বয়স ১৪, ঠোঁটস্থ ৩ হাজার GK, ছোট্ট ছেলেকে আস্ত খবরের কাগজ বানিয়ে ফেললেন এই মা

শাম্মী হুদা: বর্তমানে সরকারি বেসরকারি চাকরির নিয়োগে বিভিন্নতা এসেছে। ছেলে মেয়েদের ব্রাইট ফিউচার হোক এমনটাই চান বাবা মা। তাই নামী স্কুল কলেজ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেন। তারপর মোটা মোটা বই পড়ে ক্যালকুলাসের অঙ্ক সমাধান করে একেবারে ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে পৌঁছে যাওয়া। ওহ এতটা যখন পেরিয়ে এসেছে তখন সাফল্য বাঁধা, এটা অনেকেই ধরে নেন। আর

বয়স ১৪, ঠোঁটস্থ ৩ হাজার GK, ছোট্ট ছেলেকে আস্ত খবরের কাগজ বানিয়ে ফেললেন এই মা

শাম্মী হুদা: বর্তমানে সরকারি বেসরকারি চাকরির নিয়োগে বিভিন্নতা এসেছে। ছেলে মেয়েদের ব্রাইট ফিউচার হোক এমনটাই চান বাবা মা। তাই নামী স্কুল কলেজ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেন। তারপর মোটা মোটা বই পড়ে ক্যালকুলাসের অঙ্ক সমাধান করে একেবারে ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে পৌঁছে যাওয়া। ওহ এতটা যখন পেরিয়ে এসেছে তখন সাফল্য বাঁধা, এটা অনেকেই ধরে নেন। আর ভুলটা হয়েই যায়। কেননা বইমুখি পড়াশোনায় ব্রাত্যই থেকে যায় কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, তাই শেষ মুহূর্তে সুবর্ণ সুযোগ হাত ছাড়া হয়ে যায়। খবরের কাগজ নিত্য পড়লেই এই বাধা সহজেই জয় করা যায়। নিজের ছাত্রী জীবন ও চাকরি জীবনে এই বিষয়টি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন একটি বহুজাতিক সংস্থার কনসাল্টিং ফার্ম এর ডিরেক্টর নিধি অরোরা।

গুরুগ্রামের এই মহিলা বুঝে গিয়েছেন মেধাবী ছাত্ররা এই বাধার মুখে পড়েই পিছু হটে। তিনি চান না তাঁর ছেলের সঙ্গেও এমন কিছু ঘটুক। তাই ছেলেকেও খবরের কাগজে অভ্যস্ত করে তোলার কাজে ব্রতী হন। আট বছরের ছেলের পড়ার উপযোগী সংবাদপত্র খোঁজার কাজ শুরু হয়। টানা একবছর অনুসন্ধান চালিয়ে ও নিধি এমন কোনও খবরের কাগজ খুঁজে পাননি যা তাঁর ছেলের উপযোগী হতে পারে। মিডিয়া হাইপ করতে গিয়ে খবরের কাগজের নিজস্বতা নষ্ট করে ফেলেছে, যে শিশু এখন গড়ে উঠছে, তার জন্য এসব প্রায় বিষ এর শামিল। তাই শিশু মনে ছাপ ফেলতে পারে এমন বিষয় খুঁজতে শুরু করেন নিধি, পেয়েও যান। তাই দিয়েই নিজে ছেলের জন্য খবরের কাগজ তৈরি করে ফেলেন এফোর সাইজের চার পাতার কাগজ যেখানে সমাজ, রাজনীতি, বিজ্ঞান, বিদেশ, আবিষ্কার, অঙ্ক, প্রযুক্তি, গ্যাজেট নির্ভর খবরের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ ও তা প্রতিরোধের উপায় , সংস্কৃতি মূলক খবর রয়েছে। প্রথম দিন স্কুল থেকে ফিরে এই কাগজ হাতে পেয়েই নিজের ঘরে ঢুকে গিয়েছিল ওই খুদে। গোটা কাগজ পরবি দারুণ খুশি। একসঙ্গে এতগুলো বিষয় যে চার পাতায় এঁটে যাবে বোঝেনি সে। মায়ের দেওয়া এই উপহার নিধির ছেলের পছন্দ হলে নতুন ভাবে চিন্তা ভাবনা শুরু হয়।

ছেলে নিজে থেকে নানা বিষয়ে জানার আগ্রহ প্রকাশ করলে সেসব খবর ও দিতে শুরু করেন নিধি। প্রথমে ছেলের বন্ধুদের মায়েদের জানান তাঁর নিজস্ব প্রকল্পের কথা, তারপর বান্ধবীদের বলেন। ফেসবুককে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সেখানে শিশুদের মনে আট থেকে ১৩, তাদের জন্য হাতে গরম সংবাদপত্র। প্রথমে সবাই বিষয়টিতে অবাক হলেও পরে খুব উৎসাহ দেখান। কর্মজীবী মায়েরা সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা ভেবে নিজেরাই খবর বেছে তা সম্পাদনার কাজ শুরু করেন। এমন কোনও বিষয় বা শব্দ সেখানে থাকবে না যা ঐ বয়সের বাচ্চার জন্য ক্ষতিকারক, ভাষাও সহজসরল হতে হবে। মায়েরা নিজেদের কাজের ফাঁকেই পেজ মেকআপ, সম্পাদনার কাজ করে থাকেন, পালা করে কাজ এগোয়। ২০১৭র জুন মাস থেকে চলছে এই কর্মকাণ্ড, এখন এই কাগজের পাঠক সংখ্যা তিন হাজার। নিধি অরোরা আশা রাখেন এই সংখ্যা আরো বাড়বে। প্রতি সপ্তাহে কাগজ তৈরি হওয়ার পর তার পিডিএফ ফাইল হোয়াৎসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে উৎসাহি মায়েদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, তারপর মা এরা নিজেরাই এ ফোর সাইজের পেজে সেই কাগজ প্রিন্ট করে বাচ্চাদের হাতে তুলে দেন। এভাবেই চলছে, নিধি মনে করেন গোটা দেশজুড়ে তার প্রকল্প সফল হলেই তিনি বুঝবেন আগামীর ভবিষ্যৎ এগোচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 + 7 =