ঘরে অভাব, কলেজে ভর্তির টাকা জোগাড়ে জুতো সেলাই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর

ঘরে অভাব, কলেজে ভর্তির টাকা জোগাড়ে জুতো সেলাই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর

ইংরেজবাজার: কিছুদিন আগেই সংবাদের শিরোনামে এসেছিল মালবাজারের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী অয়ন সেনের নাম। লকডাউনের জেরে অভাবের তাড়নায় ডিম বেচতে দেখা গিয়েছিল তাকে। এবার মালদহের হরিশচন্দ্রপুরের কনুয়া হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া সঞ্জয় রবিদাস। কলেজে ভর্তির টাকা জোগাড় করতে বাড়ির কাছেই রাস্তার ধারে জুতো সেলাই করতে বসছে সঞ্জয়।

মালদহের সঞ্জয় রবিদাস এই বছরের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। ছোটবেলা থেকেই অভাব অনটনের সঙ্গে সংঘর্ষ করতে হচ্ছে তাকে। অল্প বয়সেই বাবাকে হারিয়েছিল। তারপর সংসারের দায়িত্ব একা কাঁধে নেন তার মা। বড় হতে হতে সবই দেখেছে সঞ্জয়। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন একটু একটু করে দায়িত্ব নিতে শুরু করেছিল সঞ্জয় ও তার দাদা। পড়াশোনা ছাড়াও বাজারে জুতো সেলাইয়ের বাক্স নিয়ে বসত সে। সেই থেকেই দায়িত্ব কাঁধে নেওয়া। এদিকে করোনা পরিস্থিতি রুখতে রাজ্য সরকারের নির্দেশে মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যায় উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা।

এখনও পর্যন্ত পরীক্ষার সূচির ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনও ঘোষণা না হলেও কলেজে ভর্তির স্বপ্ন দেখে সঞ্জয়। তাই ভর্তির টাকা জোগাড় করতে এই লকডাউনের মধ্যে বাড়ির সামনেই জুতো সেলাই করতে বসছে সে। তার মা কল্যাণী বলেন, ‘বিধবা ভাতা পাইনি। বড় ছেলে বাড়িতে রয়েছে ঠিকই। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে আমরা পাচ্ছি না কোনও কাজও। খাবার নেই ঘরে।’ সরকারের তরফে যে রেশন দেওয়া হয়েছে, তা যথেষ্ট নয় বলেই জানিয়েছেন তিনি।

তাঁর স্বামী মারা গেছে বহুদি হল। অথচ মিলছে না বিধবা ভাতাও। এই বিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের দ্বারস্থ হলে অবশ্য তিনি বিষয়টি দেখবেন বলেই জানিয়েছেন। সঞ্জয় বলে, 'লকডাউন না থাকলে পরীক্ষা হয়ে যেত। ভর্তির টাকাও জোগাড় হয়ে যেত।' সংসারে অভাব, তার মধ্যেও নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছে হরিশচন্দ্রপুরের কনুয়া হাইস্কুলের সঞ্জয় রবিদাস। কলেজে ভর্তির টাকা সে জোগাড় করবেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *