নয়াদিল্লি: ফের সাধারণ মধ্যবিত্ত জনতাকে অস্বস্তিতে ফেলে পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়াল কেন্দ্র৷ এই নিয়ে টানা ১০দিন পেট্রোল-ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পেল৷ জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির জেরে চরম মূল্য বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বাজারে৷ দেশের বাজারে টানা ১০দিন তেলের দাম বৃদ্ধি পেলেও বিশ্ববাজারে তলানিতে এসে ঠেকেছে অপরিশোধিত তেলের দাম৷ বিশ্ববাজারে তেলের দাম তলানিতে এসে ঠেকল ভারতের বাজার ব্যাতিক্রম৷ সাধারণ জনতাকে অস্বস্তিতে ফেলে কেন বাড়ানো হচ্ছে দাম? অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদিকে চিঠি পাঠিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী৷
আজ ফের একবার লাফিয়ে বেড়েছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম৷ তেল সংস্থার দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১০ দিনে লিটারপ্রতি পেট্রোলের দাম বেড়েছে ৫ টাকা ৫০ পয়সা৷ প্রতি লিটারে ডিজেলের দাম বেড়েছে ৫ টাকার বেশি৷ কিন্তু বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৩৭.৯৫ ডলার৷ অর্থাৎ টাকার হিসাবে মাত্র ২ হাজার ৯০০ টাকার কাছাকাছি৷
বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমলেও গতকালের তুলনায় ভারতের বাজারে পেট্রোলের দাম বেড়েছে লিটার প্রতি ৪৫ পয়সা৷ এই মুহূর্তে বাংলার বাজারে পেট্রোলের দাম লিটার প্রতি দাঁড়িয়েছে ৭৮ টাকা ৫৫ পয়সা৷ গতকালের তুলনায় ডিজেলের দাম বেড়েছে প্রতি লিটারে ৫১ পয়সা৷ অর্থাৎ বর্ধিত দাম অনুযায়ী ডিজেলের প্রতি লিটারে দাম দাঁড়িয়েছে ৭০ টাকা ৮০ পয়সা৷ পেট্রোলের তুলনায় ডিজেলের দাম ৮ টাকার পার্থক্য দাঁড়িয়েছে৷ বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর বিশ্ব বাজারে অপরিচিত তেলের দাম সর্বাধিক বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ব্যারেল প্রতি ৮৬.৩ ডলার৷ বাংলায় সেই সময় পেট্রোলের দাম ছিল ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা৷ কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যারেল পিছু অপরিশোধিত তেলের দাম ৩৮ ডলার হলেও ২০১৮ সালের বর্ধিত তেলের দামের দিকে ঝুঁকছে ভারতীয় বাজার৷
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সাধারণ জনগণ যখন জেরবার, ঠিক তখন দফায় দফায় তেলের দাম বৃদ্ধির বিরোধিতা করেছেন সোনিয়া গান্ধী৷ পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে চিঠি পাঠিয়েছেন সোনিয়া৷ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অভূতপূর্ব সংকটের মধ্যে রয়েছেন সাধারণ মানুষ৷ সরকার অসংবেদনশীল ভাবে তেলের দাম বাড়িয়ে চলেছে৷ সরকারের কাজ মানুষের মানুষকে সমস্যায় ফেলা নয়, সরকারের উচিত মানুষের দুর্দশা লাঘব করা৷ অবিলম্বে তেলের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার করতে হবে, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে এমনই দাবি জানিয়েছেন সোনিয়া৷
পেট্রোল-ডিজেলের দাম নিয়ে রাজনৈতিক তর্ক বিতর্ক চললেও সাধারন জনতাকে দিনে দিনে খেসারত গুনতেই হচ্ছে৷ কিন্তু জানেন কী, সরকারের মুনাফা বৃদ্ধির জন্য আপনার পকেট থেকে ঠিক কত টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে বর্ধিত জ্বালানির নামে?করোনা আহবে গত ১৪ মার্চ পেট্রল ও ডিজেলের উপর উৎপাদন শুল্ক ৩ টাকা করে বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার৷ ফের ৬ মে পেট্রলে প্রতি লিটারে ১০ টাকা ও ডিজেলে লিটারপ্রতি ১৩ টাকা শুল্ক চাপানো হয়েছে৷ আর তার জেরে এখন জ্বালানি তেলার উপর ৬৯ শতাংশ শুল্ক গুনতে হচ্ছে সাধারণ জনতাকে৷ যা বিশ্বের হিসাবে রেকর্ড৷ পরিসংখ্যান বলছে গত মার্চ থেকে টানা ৮২ দিন জ্বালানির দাম ঘোষণা বন্ধ রাখে কেন্দ্র৷ এরপর আনলক ওয়ান পর্ব থেকে নতুন করে তেলার দাম ঘোষণা শুরু হতেই ফের চড়তে শুরু করেছে দাম৷ দাম বাড়িয়ে শুধু জ্বালানি থেকে ৪৪ হাজার কোটি টাকা আয় করেছে কেন্দ্র৷ কেন্দ্র-রাজ্যের আয় বৃদ্ধির খেসারত দিচ্ছে হচ্ছে সাধারণ জনতাকে৷