কলকাতা: একই অঙ্গে কত রূপ। সাদা উর্দিতে শুধু প্রশাসনিক কাজকর্মই নয়, এবার সামাজিক কাজেও দেখা গেল কলকাতার এক পুলিশকর্মীকে। শহরের এক ট্রাফিক সার্জেন্টের হাত ধরে দেখা গেল এক ‘মানবিক শিক্ষালয়’। গাছের ছায়ায় খোলা আকাশের নিচে চলছে পাঠদান। ঘটনার সাক্ষী রইল কলকাতার এক ফুটপাথ। বালিগঞ্জ ITI -এর কাছে রোজ সাউথ-ইস্ট ট্রাফিকের দায়িত্ব সামলান সার্জেন্ট প্রকাশ ঘোষ। ‘অন ডিউটি’ তে ট্রাফিক সামলানো তাঁর প্রথম কাজ, কিন্তু এরই মাঝে সমাজের আর এক গুরুত্বপূর্ণ দায় মাথায় নিয়েছেন। কাজের ফাঁকে শিক্ষকের ভূমিকাও পালন করেন তিনি। এই ছবি নিজের ক্যামেরায় বন্দি করেন সাংবাদিক অর্ণবাংশু নিয়োগী৷
দেখা গিয়েছে, ডিউটি এরিয়াতেই প্রতিদিনই বছর আটের বাচ্চাটিকে খেলাধুলা করতে দেখেন। তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র সে, তার মা পাশেই রাস্তার ধারের একটি খাবারের দোকানে কাজ করেন। ফুটপাথেই জীবন কাটে তাদের। এমতাবস্থায়, সার্জেন্ট প্রকাশ ঘোষ খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে, ছেলের ভালো ভবিষ্যতের আশায় অত্যন্ত কষ্টের মাধ্যমেই সরকারি স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন মা। কিন্তু ছেলের যে পড়াশোনায় মোটেই মন নেই! মায়ের চিন্তার কারণ হয়ে উঠছিল। অতএব দারস্থ হন কর্মরত ওই ট্রাফিক সার্জেন্টের। সব শুনেই সাধ্যমতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন সার্জেন্ট প্রকাশ। নিজের কাজের ফাঁকেই নিয়ম করে ওই শিশুটিকে পড়াতে বসেন তিনি।কোনওদিন ট্রাফিক সামলানোর ফাঁকে ফাঁকে, আবার কোনওদিন ডিউটি শেষ করে শিশুটিকে শিক্ষা দেওয়ার ভার নিজের কাঁধে তুলে নেন প্রকাশবাবু। তবে, গায়ে উর্দি এবং পায়ে ভারি বুটের কারণে দাঁড়িয়ে পড়ান। TLM হিসেবে বেছে নেন গাছের সরু ডালকে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেই ছবি। পুলিশের এহেন ভূমিকায় কার্যত খুশি ও গর্বিত বঙ্গবাসী।