বাজেট ২০২০: ১ লক্ষ গ্রামে ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে, ঘোষণা নির্মলার

বাজেট ২০২০: ১ লক্ষ গ্রামে ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে, ঘোষণা নির্মলার

3 stocks recomended

নয়াদিল্লি: সংসদে পেশ হল ২০২০-২১ অর্থবর্ষের সাধারণ বাজেট৷ মোদি সরকারে দ্বিতীয় দফার সরকারের প্রথম পুর্নাঙ্গ বাজেট পেশ করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন৷ প্রতি বছরের মতো এ বছরেও আসন্ন বাজেট নিয়ে আমজনতার মধ্যে তৈরি হয়েছে বিপুল প্রত্যাশা৷ সেই প্রত্যাশা মেটাতে পারলেন নির্মলা? 

একরাশ প্রত্যাশা নিয়ে বাজেট ঝুলি হাতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে অর্থবাজেট পেশ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের৷ গতবারের মতো এবারও অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেট নথি লালসালুতে মোড়া খাতা খোলেন৷ লালসালুতে মোড়া বাজেট ঝুলি খুলে সংসদের একের পর এক বার্তা অর্থমন্ত্রীর নির্মলার৷

শিক্ষায় অনলাই প্রযুক্তি ব্যবহারে গুরুত্ব দেন অর্থমন্ত্রী৷ উচ্চ শিক্ষার জন্য এসবিআই যাতে বেশি করে শিক্ষা ঋণ দেয়, তা নিশ্চিত করার বিষয়েও নির্দেশ দেন অর্থমন্ত্রী৷ শিক্ষায়  প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়েও ভারতের বাজার খুলে দেওয়ার বাজেটে প্রস্তাব দিয়েছেন নির্মলা৷  চালু হবে নয়া শিক্ষানীতি৷ অনলাইনে মিলবে উচ্চ শিক্ষার ডিগ্রি৷  বৃত্তিমূলক শিক্ষায় গুরুত্ব দেওয়ার প্রস্তাবও দেন তিনি৷ একই সঙ্গে গোটা দেশজুড়ে নতুন শিক্ষানীতি আনার বিষয়েও আশার বাণী শুনিয়েছেন অর্থমন্ত্রী৷ শিক্ষাক্ষেত্রে  ৯৯ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে৷ স্টাডি ইন ইন্ডিয়া নয়া প্রকল্প চালুর ঘোষণা কেন্দ্রের৷ ১৫০টি ডিপ্লমা শিক্ষা কেন্দ্র খোলার বার্তা অর্থমন্ত্রীর৷ উচ্চ শিক্ষায় অনলাইনে ডিগ্রি দেওয়ার প্রস্তাব৷  

দেশের পরিকাঠামো প্রসঙ্গেও বেশ কিছু বাজেট প্রস্তাব করেন নির্মলা৷ জানান, পিপি মডেলে ৫০টি নগরী গড়ে তোলা হবে৷ উৎপাদন শিল্পে বাড়ানো হবে বাজেট বরাদ্দ৷ ২৭ হাজার ৩০ কোটি টাকা শিল্প-বাণিজ্য খাতে বরাদ্দ করার প্রস্তাব৷ পরিকাঠামো উন্নয়নে বাজেট বৃদ্ধির ঘোষণা৷  জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টান করার সুযোগ দেবে কেন্দ্র৷ স্থানীয় প্রশাসনে ইন্টানশিপ চালু করার ঘোষণা কেন্দ্রের৷ এক বছরের চুক্তি ইন্টান নিয়োগের প্রস্তাবও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী৷ এক লক্ষ গ্রামে ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন নির্মলা৷ ৫৫০টি স্টেশনে ফ্রি ইন্টারনেট দেওয়া হবে৷ জানান, পরিকাঠামো উন্নয়নে ১০০ কোটি বরাদ্দের ঘোষণা৷ ২৫০০ কিমি সড়ক তৈরির পরিকল্পনা কেন্দ্রের৷ দেশি ফোন উৎপাদনে গুরুত্ব দেওয়ার বার্তা৷ ২০২৪ সালের মধ্যে নতুন ১০০টি বিমান বন্দর নির্মাণের ঘোষণা কেন্দ্রের৷ ৯ হাজার কিমি ইকোনমিক জোন গড়ার প্রস্তাব কেন্দ্রের৷ 

