নয়াদিল্লি: চিন থেকে আমদানি সীমাবদ্ধ করার সাম্প্রতিক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে, ল্যাপটপ, ক্যামেরা, টেক্সটাইল এবং অ্যালুমিনিয়াম পণ্য সহ প্রায় ২০ টি পণ্য বিভাগের শুল্ক বাড়ানোর বিষয়ে বিবেচনা করছে সরকার।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে সূত্রের খবর, বিষয়টি এখন অর্থ মন্ত্রকের হাতে, যেখানে এর আগে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের প্রস্তাব খারিজ হয়েছিল। এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বক্তব্য অনুসারে কিছু ক্ষেত্রে বর্ধিত দামের একটি তালিকা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করে রাজস্ব বিভাগ পদক্ষেপ নেবে বলেই আশা করা হচ্ছে।
অবশ্য অন্য একজন কর্মকর্তা শুল্ক বৃদ্ধির ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন “এটি নির্দিষ্ট করে চিনা পণ্যের শুল্কের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নয়, শুল্কের সামগ্রিক বৃদ্ধি, যদিও উদ্দেশ্য, চিন থেকে প্রচুর পরিমাণে আমদানিকৃত পণ্যগুলির ওপরেই আলোকপাত করা।”
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে, সরকার শুল্ক বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করছে যেহেতু ভারতের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে এমন দেশগুলির, বিশেষত ভিয়েতনাম বা থাইল্যান্ডের মতো আসিয়ান সদস্যদের বিদেশি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে পরিবর্তিত পন্থা লক্ষ্য করা গেছে। প্রকৃতপক্ষে, রাজস্ব বিভাগের নিষ্ক্রিয়তা ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে এই মনোভাব থেকেই বাণিজ্য বিভাগ তৎপরতা শুরু করেছে এবং টায়ার, টিভি জাতীয় পণ্য আমদানির লাইসেন্সের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয়েছে, যা সরকার পক্ষের অনেকের মতে কয়েক দশক পর হতে চলেছে।
কিছু ইস্পাত জাতীয় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার বিষয়েও বিবেচনা করছে লাইসেন্সিং সংস্থা জেনারেল অফ ফরেইন ট্রেড।
চিনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবে আমদানি ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা ছাড়াও ইতিমধ্যেই ৫৯ টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। চিনভিত্তিক সংস্থাগুলি থেকে বিদেশী প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) স্থানান্তর করার সময় অতীতের নিয়মগুলির পরিবর্তিত নিয়ম অনুমোদনের জন্য বিনিয়োগের আগে সংস্থাগুলিকেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে অবহিত করতে হবে। এছাড়াও
সরকারী চুক্তিতে অংশ নিতে ইচ্ছুক চিনা সরবরাহকারী এবং ঠিকাদারদের জন্য রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সরকারী আধিকারিকদের কথায় এই পদক্ষেপগুলি লাদাখের সাম্প্রতিক সময়ে অনুপ্রবেশ ও সেনা সংঘর্ষের মত ঘটনায় ভারতের অষন্তোষের ইঙ্গিত। “যদি এর জন্য বেশি অর্থ ব্যয় করতে হলেও আমরা তাদের সাথে ব্যবসা করতে পারি না,” বলে উল্লেখ করেন এক কর্মকর্তা।
অন্যদিকে, দেশের মোবাইল উৎপাদনকারী এবং বড় ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিকেও নির্দিষ্ট খাতে দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য উৎসাহিত করছে সরকার। আগামী কয়েক সপ্তাহে আরও কয়েকটি খাত যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চিনের সঙ্গে ভারতের বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, যা ২০১৯-২০২০ সালে যা আনুমানিক ৪৭.৭ বিলিয়ন ডলার এবং বিগত পাঁচ বছরে সর্বনিম্ন। সরকারের অভিযোগ, ভারত থেকে রফতানি বাড়ানোর অনুমতি চেয়ে অনুরোধে চিনের তরফে সাড়া মেলেনি, যার ফলস্বরূপ এই বিশাল অংকের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।