কলকাতা: লকডাউন এর শুরু থেকেই বন্ধ স্কুল কলেজ। কবে খুলবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু সেই কারণে তো আর পড়াশোনা থেমে থাকতে পারে না। বিশেষ করে প্রাথমিক স্তরে। কারণ যদি ভিত মজবুত না হয় তাহলে ভবিষ্যতে দেখা দেবে হাজারো সমস্যা। আর সেই কারণেই এবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষাদানের কাজ শুরু করলেন কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষিকা।
কলকাতা শহর ও শহরতলীতে শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। লকডাউনের মধ্যে ছাত্র ছাত্রীদের যাতে পড়াশোনায় অসুবিধা না হয় তার জন্য স্কুলের তরফেই অনলাইন ক্লাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কিন্তু গ্রামের ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা নেই। তাই সেখানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ক্লাস করানোর বন্দোবস্ত করেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এমনই ঘটনা ঘটেছে কাঁথি ১ ব্লকের গ্রামীণ নয়াপুর সুধীরকুমার হাই স্কুলে। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে 'চলো গ্রামে যাই শিশু পড়াই'। এই উদ্যোগে শিক্ষক-শিক্ষিকারা পাশে পেয়েছেন কাঁথি ১ ব্লকের বিডিও লিপন তালুকদারকে। পড়ুয়াদের এক জায়গায় জড়ো করে সামাজিক দূরত্ব মেনে বসিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সময়ে বিভিন্ন বিষয়ের ক্লাস নেওয়া চলছে। কখনো গাছতলায়, কখনো কোন বাড়ির উঠোনে চলছে পঠন-পাঠন।
স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, নির্দেশিকা মেনে প্রথমে অনলাইন ক্লাস শুরু করেছিলেন তারা। কিন্তু নেটওয়ার্কের সমস্যা সহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয় ছাত্রছাত্রীরা পরে অনলাইন ক্লাস বেশিদিন চালানো সম্ভব হয়নি। তাই এই নতুন উদ্যোগে সামিল হন তারা। আগে খুব বেশি হলে ৮ থেকে ৯ জন যোগ দিতে পারত অনলাইন ক্লাসে। কিন্তু এই পদ্ধতি অবলম্বন করার পর পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ৪০ জন ছাত্র-ছাত্রী এতে অংশ নিতে পারছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বসন্তকুমার ঘোড়াই উদ্যোগ নিয়ে এ কাজ শুরু করেন। এরপর স্কুলের বাকি শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাঁকে সমর্থন করেন। যার ফলে এখন বাড়িতেই চলছে পঠন-পাঠন।
শুধু কাঁথি নয়। নদীয়াতে একইভাবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। নদিয়ার মায়াপুর বামুনপুকুর ১ পঞ্চায়েতের সরডাঙ্গা গ্রামে এভাবেই চলছে পড়াশোনা। এখানে এই কর্মসূচির নাম 'বিশ্বজুড়ে অতিমারি শিক্ষক আজ বাড়ি বাড়ি'। বিভিন্ন জেলায় শিক্ষকদের এই প্রচেষ্টা ইতিমধ্যেই প্রশংসা কুড়িয়েছে সর্বত্র।