এদিন বাজেট শুরু আগে আয়-ব্যায়ের হিসাব দেন নির্মলা৷ বলেন, দেশের আয় বেড়েছে৷ ৪০ কোটি কর দাতার মধ্যে ৬০ লক্ষ করদাতা নতুন তালিকায় যুক্ত হয়েছেন৷ দু’বছরে নতুন করদাতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০ লাখে৷ ৮০-র দশকে বৃদ্ধির তুলায়ান বর্তমানে বৃদ্ধির হার বেড়েছে ৭ শতাংশের বেশি৷ গরিবারে হাতে টাকা বেশি মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে কেন্দ্র৷ ভর্তুকিতে দুর্নীতি কমেছে৷  এই মুহূর্তে ভারত এখন বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ৷ এদিন কাশ্মীরি কবি দীননাথ কয়ালের লেখা কবিতা পাঠ করেন অর্থমন্ত্রী৷ ‘আমাদের দেশ সেরা৷  ডাল লেকে ফুটেছে পদ্ম..’ অর্থমন্ত্রীর কবিতা শুনে টেবিল চাপড়ে সমর্থন বিজেপি সাংসদদের৷

এরপর কৃষি ক্ষেত্রে কেন্দ্রের পরিকল্পনার কথাও জানান নির্মলা৷ বলেন, কৃষদের উন্নয়নে একাধিক যোজনা এনেছে৷ আনা হয়েছে ১৬টি পরিকল্পনা আনা হয়েছে৷ কৃষকদের আয় দ্বিগুণ বেড়েছে৷ ১৫ লক্ষ কৃষককে সৌরশক্তির প্রযুক্তি দেওয়া হচ্ছে৷ কৃষকদের জৈব সার ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী৷ তবে, কৃষিকাজে ব্যবহৃত সারের দাম আদৌ কি কমছে? কোনও মন্তব্য করেনি নির্মালা৷ জানিয়েছেন, সরকার চাইছে কৃষকরা যাতে বেশি মাত্রায় জৈব সার ব্যবহার করেন৷ এদিন কৃষি, সেচ ব্যবস্থা নিয়েও সওয়াল করেন মন্ত্রী৷ ৬.১১ কেটি কৃষককে বিমানর আওতায় আনা হয়েছে বলেও দাবি নির্মলার৷ ১০০ খরাপ্রবণ জেলাকে চিহ্নিত করে অর্থ সহযোগিতা করার ঘোষণা বাজেটে৷ ২০ লক্ষ কৃষককে সৌরশক্তির চালিত পাম্প মেশিন দেওয়ার পরিকল্পনা দেওয়া হয়েছে৷ কৃষকরা যাতে ফসলের মূল্য যথাযথ ভাবে পান, তার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ দুধ, খামার, মৎস্য চাষের গুরুত্ব দেবে৷ জানান, কেন্দ্র যুবকদের দিয়ে মৎস্য চাষে উৎসাহ দেবে৷ তাতে কমবে বেকারত্ব৷  এর জন্য বিশেষ যোজনা ‘সাগরমিত্র’ আনা হচ্ছে৷ তাতে যেমন বেকারত্ব কমবে, তেমনই বাড়বে মাছের উৎপাদন৷ দেওয়া হবে ঋণ৷ 

বলেন, অর্থনীতি বৃদ্ধিতে নজর দেওয়া হয়েছে৷ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে মোদি সরকার৷ বিরাট জনাদেশ নিয়ে কেন্দ্র ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিজেপি সরকার শিল্প-বাণিজ্য নীতিতে জোর দিচ্ছে৷ সরকার রাজস্ব ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রা মধ্যে রাখার চেষ্টাকরচ্ছে৷ অর্থনীতির চাঙ্গা জন্য মোদি সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে৷ দেশের মানুষের জন্য আমরা সেবার উপর জোর দিচ্ছি৷ কেন্দ্র সঠিক পথে এগোচ্ছে৷ নারী নিরাপত্তায় গুরুত্ব বেড়েছে৷ জিএসটির ফলে আয় বেড়েছে৷ জিএসটির ফলে কমেছে করের বোঝা৷ শুধু রাজনীতির জন্য দেশের অর্থনীতির চাকা থমকে গিয়েছে৷ দারিদ্রসীমার থেকে উঠে এসেছেন ২৭ কোটি মানুষ৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × two =