নয়াদিল্লি: চোখ রাঙাচ্ছে মহামারী করোনা৷ আর তার জেরেই মুখ থুবড়ে পড়েছে ভারতীয় অর্থনীতি৷ করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ভারতীয় অর্থনীতির গতি ফেরাতে এবার বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা করলেন আরবিআইয়ের গভর্নর শশীকান্ত দাস৷ আজ সাংবাদিক বৈঠক করে বেশ কিছু আশারবাণী শুনিয়েছেন তিনি৷ বেশ কিছু আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণাও করেছেন তিনি৷
আজ সকাল দশটায় সাংবাদিক বৈঠক করে আরবিআইয়ের গভর্নর শশীকান্ত দাস৷ জানান, করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুত ভারত৷ পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে আরবিআই৷ বলেন, ‘‘করোনা মোকাবিলায় বীরযোদ্ধাদের আরবিআই কুর্ণিশ জানাচ্ছে৷ আরবিআই করোনা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে৷ অন্ধকারের সময়ে কাটিয়ে ফের ঘুরে দাঁড়াবে ভারত৷ ব্যাংকগুলির উপর কড়া নজরদারি রাখছে আরবিআই৷ মানবিকতার স্বার্থে এখন যা যা প্রয়োজন সেই সমস্ত পদক্ষেপ নেবে আরবিআই৷’’ ভারতীয় অর্থনীতির বৃদ্ধি প্রসঙ্গে আরবিআই প্রধান জানিয়েছেন, ভারতে আর্থিক বৃদ্ধির হার ১.৯ শতাংশ হতে পারে৷
করোনার জেরে ক্ষতির মুখে পড়েছে ক্ষুদ্র শিল্পের৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকা আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা করা হয়েছে৷ পরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে টাকার পরিমাণ বাড়ানো হতে পারে বলে জানিয়েছেন আরবিআই গভর্নর৷ একইসঙ্গে আবাসন শিল্পে ১০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে৷ একইসঙ্গে মাইক্রোফিনান্সের জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ দেওয়া হচ্ছে৷ আইডিবির জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন তিনি৷ নাবার্ডের জন্য ২৫ হাজার কোটির প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে৷
আবাসন শিল্পের ক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধে ১ বছরের অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছে৷ যদিও এর আগে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিকে ৩ মাসের জন্য ঋণের ইএমআই স্থগিত রাখার অনুমোদন দিয়েছিল আরবিআই৷ এবার আবাসন শিল্পে আরও ১ বছর ঋণ মেটানোর জন্য আরও এক বছর অতিরিক্ত সময় ধার্য করেছে আরবিআই৷ ব্যাংকগুলিকে স্বস্তি দিয়ে ২৫ বেসিস পয়েন্ট রিভার্স রেপো কামাল আরবিআই৷ ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমে রিভার্স রেপো ৩.৭৫ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে৷ রেপো রেটের কোনও পরিবর্তন করা হয়নি৷
এদিন আরবিআই প্রধান জানান, এবছর বৃষ্টির স্বাভাবিক হবে বলে পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছে৷ ফলে ফসলের উৎপাদন বাড়তে পারে৷ সে ক্ষেত্রে আর্থিক ক্ষতি কিছুটা কমানো যেতে পারে৷ বাজারে নগদের যোগান বাড়ানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছেন তিনি৷ বড় ক্ষতির মুখে এই মুহূর্তে গাড়ি শিল্প৷ তাদের কেউ কিছু সুরাহা দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন আরবিআই গভর্নর৷ জানিয়েছেন, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার ৭.৪ শতাংশ হতে পারে বলেও আরবি প্রধান জানিয়েছেন৷ ভারতে জিডিপি বৃদ্ধি ৩.২% হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি৷
G-20 দেশগুলির মধ্যে সবথেকে বেশি ভারতে বৃদ্ধির হার হতে পারেও পূর্বাভাস দিয়েছেন আরবিআই প্রধান৷ বাজারে যথেষ্ট পরিমাণ নদগের পরিমাণ বাড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি৷ একই সঙ্গে ভারতীয় অর্থনীতি বাঁচাতে রেপো ও রিভার্স রেপো রেট কমিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করেছে আরবিআই৷ করোনা পরিস্থিতিতে একগুচ্ছ ঘোষণা করা হলেও ব্যাংকের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো যাতে সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকে, তার ওপর নজর রেখেই আগামী দিনে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করেছেন আরবিআই প্রধান৷