কলকাতা: দিনে দিনে বেড়েই চলেছে জ্বালানি তেলের দাম৷ এই নিয়ে টানা ন’দিন পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়ল কলকাতা-সহ গোটা দেশে৷ তাই পাঁচ টাকার ওপরে দাম বৃদ্ধি ঘটেছে৷
কলকাতায় পেট্রোলের দাম ৪৬ পয়সা বেড়ে লিটারপ্রতি দাঁড়িয়েছে ৭৮ টাকা ১০ পয়সা৷ ডিজেলের দাম বেশ খানিকটা চলে গিয়েছে৷ ডিজেলের দাম এক ধাক্কায় ৭০ টাকা ৩০ পয়সায় পৌঁছে গিয়েছে৷ এখন পেট্রোলের তুলনায় ডিজেলের দামের পার্থক্য ৮ টাকার কাছাকাছি৷ গত ন’দিন যে হারে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বাড়ছে, তাতে আনলক ওয়ান পর্বে চরম সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ৷
পরিসংখ্যান বলছেস গত ৬ জুনের তুলনায় সোমবার পেট্রল ও ডিজেলের দাম বেড়েছে লিটারপিছু ৫ টাকার বেশি৷ যেভাবে দ্রুত লাগামছাড়া হচ্ছে জ্বালানির দর, তাতে চিন্তিত সাধারণ মধ্যবিত্ত জমতা৷যদিও গোটা পরিস্থিতি বিবেচনা করতে আজ, সোমবার দিল্লিতে পেট্রলিয়াম মন্ত্রক বৈঠকে বসছে৷ সেখানে আদৌ কোনও রফাসূত্র মেলে কি না, সেটাই দেখার৷
পর্যবেক্ষক মহলের আশঙ্কা, জ্বালানির দাম বাড়িয়ে করোনা আবহে আয় বাড়ানোর ফন্দি এঁটেছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার৷ কেননা, কেন্দ্র দাম বাড়ালে তার বেশ খানিকটা মুনাফা ঘরে তোলে রাজ্য সরকার৷আর সেই কারণে কি এখনও জ্বালানির দাম জিএসটির মধ্যে আনা গেল না? প্রশ্ন সাধারণ জনতার৷
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে যেভাবে তেলের দাম কমছে, তার কোনও সুবিধা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ৷ যদিও, সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল, আন্তর্জাতিক বাজার অনুযায়ী দেশে জ্বালানির দাম নির্দিষ্ট করা হবে৷ কিন্তু, কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও বাজারে দাম তো কমছেই না উল্টে বাড়ে যাচ্ছে? কিন্তু, কেন এই স্বেচ্ছাচারিতা? নানান বিষয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের সংঘাত দেখা দিলেও জ্বালানির দাম কমানো নিয়ে কেন কোনও প্রতিক্রিয়া নেই রাজ্যের? প্রশ্ন সাধারণ জনতার৷
কিন্তু, কেন বাড়ছে দাম? করোনা আহবে গত ১৪ মার্চ পেট্রল ও ডিজেলের উপর উৎপাদন শুল্ক ৩ টাকা করে বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার৷ ফের ৬ মে পেট্রলে প্রতি লিটারে ১০ টাকা ও ডিজেলে লিটারপ্রতি ১৩ টাকা শুল্ক চাপানো হয়েছে৷ আর তার জেরে এখন জ্বালানি তেলার উপর ৬৯ শতাংশ শুল্ক গুনতে হচ্ছে সাধারণ জনতাকে৷ যা বিশ্বের হিসাবে রেকর্ড৷ পরিসংখ্যান বলছে গত মার্চ থেকে টানা ৮২ দিন জ্বালানির দাম ঘোষণা বন্ধ রাখে কেন্দ্র৷ এরপর আনলক ওয়ান পর্ব থেকে নতুন করে তেলার দাম ঘোষণা শুরু হতেই ফের চড়তে শুরু করেছে দাম৷ দাম বাড়িয়ে শুধু জ্বালানি থেকে ৪৪ হাজার কোটি টাকা আয় করেছে কেন্দ্র৷ কেন্দ্র-রাজ্যের আয় বৃদ্ধির খেসারত দিচ্ছে হচ্ছে সাধারণ জনতাকে৷