ভর দুপুরে কলকাতায় উধাও হল ছায়া! কিন্তু কেন জানেন?

ভর দুপুরে কলকাতায় উধাও হল ছায়া! কিন্তু কেন জানেন?

 

কলকাতা: “ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে গাত্রে হল ব্যথা”। সুকুমার রায়ের লাইন প্রায় হুবহু মিলে গেল রবিবার জামাইষষ্ঠীর বারবেলাতে। অনেকেই ছায়া খুঁজতে ভরা রোদের মধ্যে ছুটোছুটি করেছেন। কিন্তু ছায়ার দেখা মেলেনি। জ্যোতির্বিজ্ঞানের অন্যতম ঘটনার সাক্ষী থাকল কলকাতা। সূর্য ও পৃথিবী, কৌণিক অবস্থানে উপস্থিত থাকার জন্য ছায়া অমিল থাকল বেশ কিছু সময়। কলকাতা থেকে ছায়া হারিয়ে গেল বেশ কিছু সময়।

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আগেই জানিয়েছিলেন, রবিবার দুপুরে ছায়া পরবে না বেশ কিছু সময় কলকাতায়। মানুষজন একথা জানার পরেই অবাক হয়েছিলেন। ভরদুপুরে সূর্য মাঝ আকাশে রয়েছে। সেই সময় ছায়া পরবে না!  এ আবার হয় নাকি! সেখানেই জ্যোতির্বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা, পৃথিবী সাড়ে ২৩ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ থেকে সাড়ে ২৩ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে বিভিন্ন ভৌগোলিক স্থানে বছরে দুবার এমন ঘটনা ঘটে। একে ‘জিরো শ্যাডো ডে’ বলা হয়। বাংলায় বলা হয় ‘ ‘ছায়াহীন দিবস’। আজ রবিবার জামাইষষ্ঠীর দুপুরে এই ঘটনাই দেখা গেল। বেলা ১১টা ৩৪ মিনিট থেকে বেশ কিছু সময় ছায়া দেখা গেল না কলকাতায়। সূর্য এই সময় লম্বভাবে অবস্থান করেছে। কোনও বস্তুর উপর লম্বভাবে আলো পড়লে তার ছায়া কখনও মাটিতে পড়ে না। পদার্থবিজ্ঞানের তথ্য, নিয়ম অনুযায়ী সেই বস্তুর ছায়া উধাও হয়ে যায়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়েছে বিভিন্ন গাছ, বাড়ি, মানুষের উপর। কিন্তু কোনওভাবেই ছায়া পড়েনি মাটিতে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পৃথিবীর সাড়ে ২৩ ডিগ্রি উত্তর থেকে সাড়ে ২৩ ডিগ্রি দক্ষিণ অংশের মধ্যে অবস্থিত জায়গাগুলোতে এই ধরনের ঘটনা ঘটে। বছরে দুবার কক্ষপথের ঘোরার সময় পৃথিবীতে এই ঘটনা দেখতে পাওয়া যায়। কলকাতায় চলতি বছরে আজ রবিবার এই ঘটনা দেখা গেল। আগামী ৭ জুলাই ফের কলকাতায় এই ‘ছায়াহীন দিবস’ দেখতে পাওয়া যাবে। সাধারণ মানুষের মধ্যে ছায়া খোঁজার আগ্রহ ছিল আগে থেকেই। অনেকেই নির্দিষ্ট সময়ে ভরা রোদের নিচে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। তারা ছায়া খুঁজে পাননি। তবে বর্ষার জন্য অপেক্ষা করা দক্ষিণবঙ্গে এদিনও রোদের তেজ প্রচুর। কাজেই বেশিক্ষণ রোদের মধ্যে ছায়া খোঁজার দুঃসাহস কেউই করেননি।

সাধারণত তেনাদের অর্থাৎ ভূতদের ছায়া পড়ে না। মনুষ্য সমাজে তাদের নিয়ে বিস্তর লেখালিখিও চলে৷ তাহলে কি কলকাতার মানুষ কিছু সময়ের জন্য জীবিত ভূত হয়ে গেলেন! এই নিয়ে ঠাট্টা- মস্করাও চলছে ইন্টারনেট দুনিয়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *