কলকাতা: করোনা সংক্রমণের বিপদ বুঝে বন্ধ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান৷ দীর্ঘ লকডাউনের পর আনলক প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত বাংলায় খোলেনি স্কুল-কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরজা৷ আগের নির্দেশ অনুযায়ী আজ বুধবার রাজ্যে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে৷ কিন্তু মেয়াদ ফুরিয়ে এলেও এখনও সরকারিভাবে কোনও ঘোষণা হয়নি৷ সরকারি ভাবে স্কুল আরও কত দিন বন্ধ থাকবে, তা নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি না হওয়ার আগে আজ বড়সড় ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
আজ উত্তরকন্যায় দ্বিতীয় দিনের প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেখানে আইসিডিএস ও স্কুল চালুর প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আইসিডিএসে যেমন কাজ চলছিল, ঠিক তেমনই চলবে৷ অক্টোবর-নভেম্বর দু’টি মাস বাড়িয়ে দাও৷ কারণে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত আমাদের আইসিডিএস সেন্টারগুলি বন্ধ থাকছে৷ এবং স্কুল খোলার বিষয়টি কালী পুজোর পরে ভাবা যাবে৷ এই মুহূর্তে ভাবা যাচ্ছে না৷ কারণ এই মুহূর্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়৷’’
করোনা আবহের ইতিমধ্যেই ছয় মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ স্কুল-কলেজ বন্ধ৷ থমকে পঠন-পাঠন৷ বিকল্প মাধ্যমে পড়াশোনা চললেও তা সর্বগ্রাহ্য হয়নি৷ একদিকে যেমন করোনা সংক্রমণ, অন্যদিকে সিলেবাসের চাপ, সব মিলিয়ে বেশ ভাবেচিন্তে পা বাড়াতে চলেছে শিক্ষা দফতর৷ আজ স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার মেয়াদ সরকারিভাবে শেষ হলেও তা আরও বাড়তে চলেছে৷ তবে পুজোর আগে যে স্কুল খুলছে না, তারও ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী৷ তবে, পুজোর পর স্কুল খুললেও থাকবে সতর্কতা৷
রাজ্যে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিসেম্বর থেকে শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে চলেছে শিক্ষাবর্ষ৷ আজ স্কুল বন্ধ থাকার সময়সীমা শেষ হচ্ছে৷ প্রশ্ন উঠছে স্কুল-কলেজ খুলবে কবে? সরকারি ভাবে ঘোষণা হওয়ার আগে শিক্ষামন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, পুজোর আগে স্কুল কলেজ খুলছে না৷ করোনার মধ্যে স্কুল খোলার মত হঠকারী সিদ্ধান্ত এখনই নেওয়া হচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ একই সঙ্গে স্কুল খোলার আগে গাইডলাইন প্রকাশ করা হবে৷ সেই গাইডলাইন ইতিমধ্যেই বিকাশ প্রস্তুত করছে৷ কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পড়ুয়ারা স্কুলে আসবে, কী কী করনীয় শিক্ষকদের৷ কীভাবে ক্লাস হবে, সেই বিষয়েও তৈরি হচ্ছে গাইডলাইন৷ তবে যেহেতু এটা পুজোর মাস, ফলে ছুটি ও উৎসবের কথা ভেবে এখনই স্কুল-কলেজ খুল কলেজ খুলছে না বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ জানা গিয়েছে, আজ উত্তরবঙ্গ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ওই ঘোষণার পর স্কুল বন্ধের মেয়াদ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে রাজ্য সরকার৷
স্কুল খোলা নিয়ে মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রীর জানিয়েছিলেন, ‘‘শিশুদের স্কুলে টেনে এনে বিপদগ্রস্থ করার আগে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কী ধরনের স্বাস্থ্য বিধি এবং জীবাণুমুক্ত করা যায়, তা নিয়ে একটা রূপরেখা তৈরি হচ্ছে৷ সেই রূপরেখা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে৷ সেটা হলেই আমরা পরবর্তীতে জানিয়ে দেব৷ কীভাবে ক্লাস নেওয়া হবে, পরিকল্পনামাফিক আমরা জানিয়ে দেব৷ পুজোর মাস৷ সমস্ত দিকগুলি আলোচনা না করে হঠকারী সিদ্ধান্ত সরকার নেবে না৷ শিক্ষা দফতরও নেবে না৷’’ অর্থাৎ পুজোর আগে যে এক প্রকার স্কুল-কলেজ খুলছে না তা কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী৷