অগ্নিমূল্য LPG! জানেন সিলিন্ডার পিছু কত টাকা আয় রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের? কতই বা পান ডিলাররা?

অগ্নিমূল্য LPG! জানেন সিলিন্ডার পিছু কত টাকা আয় রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের? কতই বা পান ডিলাররা?

কলকাতা:  মূল্যবৃদ্ধি থেকে বঞ্চনা, বারবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ সম্প্রতি সিঙ্গুরে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘নন্দলাল’ বলে কটাক্ষও করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, ‘বাহবা নন্দলাল, ১১৪৯ টাকায় ফুটছে বিনা পয়সার চাল’৷ যে ভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে রান্নার গ্যাসের দাম, তাতে নিশ্চিতভাবেই সমস্যায় পড়েছে মধ্যবিত্ত সমাজ৷ কিন্তু জানেন কি একটি ১৪.২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডার থেকে কত টাকা লাভ করে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার? কত টাকাই বা যায় ডিলারদের পকেটে?   

আরও পড়ুন- এবার UPI লেনদেনের উপর দিতে হবে চার্জ! গুগল পে, ফোন পে ইউজারদের জন্য বড় ধাক্কা

বেশ কিছুদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছিল৷ যেখানে দাবি করা হয়েছিল, কেন্দ্রীয় সরকার রান্নার গ্যাস বা লিকুইফায়েড পেট্রলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) উপর ৫% কর আরোপ করে৷ অন্যদিক, রাজ্যগুলি রান্নার গ্যাসের উপর ৫৫% কর বসায়। এটাই কি সত্য? উত্তর মেলে অর্থ মন্ত্রকের রাজস্ব বিভাগের ওয়েবসাইটে৷ সেখানে কিন্তু অন্য কথাই বলা হচ্ছে৷ 

পেট্রোল এবং ডিজেলের ক্ষেত্রে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলি নিজেদের মতো করে পরোক্ষ কর আদায় করে থাকে। কিন্তু এলপিজির ক্ষেত্রে বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। এলপিজি গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স অর্থাৎ পণ্য ও পরিষেবা কর বা জিএসটি-র আওতার মধ্যে পড়ে৷ সমগ্র দেশে এলপিজি সিলিন্ডারের উপর মোট ৫% জিএসটি ধার্য করা হয়েছে। এর মধ্য ২.৫% কেন্দ্রীয় সরকার এবং ২.৫% রাজ্য সরকার জিএসটি  নেয়৷ এক্ষেত্রে  কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার এলপিজি সিলিন্ডারের উপর পৃথক ভাবে কর আরোপ করে না। তবে জিএসটি বাড়লে কিন্তু এলপিজি-র দামও বেড়ে যাবে৷ 

কী ভাবে এলপিজি গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয়? 

ভারতের পেট্রলিয়াম ও ন্যাচারাল গ্যাস মন্ত্রকের অধীনস্থ একটি সংস্থা হল পেট্রলিয়াম প্ল্যানিং অ্যান্ড অ্যানালিসিস (পিপিএসি)। এটি ভারতীয় বাজারের তেল, পেট্রলিয়াম, গ্যাসের দামের উপর তথ্য প্রকাশ করে থাকে। এলপিজি সিলিন্ডারের দাম কী ভাবে নির্ধারিত হয়, পিপিএসি সেই তথ্যও তুলে ধরেছে৷ সেখানে দেখা গিয়েছে, একাধিক বিষয়ের উপর ভিত্তি করে এলপিজি সিলিন্ডারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়৷ তার মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশ থাকে ‘ ফ্রি অন বোর্ড’, যা আন্তর্জাতিক দামের সঙ্গে সম্পর্কিত৷ এছাড়া আমদানি শুল্ক, পরিবহণ, কমিশন, জিএসটি, এবং সিলিন্ডারে গ্যাস ভরার খরচ ইত্যাদিও এলপিজি-র দামের উপর প্রভাব ফেলে।  এলপিজি  সিলিন্ডারের উপর মাত্র ৫% জিএসটি ধার্য করা হয়। যার ২.৫% কেন্দ্রীয় সরকারের অ্যাকাউন্টে এবং ২.৫% যায় রাজ্য সরকারের ঘরে৷

বর্তমানে কলকাতায় ১৪.২ কেজি এলপিসি সিলিন্ডারের দাম ১১২৯ টাকা৷ মোট জিএসটির পরিমাণ ২০৩.২২ টাকা৷ সেই হিসাবে সিলিন্ডার পিছু কেন্দ্র ও রাজ্য প্রায় ১০১ টাকা করে আয় করে৷ বছরে পরিবার পিছু ১২ টি ভর্তুকিযুক্ত এলপিজি বরাদ্দ রয়েছে৷ এর পর সিলিন্ডার নিলে বাজার দরেই কিনতে হয়৷

ভাইরাল হওয়া ওই পোস্টে আরও দাবি করা হয়েছিল যে, সিলিন্ডার পিছু ডিলারদের কমিশন মাত্র সাড়ে পাঁচ টাকা৷ এই তথ্যও সম্পূর্ণরূপে ভুল। যেহেতু ডিলারদের কমিশন একটি অভ্যন্তরীণ সমস্যা, তাই তেল কোম্পানিগুলি সাধারণত এই বিষয়টি প্রকাশ্যে শেয়ার করতে চায় না৷ তবে ২০১৯ সালে পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের সরকারি আদেশ অনুসারে, গার্হস্থ্য এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটরদের জন্য ডিলার কমিশন ৬১.৮৪ টাকা৷ এর মধ্যেই ধরা রয়েছে ডেলিভারি চার্জ৷

ঘোষণা

এই প্রতিবেদন আজ বিকেল ডট কমের নিজস্ব। প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে এই প্রতিবেদন আজ বিকেল ডট কমের পাতায় নাও দেখা যেতে পারে৷ ফলে, সব খবরের জন্য অবশ্যই নজর রাখুন https://aajbikel.com/ -এই লিঙ্কে৷

আমাদের ফেসবুক পেজ – https://www.facebook.com/Aajbikal

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল- https://www.youtube.com/@AajBikelNews -এ নজর রাখতে পারেন