নয়াদিল্লি: গাড়ি-বাড়ি ঋণে বড় ঘোষণা এসবিআইয়ের৷ আগামী পয়লা জুলাই থেকে কার্যকর হবে এসবিআইয়ের নয়া ঋণনীতি৷ শুক্রবার এসবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে, এখন থেকে বাড়ি-গাড়ি ঋণের হার পুরোপুরি আরবিআইয়ের ঋণনীতির সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে৷ আরবিআইয়ের ত্রৈমাসিক রেপো রেপো রেটের ভিত্তিতেই এসবিআই সুদের হার নির্ধারণ করবে৷
এসবিআইয়ের তরফে জানানো হয়ে, রিজার্ভ ঠিক যে হারে রেপো রেট ঘোষণা করবে সেই হারে সুদের হার নির্ধারণ করবে এসবিআই৷ রেপো রেট বাড়লে সুদের হারও বাড়বে৷ রেপো রেট কমলে সুদের হার কমবে৷ এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে গ্রাহকদের মধ্যে মিশ্র প্রভাব পড়বে৷ বাড়ি-গাড়ির ঋণের হার প্রতি তিন মাস অন্তর বদলে যাবে৷ ইএমআইয়ের উপরও সরাসরি প্রভাব ফেলবে৷ একই সঙ্গে খারাপ-ভাল দুই পরিস্থিতির মুখোমুখি হবেন দেশের আম জনতা৷ প্রভাব পড়বে ব্যবসায়ীদের উপর৷ সিসি ও ওডি অ্যাকাউন্টের সুদের হারও ওঠা-নামা করতে পারে৷ ব্যাংকে জমানো আমানতের উপর সুদের হার তিন মাস অন্তর ওঠানাম করতে পারে৷ সেক্ষেত্রে সুদের উপর নির্ভরশীল প্রবীণ ব্যক্তিদের সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে৷
রেপো রেট কী?
রিজার্ভ ব্যাংক যে সুদে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিকে ঋণ দিয়ে থাকে, তাকে বলে রেপো রেট৷ ব্যাংকগুলি যদি রিজার্ভ ব্যাংক থেকে কম সুদে টাকা ঋণ পায়, তাহলে তারাও কম সুদে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে টাকা ঋণ দিতে পারবে৷ গত বৃহস্পতিবার টানা তিন বার রেপো রেট কমিয়েছে আরবিআই৷ এখন থেকে ৫.৭৫ শতাংশ হারে অন্য ব্যাংকে টাকা ঋণ দেবে রিজার্ভ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ৷ ২০১৯-২০ আর্থিক বর্ষের মধ্যে এটা আরবিআইয়ের দ্বিতীয় সুদ নীতি৷ নতুন গর্ভনর শক্তিকান্ত দাসের আমলে তৃতীয় ঋণ নীতি৷
বৃহস্পতিবার রেপো রেট ০.২৫ বেস পয়েন্ট কমিয়ে ৫.৭৫ শতাংশ করা হয়৷ গত ৪ এপ্রিল ০.২৫ বেস পয়েন্ট কমিয়ে ৬ শতাং করা হয়৷ ফেব্রুয়ারিকেও একই ভাবে ০.২৫ শতাংশ কমে রেপো রেট কমানো হয়৷ এই দিনে টানা ৩ বার রেপো রেট কমালো রিজার্ভ ব্যাংক৷
গত বছরের জানুয়ারি থেকে রেপো রেট ৮ শতাংশই রেখে দিয়েছে শীর্ষ ব্যাংক। মূল্যবৃদ্ধি কমতে থাকায় বেশ কিছু দিন ধরেই বেঞ্চমার্ক সুদ কমানোর জন্য চাপ বাড়ছিল শীর্ষ ব্যাংকের উপর। ব্যাংক ও শিল্পমহলের সঙ্গে চাপ বাড়াচ্ছিল কেন্দ্রীয় সরকারও। পরে রেপো রেট ০.২৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ ৮ থেকে নামিয়ে আনা হয় ৫.৭৫ শতাংশে৷ এই সিদ্ধান্তের ফলে বাজারে টাকার যোগান বাড়বে বলে দাবি করেছে শীর্ষ ব্যাংকের৷
এতদিন রিজার্ভ রেপো রেট কমালেও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলির সুবিধা পেলেও সাধারণ ঋণগ্রহীতারা তা সুবিধা সরাসরি পেতেন না৷ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি যদি তাদের গৃহঋণে সুদের হার কমায়, তবে সেই সুবিধা পেতেন গ্রাহকরা৷ এখন যদি রেপো রেটের সঙ্গে সরাসরি এসবিআই তাদের ঋণনীতি যুক্ত করে দেয়, তাহলে প্রতি তিন মাস অন্তর অর্থনীতির কচকচানি জানতেই হবে গ্রাহকদের৷ তবে, সেই কাজে আজ বিকেল ডট কম কিছুটা হলেও সহযোগিতা করতে পারে৷
আরবিআই সূত্রে খবর, নতুন অর্থবর্ষ থেকে ব্যাংকগুলি গৃহঋণ দেওয়া শুরু করেছে তাদের আমানত জোগাড়ের প্রান্তিক খরচ বা মার্জিনাল কস্ট-বেসড লেন্ডিং রেট বা এমসিএলআরের ভিত্তিতে৷ আর, বেশিরভাগ ব্যাংকই তাদের গৃহঋণে সুদের হার নির্ধারণ করে ব্যাংকের এক বছরের এমসিএলআরের ভিত্তিতে৷ অর্থাৎ আপনি যে সুদের হারে গৃহঋণ নিয়েছেন সেই সুদের হার ঋণ নেওয়ার এক বছর পর সংশ্লিষ্ট এমসিএলআরে বৃদ্ধি বা হ্রাসের উপর নির্ভর করে বাড়বে বা কমবে৷