নয়াদিল্লি: ভারতীয় ঐতিহ্যের রীতি মেনেই যেকোনো শুভ কাজের সূচনা হয় মিষ্টি মুখ-এর মধ্যে দিয়ে। কেন্দ্রের সাধারণ বাজেটও তার ব্যতিক্রম নয়। ৭০ বছরের ঐতিহ্যবাহী সেই রীতি মেনেই সোমবার নর্থ ব্লকে ২০২০-২১-এর বাজেটের নথি মুদ্রণ বা ছাপানোর আনুষ্ঠানিক সূচনা হল 'হালওয়া' অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে। এবছর মোদি সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের দ্বিতীয় সাধারণ বাজেট পেশ হবে ১ ফেব্রুয়ারি।
প্রতি বছর বাজেট পেশের ঠিক ১০ দিন আগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অর্থমন্ত্রী সহ অর্থমন্ত্রকের সমস্ত কর্মীদের উপস্থিত থাকতে হয় এই অনুষ্ঠানে। একটি বিশালাকার কড়াইয়ে হালওয়া তৈরি করে প্রত্যেককে মিষ্টিমুখ করানো হয়। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, অর্থমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর সহ এদিনের 'হালওয়া' অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন অর্থ মন্ত্রকের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও। উপস্থিত ছিলেন অর্থ সচিব রাজীব কুমার, রাজস্ব সচিব অজয় ভূষণ পান্ডে, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক অতনু চক্রবর্তী, দীপম বিভাগের সচিব তুহিন কান্ত পান্ডে এবং ব্যয় সচিব টি ভি সোমানাথন।
বাজেটের নথি তৈরি ও ছাপানোর কাজে নিযুক্ত থাকেন অর্থ দপ্তরের কমপক্ষে ১০০ জন আধিকারিক। অর্থ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “বাজেটের গোপনীয়তা বজায় রাখতে বাজেট প্রক্রিয়ায় যুক্ত কর্মকর্তাদের বর্তমান বাজেট উপস্থাপন না হওয়া পর্যন্ত উত্তর ব্লকে অবস্থিত ছাপাখানাতেই 'লক-ইন' থাকতে হয়। এমনকি সংসদে বাজেট উপস্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত কর্মকর্তাদের তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার বা তাদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতিও দেওয়া হয় না। অর্থ মন্ত্রকের কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকেই বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। সোমবার মিষ্টিমুখ অনুষ্ঠানের পর অর্থমন্ত্রী মুদ্রণযন্ত্র পরিদর্শন করে বাজেটের মুদ্রণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
'হালওয়া' অনুষ্ঠান কেন পালন করা হয়?
হালওয়া অনুষ্ঠান পালনের কারণ হ'ল, ভারতীয় পরম্পরা অনুযায়ী যেকোনো শুভ কাজ করার আগে মিষ্টি মুখ করা উচিত, পাশাপাশি ভারতীয় রীতিতে হালওয়া অত্যন্ত শুভ বলে বিবেচিত হয়। তাই বাজেটের মতো বড় ইভেন্টের জন্য নথি ছাপার আগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই ঐতিহ্যে মেনে, বর্তমান অর্থমন্ত্রী নিজের হাতে বাজেটের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের, বাজেটের মুদ্রণের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের এবং অর্থদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে হালওয়া বিতরণ করেন। এই হালওয়া তৈরি ও বিতরণ করার পরেই বাজেটের নথি ছাপার প্রক্রিয়া শুরু হয়।