কলকাতা: করোনার আতঙ্কে দেশজুড়ে বন্ধ রাখা হয়েছে ছোটো-বড়, সরকারি-বেসরকারি সমস্ত ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, তেলেঙ্গানা, ছত্তিশগড় সহ কয়েকটি রাজ্যে ইতিমধ্যেই বার্ষিক পরীক্ষা বাতিল করে দিয়ে ক্লাস ওয়ান থেকে এইট পর্যন্ত সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের নতুন ক্লাসে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। এরপর দু’দিন আগেই কেন্দ্র সরকারের অধীনস্থ স্কুলগুলির জন্যেও একই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফেও একই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার ৩ মাস পর প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা ছাড়াই সবাইকে পাস করিয়ে দেওয়ার রাজ্যের ঘোষণার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে রাজ্যের একাধিক শিক্ষক সংগঠন৷
এবিষয়ে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করে, শিক্ষা দপ্তরের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি এবং বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, সরকারের এই ঘোষণায় পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত স্তরের শিক্ষাপ্রেমী মানুষ অত্যন্ত হতাশ ও বিস্মিত। এই একতরফা সিদ্ধান্ত চূড়ান্তভাবে অগণতান্ত্রিক। তাঁর মতে, বিশ্বব্যাপী করোনা নিয়ন্ত্রণে লকডাউন পরিস্থিতিতে রাজ্যসরকারি স্কুলগুলিতে নতুন শিক্ষাবর্ষের মাত্র তিন মাস হয়েছে অর্থাৎ এখনো ন-মাস বাকি আছে, তাসত্ত্বেও এখন থেকেই অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সমস্ত ছাত্রছাত্রীকে নতুন শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করিয়ে দেওয়ার এই ঘোষণা শিক্ষার্থীদের শিক্ষার প্রতি উৎসাহ কমিয়ে দেবে। পাশাপাশি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ ফেল চালু করার বিষয়টিও গুরুত্বহীন হয়ে যাবে।
বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হাণ্ডা সরকার এবিষয়ে একই মত পোষণ করেছেন৷ পাশাপাশি অনলাইনে সিলেবাস অনুযায়ী পড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, কেন্দ্র সরকার স্কুলগুলির পরিকাঠামো কাঠামো ও সেখানকার শিক্ষার্থীদের উচ্চবিত্ত পরিবারের পক্ষে অনলাইনে পড়াশোনা করানো সম্ভব হলেও। পরিকাঠামোহীন রাজ্য সরকারি স্কুলগুলিতে নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে এই প্রক্রিয়ায় পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সম্ভব নয়। শিক্ষামন্ত্রী এই সিদ্ধান্তকে শিক্ষাস্বার্থবিরোধী পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি করেন তিনি।