লাগবে না কার্ড কিংবা পিন নম্বর, বাংলায় আসছে ‘জনতা এটিএম’

কলকাতা: সৌরশক্তিতে চলবে এটিএম। মনে রাখতে হবে না কোন পিন নম্বর। এটিএম কার্ড নিয়ে ঘোরার দরকার নেই। বোতাম টিপে অর্থের পরিমাণ লিখতে হবে না। এটিএম’র স্ক্রিনে ওঠা ছবিতে আঙুল ঠেকালেই বেরিয়ে আসবে টাকা। গ্রাম-শহরের প্রযুক্তি বিভেদ মুছে দেবে দেশের সৌরশক্তির জনক অধ্যাপক শান্তিপদ গণচৌধুরি’র নতুন মস্তিষ্ক জাতক— জনতা এটিএম। প্রত্যন্ত গ্রামীণ মহিলাদের দিকে তাকিয়ে এই

imagesmissing

লাগবে না কার্ড কিংবা পিন নম্বর, বাংলায় আসছে ‘জনতা এটিএম’

কলকাতা: সৌরশক্তিতে চলবে এটিএম। মনে রাখতে হবে না কোন পিন নম্বর। এটিএম কার্ড নিয়ে ঘোরার দরকার নেই। বোতাম টিপে অর্থের পরিমাণ লিখতে হবে না। এটিএম’র স্ক্রিনে ওঠা ছবিতে আঙুল ঠেকালেই বেরিয়ে আসবে টাকা। গ্রাম-শহরের প্রযুক্তি বিভেদ মুছে দেবে দেশের সৌরশক্তির জনক অধ্যাপক শান্তিপদ গণচৌধুরি’র নতুন মস্তিষ্ক জাতক— জনতা এটিএম। প্রত্যন্ত গ্রামীণ মহিলাদের দিকে তাকিয়ে এই সহজ এটিএম নিয়ে এল তাঁর গবেষণা সংস্থা এনবি ইনস্টিটিউট ফর রুরাল টেকনোলজি।

এই এটিএম চালাতে যেমন ধারাবাহিক বিদ্যুতের খরচ নেই। তেমনি চলতি এটিএম ব্যবহার করার মতো নেই বায়নাক্কা। লাগবে না এটিএম কার্ড। মোবাইলের পিছনে থাকা একটি স্টিকারই সব কাজ সেরে দেবে। ব্যাঙ্কিং পরিষেবা গ্রাম-শহরের বিভেদ মুছে ফেলতে সৌরবিজ্ঞানী অধ্যাপক শান্তিপদ গণচৌধুরি’র এই খোঁজ। তিনি জানান, এখনও দেশের ৪৪শতাংশ গ্রামীণ মহিলা এটিএম ব্যবহার করেন না। পড়াশোনা তেমন না জানার জন্যই তাঁরা এটিএম-এ যেতে ভয় পান। গ্রামীণ জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্য দিতে ২০১৭সাল থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক অনুদানে এনবি ইনস্টিটিউট ফর রুরাল টেকনোলজি’তে শুরু হয়েছিল ওই এটিএম তৈরির কাজ। তা আজ সম্পূর্ণ। এনবি ইনস্টিটিউট ফর রুরাল টেকনোলজি’র অফিসে তা ভালোই চালু রয়েছে। জনতা এটিএম’কে সর্বজনীন করতে এখন জোরকদমে চলছে ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথাবার্তা। রিজার্ভ ব্যাঙ্কও বিষয়টি নিয়ে বেশ উৎসাহী। স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া এবং বন্ধন ব্যাঙ্ক ‘জনতা এটিএম’ গ্রামে নিয়ে যেতে উৎসাহী। এখন চলছে চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরির কাজ।

অধ্যাপক গণচৌধুরি’র দেখানো পথে এনবি ইনস্টিটিউট ফর রুরাল টেকনোলজি’র দুই গবেষক ঋচিক ঘোষঠাকুর আর জিনিয়া হকের হাতে এক বছরে অবয়ব পেল সৌর এটিএম। ‘জনতা এটিএম’ তৈরিতে অন্যতম কুশীলব বিজ্ঞানী ঋচিক ঘোষঠাকুর জানাচ্ছেন, গ্রামে লাগাতার সমীক্ষা চালিয়ে প্রথমে সেখানে এটিএম তৈরির সমস্যাগুলো খুঁজে বার করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে সব গ্রামের যেমন বিদ্যুতের জোগান থাকে না, তেমনি গ্রামের মানুষরা প্রচলিত এটিএম মেশিনের জটিল নিয়মকে রপ্ত করতে সমস্যায় পড়েন। গ্রামের অনেক মানুষই আছেন পড়াশোনা ঠিকমতো করেননি। তাই মূলত ইংরেজিতে নির্দেশ দেওয়া এটিএম-এ সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করলেও তা তেমন কাজে আসত না। অনেক গ্রামীণ মানুষ মানিব্যাগ ব্যবহার করেন না। তাই টাকা তুলতে তাঁদের সবসময় এটিএম কার্ড নিয়ে ঘোরাটাও বেশ কঠিন। এই সমস্যা কাটাতে জনতা এটিএমে টাকা আঙুলের ছাপ দিয়ে টাকা তোলার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে আরো একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছিল। তাই ‘জনতা এটিএম’-এ গ্রাহকের ব্যাঙ্ক সম্পর্কিত তথ্যাদি ধরে রাখার জন্য দুই রকমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে ‘এনএফসি টোকেন’ বা ‘এনএফসি স্টিকার’। যার যেমন প্রয়োজন। যদি গ্রামবাসী ফোন ব্যবহার করেন তাহলে মোবাইলের পিছনে ‘এনএফসি স্টিকার’ লাগালেই চলবে। আর মোবাইল না থাকলেও ক্ষতি নেই। তার জন্য দেওয়া হবে পরিবেশ বান্ধব প্লাস্টিকে তৈরি ‘এনএফসি টোকেন’। এবার টাকা নেওয়ার পালা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *