কলকাতা: নতুন বছরের শুরুতে কৃষক পরিবারের জন্য সুখবর। নতুন দু’টি প্রকল্পের ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কৃষক পরিবারের ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে যে কোনও সদস্যের স্বাভাবিক অথবা অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে রাজ্য সরকার দু’লক্ষ টাকা করে দেবে৷ এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কিষাণ বন্ধু’ প্রকল্প৷ এছাড়া কৃষকদের সহযোগিতার জন্য বছরে একর প্রতি দু’ধাপে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি আরও জানান, ১ জানুয়ারি থেকেই প্রকল্পটি শুরু হলেও ১ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রকল্পের জন্য আবেদন জমা নেওয়া হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কৃষকদের জন্য আমরা অনেক কাজ করেছি, শস্য নষ্ট হলে রাজ্য সরকার ক্ষতিপূরণ দেয় – ৩০ লক্ষ পরিবারকে ১২০০ কোটি টাকা সাহায্য দিয়েছি, কৃষকদের শস্য বীমার প্রিমিয়ামও সরকার দিচ্ছে৷ দিল্লির সরকার আমাদের টাকা তুলে নিয়ে মাত্র ২০ টাকা দেয়, বাকি ৮০ টাকা রাজ্য দেয়৷’’
কৃষক বন্ধু: কৃষকদের জীবনের গ্যারান্টি তাদের জমি, তাদের ভবিষ্যৎ জীবনকে সুরক্ষিত করার জন্য বাংলার সরকার অ্যাসিওরেন্স মডেল তৈরী করছে। ১৮ বছর থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত যদি কোনও কোনও কৃষক বা খেত মজুর মারা যান, সে স্বাভাবিক মৃত্যু হোক বা দুর্ঘটনায় মৃত্যু হোক, তাঁর পরিবার যাতে অসহায় না হয়ে যায়, সেজন্য আমাদের সরকার সেই কৃষক পরিবারকে দু লক্ষ টাকা করে দেবে। রাজ্যে প্রায় ৭২ লক্ষ কৃষক ও খেত মজুর পরিবার আছে। এই প্রকল্পের নাম কৃষক বন্ধু।
এই প্রকল্প মঙ্গলবার থেকে চালু হয়ে যাবে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই প্রকল্পের জন্য আবেদন জানানো যাবে। রাজ্য সরকার কৃষক দপ্তর থেকে এই টাকা দেবে। এর জন্য রাজ্য সরকারের অনেক টাকা খরচ হবে। কিন্তু, তাতেও কৃষকদের জীবনের একটা গ্যারান্টি দেওয়া হবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা আরেকটি প্রকল্প আমরা করছি, সেটারও নাম কৃষক বন্ধু। এই প্রকল্পে প্রতি বছর রাজ্য সরকার যে কোনও একটা চাষের জন্য দু ক্ষেপে একর পিছু পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এ রাজ্যে ছোট জমির পরিমাণ বেশী। জমি ছোট হলে, একরের অনুপাতে টাকা পাবে। এই প্রকল্পের টাকা জানুয়ারি থেকেই হিসেব শুরু হবে, ফেব্রুয়ারি থেকে আবেদন করতে পারবে। এই প্রকল্পেও সরকারের কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। অন্যান্য জায়গায় খরচ কমিয়ে এই খরচগুলো আমাদের চালাতে হবে। এর আগে রাজ্য সরকার কৃষকদের খাজনা মুকুব করেছে। মিউটেশন ফি মুকুব করেছে। জমির মিউটেশন অনলাইন করা হয়েছে। বাণিজ্যের সহজিকরণে দেশের সেরা বাংলা। এখন কাউকে অ্যাফিডেবিটও করতে হয় না। নিজেকে নিজে সার্টিফাই করা যায়। নতুন বছরে কৃষকদের জন্য রাজ্য সরকারের এটাই উপহার।’’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আগামীকাল নতুন বছর শুরু হবে। প্রতি বছরই আমরা নতুন কিছু প্রকল্প চালু করি। আমাদের সরকার আরো অনেক কাজ করতে চায়। কিন্তু আমাদের ক্ষমতা খুবই সীমাবদ্ধ, যেহেতু প্রতি বছর আমাদের ৪৮,০০০-৫০,০০০ কোটি টাকা দেনা শোধ করতে হয়, রাজস্ব আদায়ের পুরো টাকাটাই চলে যায়। আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পর গরীবদের জন্য কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, শিক্ষাশ্রী, সবুজ সাথী, সবুজশ্রী, সমব্যাথি, বৈতরণী সহ অনেক প্রকল্প চালু করেছে। নতুন বছরে, নতুন স্বপ্নের দিকে তাকিয়ে আমরা আরও ২টি নতুন প্রকল্প ঘোষণা করব যাতে আমরা কিছুটা সাহায্য কাউকে করতে পারি।”