নয়াদিল্লি: ইপিএফও ইতিমধ্যেই ৮.৫ শতাংশ সুদের কথা ঘোষণা করেছে। তাকে ঘিরে অনেকের মনেই হয়তো অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে বিশেষজ্ঞরা এমন বিষয় তুলে ধরেছেন, যা জানলে চমকে উঠবেন। তাঁদের কথায়, করোনা মহামারীর জেরে আরও কমতে পারে প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুদের হার। ৮.৫ শতাংশ থেকে কমে তা হতে ৭ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা কেন মনে করছেন এমনটা?
২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে প্রভিডেন্ট ফান্ডের ক্ষেত্রে নির্ধারিত সুদ ছিল ৮.৬৫ শতাংশ। যদিও সংবাদসূত্রের দাবি, ২০১৮-২০১৯ অর্থবর্ষে ইপিএফ তহবিলে উদ্বৃত্ত অর্থের পরিমাণ আনুমানিক ১৫০ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ইপিএফও-র তরফে এই সুদের হার কমিয়ে ৮.৫ শতাংশ করা হয়েছে বলেই জানা গেছে। যদিও অর্থমন্ত্রক এই প্রস্তাবের এখনও পর্যন্ত সম্মতি দেয়নি। কিন্তু কেন ৮.৬৫ শতাংশ থেকে ৮.৫% করা হল সুদের হার? এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থনীতির বৃদ্ধি গত ছ'বছরে রেকর্ডহারে কমেছে।
এছাড়াও কয়েকটি দফায় আরবিআই (রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া) সুদের হার কমিয়েছে। অর্থনীতির ক্ষেত্রে গত সঙ্কটজনক পরিস্থিতি মোকাবিলায় এই কারণেই ৮.৫% সুদ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত ইপিএফও-র। এই পরিস্থিতি গোটা বিশ্ব জুড়ে কোভিড ১৯-এর জেরে বর্তমানে আরও ভয়াবহ আকার নিয়েছে। করোনা মহামারীর প্রকোপে স্টক মার্কেটের বেহাল দশা। মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রেও বড়সড় সঙ্কট তৈরি হয়েছে। যার প্রভাব পড়বে প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুদের ওপর, এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অনেকেই হয়তো ভাবছেন, পিএফ-এর সঙ্গে স্টক মার্কেট বা মিউচুয়াল ফান্ডের কোনও সম্পর্কই নেই। এই প্রসঙ্গে গবেষকরা জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে কেন্দ্র ইক্যুইটি ফান্ডে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রথমবার। সেবার ৫ শতাংশ বিনিয়োগও করেছিল তারা। সেই অর্থবছরে ইক্যুইটি ফান্ডে বিনিয়োগ থেকে লাভবান হওয়ার ফলে ২০১৬ সালে বিনিয়োগ ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০% করা হয়েছিল সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ-এর সম্মতিতে।
সেই সময় শ্রমমন্ত্রকের তরফে জানানোও হয়েছিল যে, প্রথম বছর ৬৫৭৭ কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় বছরে ১৪,৯৮২ কোটি টাকা ইপিএফ থেকে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা হয়েছিল। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত মোট ২২,৮৫৮ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ড ট্র্যাকার ভ্যালু রিসার্চের সিইও ধীরেন্দ্র কুমার বলেন, ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করা অনেকটা জুয়ার মতো। আজকের চেয়ে আগামীকাল ভাল হবে এই আশায়। অতীতের পরিসংখ্যান বলছে, যদি মূল বিনিয়োগ থেকে প্রত্যাশিত আয় কিছুটা কম হয়, তাহলে ইপিএফও সব দিক ভেবেচিন্তে যথোপযুক্ত সুদের হার বজায় রাখতে পারে। কিন্তু ক্ষতির পরিমাণ বেশি হলে তা প্রভাব ফেলবে পিএফ-এর সুদের হারে। এদিকে করোনার জেরে ক্ষতির আশঙ্কাই করছেন বিশেষজ্ঞরা।