বিনামূল্যে ৩৫০-র বেশি রোগীর হৃদয়ে অস্ত্রোপচার করেছেন এই চিকিৎসক

শাম্মী হুদা: সরকারি বদান্যতায় দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় অনেক বদল এসেছে, জনসমর্থন ধরে রাখতে বিনামূল্যে নানাবিধ জনমোহিনী স্বাস্থ্য প্রকল্প চালু করেছে সরকার। তারপরেও দূরারোগ্য চিকিৎসার ব্যয়বহুল খরচ জোগাড় করতে না পেরে অচিরেই অনেক প্রাণ নিঃশ্বেষ হয়ে যায়, চেয়েও কিছু করতে পারে না অসহায় স্বজনরা। নিজগুনে এই তথাকথিত অসহায় মানুষগুলির সহায় হয়ে উঠেছেন পুণের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ মনোজ

বিনামূল্যে ৩৫০-র বেশি রোগীর হৃদয়ে অস্ত্রোপচার করেছেন এই চিকিৎসক

শাম্মী হুদা: সরকারি বদান্যতায় দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় অনেক বদল এসেছে, জনসমর্থন ধরে রাখতে বিনামূল্যে নানাবিধ জনমোহিনী স্বাস্থ্য প্রকল্প চালু করেছে সরকার। তারপরেও দূরারোগ্য চিকিৎসার ব্যয়বহুল খরচ জোগাড় করতে না পেরে অচিরেই অনেক প্রাণ নিঃশ্বেষ হয়ে যায়, চেয়েও কিছু করতে পারে না অসহায় স্বজনরা।

নিজগুনে এই তথাকথিত অসহায় মানুষগুলির সহায় হয়ে উঠেছেন পুণের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ মনোজ দুরাইরাজ। পুণের হাসপাতাল রুবি হল ক্লিনিকের এই চিকিৎসক এখানেই নিয়মিত প্রাকটিস করছেন, রোগী দেখছেন। পাশাপাশি মারিয়ান কার্ডিয়াক সেন্টার অ্যান্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনেও চলছে তাঁর কাজকর্ম, এই সংস্থার প্রধানও তিনিই। শুধু পেশার স্বার্থেই নয়, রীতিমতো ভালবেসে তিনি হৃদরোগকে নির্মূল করতে সচেষ্ট হয়েছেন। টাকার অভাবে যেন কোনও রোগী সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হন সেদিকে সবসময় লক্ষ্য রেখেছেন মনোজ দুরাইরাজ। এক্ষেত্রে বাবা ম্যানুয়েল দুরাইরাজকেই অনুসরণ করেন তিনি। বাবা ছিলেন একজন নামকরা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, টানা ২১ বছর ভারতীয় সেনার চিকিৎসক হিসেবেই কাটিয়েছেন তিনি,তারপর জনস্বার্থে এই মারিয়ান ফাউন্ডেশন তৈরি করেন। ২০৫ সালে এইমসে পড়াশোনা সম্পূর্ণ করে এখানেই যোগ দেন ছেলে মনোজ।

বিনামূল্যে ৩৫০-র বেশি রোগীর হৃদয়ে অস্ত্রোপচার করেছেন এই চিকিৎসকচিকিৎসক হিসেবে সবসময় বাবাকেই অনুসরণ করেছেন তিনি, বাবার একাগ্রতা রোগীকে যেকোনও উপায়ে সুস্থ করে তোলার ইচ্ছে তাঁর মধ্যে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করেছিল। এতদিন পরেও সেই ধারণার কোনওরকম বদল ঘটেনি। এখনও খুব মনোযোগ দিয়েই তাঁরকাছে আসা রোগীকে পরীক্ষা করেন ডাঃ দুরাইরাজ। সে ক্লিনিকে হোক বা ফাউন্ডেশনে।যত কঠিন প্রকারপৃদরোগ হোক না কেন কোনও রোগীকেই তিনি ফিরিয়ে দেন না।দেশের বেশিরভাগ মানুষ দারিদ্যসীমার নিচে বসবাস করায় সবার পক্ষে বিপুল খরচ করে চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়, এসত্য ভালমতো জানেন ডাঃ দুরাইরাজ।তাইতো তাঁর কার্ডিয়াক রিসার্চসেন্টারে আর্থিকভাবে দুর্বলদের আনাগোনা লেগেই থাকে।

বিনামূল্যে ৩৫০-র বেশি রোগীর হৃদয়ে অস্ত্রোপচার করেছেন এই চিকিৎসকপ্রয়োজনে একেবারে নিখরচায় অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করেন তিনি। সেসব টাকা জোগাড় করেন অনুদান থেকে।তবে কোনও কর্পোরেট সংস্থা বা ব্যবসায়ীরা নন, সরকারি চাকুরে অবসরপ্রাপ্ত কর্মী কিম্বা সুস্থ হয়ে যাওয়া কোনও রোগীর পরিবারই তাঁর ফাউন্ডেশনকে অর্থ সহায়তা করে থাকে। এভাবেই চলছে মারিয়ান, এতদিনে সম্পূর্ণ বিনামূল্য ৩৫০-ও বেশি রোগীর সফল চিকিৎসা করেছেন তিনি, হৃদযন্ত্রের প্রতিস্থাপনও হয়েছে বিনামূল্যে।

বিনামূল্যে ৩৫০-র বেশি রোগীর হৃদয়ে অস্ত্রোপচার করেছেন এই চিকিৎসকএকবার অস্ত্রোপচারের আগেই পেলেন সাড়ে ছয় লক্ষের অনুদান,কী করে যাবতীয় খরচ জোগাবেন তানিয়ে চিন্তায় ছিলেন, এই টাকা হাতে আসার পর নিশ্চিন্ত হন।দুঃস্থ পরিবারের শিশুরাই মূলত তাঁর রোগী, সম্প্রতি এক একাকী মায়রে কিশোরী মেয়ের হৃদযন্ত্রের সফল প্রতিস্থাপন করলেন তিনি, তার আগে ও পরে চলল ওষুধ।যার মাসিকখরচছিল ১৫০০০ টাকা,সব ওষুধই বিনামূল্যে দিল মারিয়ান ফাউন্ডেশন।

মনোজবাবুর মতে,সরকার চিকিৎসাক্ষেত্রে বিবিধ সুযোগ সুবিধা চালু করলেও সবাই সেসব সুযোগকে নাগালের মধ্যে পায় না।যাঁরা পান না, তাঁদের জন্যই মারিয়ান ফাউন্ডেশন। টাকা নয়, শুধু চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার মানসিকতা এখানে জরুরি, পাওয়া ও না পাওয়ার মাঝেই এই শূন্যতাকেই পূরণ করে চলেছেন ডাঃ মনোজ দুরাইরাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 1 =