নয়াদিল্লি: বিশ্ব জোড়া করোনা অতিমারীর জেরে গত বছরের মার্চ মাস থেকে দেশ জুড়ে শুরু হয়েছিল সম্পূর্ণ লকডাউন। ব্যবসা-বাণিজ্য, যাতায়াত, বিনোদন প্রভৃতি সবকিছুর মতোই সে সময় বন্ধ হয়েছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। করোনা ভ্যাকসিনের আবিষ্কারের পর এখন গোটা দেশের পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু লকডাউনের যে গভীর প্রভাব পড়েছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায়, তা কাটিয়ে উঠতে এখনও অনেক সময় লাগবে। দিল্লির ঘটনাই আরো একবার তা প্রমাণ করল।
করোনা অতিমারীর জেরে দেশের অন্যান্য প্রান্তের মতো দিল্লিতেও চালু হয়েছিল অনলাইন পঠনপাঠন প্রক্রিয়া। কিন্তু অতিমারী শেষে দেখা যাচ্ছে, অনলাইনের চক্করে দিল্লির বিভিন্ন স্কুল থেকে স্কুলছুট হয়েছে প্রায় ১৬৬০০০ পড়ুয়া। দিল্লি সরকার ও পুর নিগমের অধীনে থাকা স্কুলগুলি থেকেই এই পরিসংখ্যান সামনে এসেছে। জানা গেছে, রাজধানীর মোট পড়ুয়া সংখ্যার প্রায় ৮.৫ শতাংশই অতিমারী পরিস্থিতিতে স্কুলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ত্যাগ করেছে।
এদিন দিল্লি সরকার ও পুর নিগমের তরফ থেকে পেশ করা রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনা হয়েছে। বলা হচ্ছে, স্কুলে পাঠরত বিপুল সংখ্যক পড়ুয়ার কোনো হদিশই পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তারা স্রেফ উধাও হয়ে গিয়েছে। অতিমারীর মেঘ কাটিয়ে যখন ক্রমশ স্বাভাবিকের পথে রাজধানী, তখন স্কুল পড়ুয়াদের বিষয়ে এই ধরণের তথ্য যে মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়, তা বলাই বাহুল্য।
এ ব্যাপারে সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, করোনা অতিমারী এবং তৎপরবর্তী লকডাউন মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে এলোমেলো করে দিয়েছে অনেকটাই। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অনেকেই রাজধানী ছেড়ে ফিরে গিয়েছেন নিজের রাজ্যে। স্কুল গুলিতে অনলাইন মাধ্যমে শিক্ষাদান চালু হওয়ায় তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা সম্ভব হয়নি অভিভাবক এবং পড়ুয়াদের। সেই কারণেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। উল্লেখ্য, দিল্লিতে জানুয়ারি মাস থেকে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর অফলাইন পঠনপাঠন চালু হয়েছে। করোনা বিধি মেনেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে নবম ও একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদেরও স্কুলে ক্লাস করতে দেওয়া হবে, জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।