নয়াদিল্লি: সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা বাতিল করার পক্ষে সরব হল দেশের ছয় রাজ্য৷ এই ছটি রাজ্য হল পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্র, ওডিশা এবং তামিলনাড়ু৷ অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা নেওয়া বাধ্যতামূলক৷ ছাত্রছাত্রীদের বিশ্বাসযোগ্যতা ও তাঁদের কেরিয়ারের জন্য অ্যাকাডেমিক মূল্যায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ এর সঙ্গে কোনও রকম আপোশ করা সম্ভব নয়৷
গত সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) তার সংশোধিত নির্দেশিকায় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে জানায়, এপ্রিলে প্রকাশিত নির্দেশিকা অনুযায়ী জুলাই মাসের বদলে ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা নেওয়া হবে সেপ্টেম্বর ২০২০-তে৷ তবে যে ভাবে করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলেছে তাতে ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সায় নেই ছয় রাজ্য সরকারের৷ প্রথমে ইউজিসি পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত রাজ্যের উপরে ছেড়েছিল। পরে তা সংশোধিত করে পরীক্ষা নেওয়া বাধ্যতামূলক করে৷ ইউজিসি’র এই নির্দিশিকাকে কেন্দ্র করেই নতুন করে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে রাজ্য সরকার৷
রাজ্যগুলির বিরোধিতার জবাবে মানব মন্ত্রকের এক বর্ষীয়ান আধিকারিক বলেন, ‘‘ ইউজিসি’র গাইডলাইনে বলা হয়নি যে, এখনই পরীক্ষা নেওয়া হবে৷ পরীক্ষা হবে সেপ্টেম্বরের শেষে৷ এছাড়াও বলা হয়েছে অফলাইন, অনলাইন কিংবা এই দুই পদ্ধতির মেলবন্ধনে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে৷ পরীক্ষা সম্পূর্ণ বাতিল করা সম্ভব নয়৷ ইউজিসি’র নির্দেশিকা মেনে চলাটা অত্যন্ত আবশ্যক৷’’ ওই আধিকারিক আরও বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের অ্যাকাডেমিক মূল্যায়ন যে কোনও শিক্ষাব্যবস্থার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক৷ পরীক্ষার পারফরম্যান্স পড়ুয়াদের আত্মবিশ্বাস এবং সন্তুষ্টি দেয়৷ এছাড়াও সারা বিশ্বে গ্রহণযোগ্যতার জন্য সক্ষমতা, কর্মক্ষমতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়৷
ডিগ্রি কোর্সের ফাইনাল সেমিস্টার বিষয়ে রাজ্যের শিক্ষা সচিবদের সঙ্গে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক বৈঠকে বসতে পারে বলে সূত্রের খবর৷ ইউজিসি আইন অনুযায়ী, কমিশনের নির্দেশনা মেনে চলা বাধ্যতামূলক৷ অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষেই সওয়াল করেছে৷ তবে যে সকল রাজ্য পরীক্ষা নেওয়ার বিপক্ষে রয়েছে, তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে আগ্রহী মন্ত্রক৷ তবে কোনও ভাবেই শিক্ষার সঙ্গে সমঝোতা করা হবে না বলেও সাফ জানানো হয়েছে৷
মন্ত্রকের ওই আধিকারিক আরও বলেন, প্রিন্সটন এবং এমআইটি, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজ, টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়, হাইডেলার্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশ্বের প্রথম সারির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিও অনলাইনের পন্থা অবলম্বন করেছে৷ সেখানে আমাদের এই পদ্ধতি অবলম্বনে সমস্যা কোথায়৷ এছাড়াও ইউজিসি-র গাইডলাইনে অনলাইন-অফলাইন বা দুটি পন্থার মিশ্রনে পরীক্ষা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে৷