দিবসে ছাত্রছাত্রীদের নতুন শ্রেণির পাঠ্য পুস্তক দেওয়া হয়ে থাকে। ওই দিনেই প্রত্যেক বিষয়ে সেতু-পাঠ সংবলিত পৃথক বই দেওয়া হবে পড়ুয়াদের৷ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ এই উদ্যোগে খুশি৷ তাঁদের মতে এই ব্রিজ কোর্স থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে গ্রামাঞ্চলের পড়ুয়ারা৷ যারা কার্যক গত দেড় বছরে অনলাইন ক্লাসের কোনও সুযোগই পায়নি।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে স্কুল খুললেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ফের বন্ধ হয়ে যায়৷ এর পর গত ১৬ নভেম্বর থেকে ফের শুরু হয়েছে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস। কিন্তু লকডাউনের আগে যে-পড়ুয়া ষষ্ঠ শ্রেণিতে ছিল, এখন সেই অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। কিন্তু ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি জানা না থাকলে পরবর্তী ক্লাসে তাদের সমস্যায় পড়তে হবে৷ সেই সকল গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্যাংশ নিয়েই তৈরি হচ্ছে ব্রিজ কোর্সের বই। শিক্ষা দফতরের এক কর্তার কথায়, “কোন কোন বিষয়গুলি পড়ুয়াদের বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে, তাদের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষকেরা একটা ধারণা করে নিয়েছেন। ব্রিজ কোর্সে সেই সকল বিষয়ই রাখা হচ্ছে। একশো দিনের মধ্যে এই সব বই শেষ করা হবে৷’’