নয়া আতঙ্ক, গভীর রাতে মিসডকলের পর অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও ২ কোটি টাকা

শাম্মী হুদা: সিম সোয়াইপ, হ্যাঁ সাইবার অপরাধের দুনিয়ায় এ হল নতুন আতঙ্ক। এই সিমকার্ড সোয়াইপ করেই গ্রাহকের ব্যাংক ব্যালেন্স ফাঁকা করে দিচ্ছে জালিয়াতরা। ভারতেও পৌঁছে গিয়েছে অপরাধীদের হাত। গত ২৭ ডিসেম্বর রাতে এভাবেই প্রায় দুকোটি টাকা খুইয়েছেন মুম্বইয়ের এক ব্যবসায়ী। ঘটনাটি ঘটেছে পৌনে দুঘণ্টার ব্যবধানে। গত ২৭ তারিখ রাতে ওই ব্যবসায়ীর মোবাইলে পর পর ছটি

3 stocks recomended

নয়া আতঙ্ক, গভীর রাতে মিসডকলের পর অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও ২ কোটি টাকা

শাম্মী হুদা: সিম সোয়াইপ, হ্যাঁ সাইবার অপরাধের দুনিয়ায় এ হল নতুন আতঙ্ক। এই সিমকার্ড সোয়াইপ করেই গ্রাহকের ব্যাংক ব্যালেন্স ফাঁকা করে দিচ্ছে জালিয়াতরা। ভারতেও পৌঁছে গিয়েছে অপরাধীদের হাত। গত ২৭ ডিসেম্বর রাতে এভাবেই প্রায় দুকোটি টাকা খুইয়েছেন মুম্বইয়ের এক ব্যবসায়ী। ঘটনাটি ঘটেছে পৌনে দুঘণ্টার ব্যবধানে।

গত ২৭ তারিখ রাতে ওই ব্যবসায়ীর মোবাইলে পর পর ছটি ফোন কল আসে। প্রত্যেকটিই অচেনা নম্বর থেকে। রাত পৌনে বারোটা থেকে শুরু করে দুটো বাজতে দুই মিনিট বাকি। এই সময়ের মধ্যেই বার বার ফোন বেজেছে। স্বাভাবিকভাবেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন ওই ব্যক্তি,সকালে উঠে খেয়াল করেন ফোনটি আর কাজ করছে না, কোনও নেটওয়ার্ক নেই। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সার্ভিস প্রোভাইডারকে বিষয়টি জানান। তিনি খতিয়ে দেখে ব্যবসায়ীকে বলেন, ফোন নম্বরটি ব্লক করা হয়েছে। ২৭ তারিখ রাত ১১টা বেজে ১৫ মিনিটে ফোন নম্বরটি ব্লক করার জন্য সার্ভিস প্রোভাইডারের কাছে অনুরোধ আসে। সেই সময় সংস্থার কর্মীরা পরিষেবা বন্ধ করার সময় চেয়েছিলেন। সেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তাঁর মোবাইলে ছ’বার ফোন কল এসেছে। এবং ছটি কলের মধ্যে দুটি এসেছে ইউরোপ থেকে। এরপরই নড়েচড়ে বসেন ওই ব্যবসায়ী তিনি সঙ্গে সঙ্গে জানান পরিষেবা বন্ধের কোনও অনুরোধ জানাননি। ওই সার্ভিস প্রোভাইডার তাঁকে নতুন সিম কার্ড দেন। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগও দায়ের করেন ওই ব্যবসায়ী।

তখনও তিনি জানতেন না, বড়মাপের ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। ২৯ তারিখে তাঁরই এক কর্মী স্থানীয় ব্যাংকে যান প্রধানত ফান্ড ট্রান্সফারের কাজে। ওই ব্যাংকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর ভাল সম্পর্ক। সবসময়ই লেনদেন চলে, তাই তাঁর কর্মীদেরও ব্যাংকের সকলে চেনেন। ব্যাংকের তরফ থেকেই ওই ভদ্রলোককে জানানো হয়, গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে টাকাই নেই। এই শুনেই ব্যাবসায়ীকে খবর দেন ওই ব্যক্তি। তারপর যাচাই করে দেখা যায় কথাটা সত্যি। ব্যবসায়ীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে দফায় দফায় প্রায় দুকোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ২৮ তারিখে, ২৮ বার টাকা ট্রান্সফার হয়েছে। মোট ১৬টি ভিন্ন অ্যাকাউন্টে পড়েছে টাকা। সাইবার অপরাধীরা ব্যবসায়ীর সিমকার্ড সোয়াইপ করে যাবতীয় অ্যাকাউন্ট ডিটেলস নিয়ে নিয়েছে।

তারপর ওই সিমেই যখন ওটিপি এসেছে তখন টাকা সরিয়ে নিয়েছে। ব্যবসায়ী যাতে এই ঘটনার বিন্দুবিসর্গ তৎক্ষণাৎ জানতে না পারেন, তাই সিমকার্ড ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। এরপর গোটা একদিন ফোন কেন ব্লক হল তানিয়ে গ্রাহক ব্যস্ত থাকবেন। তারপর ব্যাংকের থেকে টাকা খোয়া যাওয়ার খবর আসবে। ততক্ষণে অপরাধী ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে এমনটাই ঘটেছে। যদিও হতবাক গ্রাহক সাইবার সেলে অভিযোগ জানিয়েছেন। কীকরে এমনটা ঘটল তানিয়ে তদন্তও শুরু হয়েছে।

এদিকে এই নয়া আতঙ্ক থেকে বাঁচতে বিশেষজ্ঞরা গ্রাহকদের আরও সতর্ক হতে বলছেন। কোনও ভাবে সিম কার্ড ব্লক হলে তড়িঘড়ি সার্ভিস প্রোভাইডারের সঙ্গে কথা বলে তা খোলানোর ব্যবস্থা করুন। থানায় অভিযোগ জানান, ব্যাংকের সঙ্গেও যোগাযোগ করে যাবতীয় লেনদেন বন্ধ রাখুন,দেরি করবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six − six =