দিল্লি: ঠেলাগাড়ি থেকে কুড়ি হাজার কোটির অরুণ আইসক্রিম। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা কে? তার জীবন কাহিনী জানেন কি?
অনেক ছোট বয়সে শুরু হয়েছিল ব্যবসা, কঠোর পরিশ্রম আর প্রতিবন্ধকতা দূরে ঠেলে এগিয়ে যাওয়ার অদম্য জেদেই আজ সফল তিনি। ৭৪ বছর বয়সেও তাঁর নাম আজ দেশের বহু মানুষের অতি প্রিয় আইসক্রিমের সঙ্গে জড়িয়ে। অরুণ আইসক্রিমের নাম শোনেননি এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর আর সেই অরুণ আইসক্রিমের প্রতিষ্ঠাতাকে চেনেন কি ? আরজি চন্দ্রমোগন। কলেজ পাশ করতে পারেননি, সংসারে ছিল অভাব। তাই ঠেলাগাড়ি করেই শুরু করেছিলেন আইসক্রিমের ব্যবসা। আজ ২০ হাজার কোটির সংস্থার মালিক তিনি। কিন্তু এতো সাফল্য কীভাবে?
চেন্নাইয়ের তিরুথঙ্গলে জন্ম, বেড়ে ওঠা চন্দ্রমোগনের। আর্থিক অসঙ্গতির কারণে পড়াশোনা চালাতে পারেননি তাঁর বাবা, স্কুল যাওয়া বন্ধ হয়। পরে কলেজে ভর্তি হলেও সেখানেও মাঝপথেই থামিয়ে দিতে হয় পড়াশোনা। তাঁর বাবা ছিল ছোট্ট দোকান। সেভাবেই চলত সংসার। পড়াশোনা ছেড়ে একটা কাঠগোলায় ৬৫ টাকা বেতনে কাজে যোগ দেন চন্দ্রমোগন। তারপর ১৯৭০ সালে সেই চাকরি ছেড়ে নিজের ব্যবসা শুরু।
তিনজন কর্মী নিয়ে একটা ২৫০ বর্গফুটের ঘরে শুরু করেন আইসক্রিমের ব্যবসা। ১৩ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করেছিলেন ব্যবসা আর তাদের বানানো আইসক্রিম মোট ১৫টি ঠেলাগাড়ি করে বিক্রি হত চেন্নাই জুড়ে। শুরুর দিকে অনেক সমস্যা থাকলেও প্রথম বছরেই এই আইসক্রিম বিক্রি করে ১.৫ লাখ টাকা উপার্জন করেছিলেন চন্দ্রমোগন।
১৯৮১ সালে বুঝতে পারেন আইসক্রিম ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকতে গেলে কিছু বদল আনতে হবে তাঁর ব্যবসায়। ধীরে ধীরে বদলাতে থাকে ব্যবসা। আরও ছোট ছোট শহরে আইসক্রিম বিক্রি করতে শুরু করেন তিনি। তারপরেই তামিলনাড়ুতে ‘অরুণ আইসক্রিম’ নামে নিজের একটি ব্র্যান্ড তৈরি করেন চন্দ্রমোগন। ১৯৮৬ সালে এই ব্র্যান্ডের নাম বদলে তিনি করেন ‘হাটসুন অ্যাগ্রো প্রোডাক্টস’। বর্তমানে তাঁর সংস্থা বছরে ২০ হাজার কোটি টাকা টার্নওভার করে। আরজি চন্দ্রমোগনের নিজের সম্পদের পরিমাণ ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী ১৩ হাজার কোটি টাকা। ভারত ছাড়াও ৪২টি দেশে তাঁর সংস্থার পণ্য রফতানি হয়। তাঁর পুত্র সি সিত্যা এখন সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পদে আছেন।
