কলকাতা: করোনা মহামারি কী করে দিল! বিগত দু’বছর ধরে সংক্রমণের কারণে বন্ধ ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গোটা দেশের মতো বাংলাতেও খোলেনি স্কুলের দুয়ার। ঠিক দু’বছর পর এখন হালে স্কুল-কলেজ খুলেছে ঠিকই কিন্তু পড়ুয়াদের অবস্থা সাংঘাতিক। সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থার বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে এবং তাতে যা দেখা যাচ্ছে তা প্রচণ্ড উদ্বেগের। উল্লেখ করা হয়েছে, রাজ্যের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা অ-আ-ক-খ পর্যন্ত চিনতে পারছে না! বানান বা বাক্য গঠন থেকে তারা তো বহু বহু দূর।
আরও পড়ুন- ‘শিলিগুড়িতে দিদিই থাক’, বলছে খোদ বিজেপি! ব্যাপারটা কী
রাজ্যের প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের মধ্যে কে কোথায় দাঁড়িয়ে তার একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে বেসরকারি সংস্থাটি। এই রিপোর্টটির নাম ‘অ্যানুয়াল স্ট্যাটাস অব এডুকেশন রিপোর্ট’। তাতেই ফুটে উঠছে এই অবিশ্বাস্য ছবি। ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই রিপোর্ট প্রতি বছর বেরিয়েছে। কিন্তু ২০২০ এবং ২০২১ সালে তা প্রকাশিত হয় কোভিডের জন্য। আর এবার ২০২২ সালে তা বেরতেই আকাশ-পাতাল তফাৎ চোখে পড়ছে সকলের। ভূগোল, বিজ্ঞান, ইতিহাস তো বটেই অঙ্ক এমনকি বর্ণ চিনতে পারছে না অনেক পড়ুয়া। সমস্যা একেবারে প্রথম শ্রেণি থেকেই। এখন প্রশ্ন, গত দু’বছর ধরে তারা কী করছিল, তাদের সঙ্গে কী হয়েছে? রিপোর্ট বলছে, ২০১৮ সাল যেখানে সরল বাক্য বানান করে পড়তে পারত ৭৩.২ শতাংশ পড়ুয়া, সেখানে ২০২১ সালে সেই হার দাঁড়িয়েছে ৬৬.৩ শতাংশে। যুক্তাক্ষরহীন কিছুটা বড় বাক্যের ক্ষেত্রেও গত বছরের তুলনায় মান কমেছে অনেকটাই। আবার বর্ণের পাশাপাশি সংখ্যা চিনতেও রীতিমত খাবি খাচ্ছে অধিকাংশ পড়ুয়া। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের ১৮টি জেলার মধ্যে ১৭টির পরিবারভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণ করে এই ফলাফল এসেছে।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের স্কুল-কলেজ পুরোদমে খোলার পক্ষে সওয়াল করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। নোবেলজয়ী বাঙালি বলেন, শিক্ষায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে এইভাবে স্কুল বন্ধ রাখার ফলে। পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়ারা দ্বিতীয় শ্রেণির অঙ্ক করতে পারছে না এমনও দেখা গিয়েছে। এখন যেভাবে পড়ানো হচ্ছে তা সঠিক পদ্ধতি নয়। এই কারণেই স্কুল ছুটের সংখ্যা বাড়ছে বলে মনে করছেন তিনি। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্কুল খোলার পক্ষেই সওয়াল করেছেন।