এবারও জ্বলবে দেশ, খরার পূর্বাভাস! ফের ‘এল নিনো’র প্রকোপ

নিয়াদিল্লি: কৃষকদের জন্য মোটেও সুখের হবে না চলতি অর্থবর্ষ৷ আবহাওয়া পূর্বাভাস সংস্থা বুধবার জানিয়েছে, এই বছর স্বাভাবিকের থেকেও কম বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ স্বাভাবিকের চেয়ে ৫৫ শতাংশ কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে৷ দক্ষিণ ভারতে মে মাসের শেষের দিকে বা জুন মাসের শুরুতে প্রথম মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করে। তারপরেই দেশজুড়ে বর্ষা নামে৷ এরপর জুলাইয়ে ধীরে ধীরে উত্তর

imagesmissing

এবারও জ্বলবে দেশ, খরার পূর্বাভাস! ফের ‘এল নিনো’র প্রকোপ

নিয়াদিল্লি: কৃষকদের জন্য মোটেও সুখের হবে না চলতি অর্থবর্ষ৷ আবহাওয়া পূর্বাভাস সংস্থা বুধবার জানিয়েছে, এই বছর স্বাভাবিকের থেকেও কম বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ স্বাভাবিকের চেয়ে ৫৫ শতাংশ কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে৷

দক্ষিণ ভারতে মে মাসের শেষের দিকে বা জুন মাসের শুরুতে প্রথম মৌসুমী বায়ু প্রবেশ করে। তারপরেই দেশজুড়ে বর্ষা নামে৷ এরপর জুলাইয়ে ধীরে ধীরে উত্তর ভারতের দিকে এগিয়ে যায় বর্ষার মৌসুমী বায়ু। সাধারণত অক্টোবর থেকে উত্তর ভারত থেকে প্রত্যাবর্তন করে এই বায়ু৷ বেসরকারি ওই সংস্থার আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হতে পারে এবার৷ ৯৩ শতাংশ আশঙ্কা রয়েছে কম বৃষ্টির হওয়ার৷

স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের চেয়েও কম বৃষ্টির কারণ হিসেবে এল নিনোকেই উল্লেখ করেছেন স্কাইমেটের প্রধান যতীন সিং৷ স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের থেকে কম বৃষ্টি হলে স্বাভাবিকভাবেই চাষের উপর প্রভাব পড়বে৷ অর্থনৈতিক বৃদ্ধির সম্ভাবনা হ্রাস পাওয়ার সম্ভনা তৈরি হয়েছে৷  যতীন বলেন, “প্রশান্ত মহাসাগর গড় উষ্ণতার তুলনায় বেশিই উষ্ণ হয়ে উঠেছে। মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে এল নিনোর ৮০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে বলেই প্রোজেকশন মডেলে দেখা যাচ্ছে, অন্যদিকে জুন থেকে মে মাসের সম্ভাবনা রয়েছে ৬০ শতাংশ৷’’

২০১৮ সালে ঠাণ্ডা বেশ জাঁকিয়ে পড়লেও ২০১৯ সালের সার্বিকভাবেই তাপমাত্রা উষ্ণ হতে পারে বলেই আবহাওয়া অধিদফতরের কর্মকর্তারা আগে জানিয়েছিলেন। এল নিনোর ফলে তাপমাত্রার সার্বিক বৃদ্ধি ঘটবে এবছর৷ ২০১৮ সালে দক্ষিণ পশ্চিম এবং উত্তর পূর্ব দুই মৌসুমী বায়ুই স্বাভাবিকের থেকে কম মাত্রায় ছিল। অনিশ্চিত আবহাওয়ার কারণে দেশের বেশ কিছু অংশ কৃষি সমস্যা দেখা দিয়েছে৷

এল নিনো কী?

এল নিনো হচ্ছে সমুদ্রের উপরিভাগের জলের তাপমাত্রার একটি নিরবচ্ছিন্ন পরিবর্তন যখন গড় মানের সঙ্গে তুলনা করা হয়। আরও সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, পূর্ব-কেন্দ্রীয় গ্রীষ্মমন্ডলীয় শান্ত সমুদ্রের জলের গড়পড়তা তাপমাত্রা যখন কমপক্ষে ০.৫°সেলসিয়াস (০.৯°ফারেনহাইট) হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে৷ যখন এটি পাঁচ মাসের কম সময় ধরে সংঘটিত হয়, তখন এটি ‘এল নিনো’ অথবা ‘লা নিনো’র শর্ত পূরণ করে৷ যদি এই ব্যতিক্রম পাঁচ মাস বা তারও বেশি সময় ধরে চলতে থাকে তখন এটিকে ‘এল নিনো’ অথবা ‘লা নিনো’ নামে অভিহিত করা হয়। সাধারণত এটি ২-৭ বছরের যে কোন সময়ে এবং ন’মাস থেকে দু’বছর পর্যন্ত চলতে পারে।

এল নিনোর বৈশিষ্ট্য:

এল নিনো হওয়ার কারণ সম্পর্কে এখনও গবেষণা চলছে। এল নিনোর ঘটনা শুরু হয় যখন বানিজ্যিক বায়ু, ওয়াকার সঞ্চালন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে অনেক মাস ধরে বাধাপ্রাপ্ত হতে থাকে। অনেকগুলো কেলভিন তরঙ্গ মিলে কয়েক সেন্টিমিটার উঁচু এবং কয়েকশ কিলোমিটার প্রশস্থ তুলনামূলক গরম জলের সৃষ্টি হয় এবং উত্তর আমেরিকার কাছে একটি গরম ডোবার সৃষ্টি করে, যেখানে সাগরের তাপমাত্রা সাধারণত শীতল থাকে নিচ থেকে জলের উর্ধগমনের জন্য। শান্ত সমুদ্র তাপ সংরক্ষণ করে রাখে যা বৈশ্বিক বায়ুপ্রবাহের দিক পরিবর্তন করে এবং ফলশ্রুতিতে এর তাপমাত্রার পরিবর্তন বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনেও ভূমিকা রাখে। বৃষ্টিপ্রবাহ দক্ষিণ শান্ত সমুদ্র থেকে আমেরিকার দিকে পরিবর্তিত হয়৷ যখন, ইন্দোনেশিয়া এবং ভারত শুষ্ক থেকে শুষ্কতর হতে থাকে। ১৯৬৯ সালে জ্যাকব জার্কনেস এল নিনো বোঝার জন্য প্রস্তাব করেন যে, উত্তর শান্ত সমুদ্রে একটি ব্যতিক্রমি উষ্ণ বিন্দু উত্তর-দক্ষিণের তাপমাত্রার পার্থক্য ঘটাতে পারে বানিজ্যিক বায়ুকে এলোমেলো করে দিয়ে৷ যা কিনা উষ্ণ স্রোতকে দক্ষিণে ঠেলে দেয়। ফলশ্রুতিতে পূর্বে ক্রমাগতভাবে গরম জলের আবির্ভাব হতে থাকে। বিভিন্ন ব্যাখ্যা প্রস্তাব করা হয়েছে যার মাধ্যমে ইকুয়াটোরিয়াল শান্ত সমুদ্রে কীভাবে গরম জল আরও বাড়তে থাকে এবং নিম্ন গভীরতায় এল নিনোর প্রভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বাদবাকি ঠাণ্ডা এলাকাগুলো আরেকটি এল নিনো ঘটানোর জন্য কয়েক বছর ধরে উষ্ণতা ধরে রেখে পুনরায় শক্তি যোগাড় করতে থাকে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *