নয়াদিল্লি: আশা দেখেছিল দেশের শেয়ার বাজার। কয়েকদিন ধরে সেনসেক্স এর কাঁটা উঠতে শুরু করেছিল। কিন্তু আবারও সেই সূচক নেমে গিয়েছে নীচের দিকে। কয়েকদিন আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে প্রতি দেশেই করোনার প্রভাব দেখা যাবে আগামী কয়েকটি অর্থ বর্ষেও। তাই দেশের অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়াতে এখনও কিছুটা সময় লাগবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
করোনাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সেনসেক্স বেড়েছিল অনেকটাই ফলে সুদ কমার ইঙ্গিত পেয়েছিল শেয়ার বাজার। কিন্তু সেই অঙ্ক হঠাৎ করেই নেমে গিয়েছে ৩৭,৬০৭-এ। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুন মাসে দেশের আটটি মুল কাঠামোয় ১৫ শতাংশ উৎপাদন কমেছিল। দেশ জুড়ে যেভাবে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে তাতে লগ্নিকারীরা তাকিয়ে আছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণ রীতির দিকে। তাঁরা আশায় আছেন সুদ কমার। কিন্তু এ সপ্তাহে বাজার অস্থির থাকার সম্ভাবনা প্রবল। শেয়ার কেনার ঝোঁক বাড়লেও, সূচক উঠলেই চাহিদার পরিমাণও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই অনেকেই ভাবছেন মূল্যবৃদ্ধি যে ভাবে বাড়ছে তাতে সুদ এখনই নাও কমতে পারে।
দেশে এখন আনলক ৩ পর্ব কার্যকরী হয়েছে। লকডাউনের পর অনেকটাই শুরু হয়েছে কাজকর্ম। কিন্তু দেশের মূল আটটি পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে এ বছরের উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় কমেছে। সব চেয়ে খারাপ পরিস্থিতি দেখা গেছে ইস্পাত শিল্পের ক্ষেত্রে। সরকারি কোষাগারের ঘাটতি ছুঁয়েছে ৬.৬২ লক্ষ কোটি টাকা। সেখানে সারা বছরের ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছিল ৭.৯৬ লক্ষ কোটি টাকা, সুতরাং আগস্টের মধ্যেই মোট ঘাটতির ৮৩.২ শতাংশ ঘাটতি হয়ে গেছে। এরপর আরও বাড়তে পারে এই সংখ্যা।
গত সপ্তাহে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসের আর্থিক ফলে দেখা গেছে, স্টেট ব্যাঙ্কের নিট লাভ ৮১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪১৮৯ কোটি টাকা। পাশাপাশি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের লাভ বেড়েছে ৩১ শতাংশ, অর্থাৎ ১৩,২৩৩ কোটি টাকা। কিন্তু অন্যদিকে এইচডিএফসি কগনিজ্যান্ট-এর আয় কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৪.৭ শতাংশ ও ২৯ শতাংশে। এক্ষেত্রে আইওসি-র কমেছে ৪৭ শতাংশ। টাটা মোটর্স-এর লোকসান হয়েছে ৮৪৩৮ কোটি টাকা, সেখানে মারুতি সুজুকি অনেক বছর পর ২৬৮ কোটি টাকা লোকসান করেছে। মোবাইল পরিষেবা কোম্পানি এয়ারটেলের ক্ষতির পরিমাণ ১৫,৯৩৩ কোটি টাকা। বিমান সংস্থা ইন্ডিগো এবং স্পাইসজেটের লোকসান হয়েছে যথাক্রমে ২৮৪৪ এবং ৮০৭ কোটি টাকা। কোটাক মাহিন্দ্রা ১১৬ কোটি টাকা লোকসান করেছে। ফলে সামগ্রিক চিত্রটা লোকসানকেই চিহ্নিত করছে। যেখানে মোদী সরকার বলেছেন, অর্থনীতির পারদ চড়ছে সেখানে বাস্তব চিত্রটা আদতে আলাদাই।