শিলিগুড়ি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য রাজনীতির উত্তাপের পারদটা ক্রমেই উর্দ্ধমুখী। দলবদলের কালো মেঘে বিপর্যস্ত শাসক শিবিরকে আরো কোণঠাসা করতে উঠে পড়ে লেগেছে বিজেপি। কিন্তু হাল ছাড়তে নারাজ তৃণমূলও। একুশের নির্বাচনে ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে তাই দলের হাল ধরেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের উত্তরবঙ্গ সফরের বক্তৃতা থেকেও আরো একবার সেই বার্তাই দিয়েছেন তিনি।
উত্তরবঙ্গে আগামী দিনে তৈরি হতে চলেছে একগুচ্ছ নতুন শিল্প কারখানা, এদিন জনসভা থেকে এমনটাই দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভোটের আগে কয়েক দিনের সফরে উত্তরবঙ্গে পারি দিয়েছেন তিনি। আর সফরের প্রথম দিনেই নতুন শিল্প ও কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মন জয় করেছেন উত্তরবঙ্গবাসীর।
এদিনের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, “উত্তরবঙ্গের মানুষ জানবেন, আগামী দিনে আপনাদের এখানেও অনেক ইন্ডাস্ট্রি আসছে। তার জন্য আপনারা তৈরি হোন। কখনো হতাশায় ভুগবেন না।” আগামী ৫ বছরে রাজ্যের ছাত্র যুবদের নিজের পায়ে দাঁড় করানোই মুখ্যমন্ত্রীর একমাত্র উদ্দেশ্য, বাকি সমস্ত কাজ করা হয়ে গেছে, এদিন সেকথাও জানিয়েছেন তিনি।
উত্তরবঙ্গে এযাবৎ সরকারের কাজের খতিয়ান জনসমক্ষে পেশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আলিপুর দুয়ারে ডুয়ার্স-কন্যা, উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে নতুন বাস টার্মিনাস তৈরির কথা উঠে এসেছে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে। এছাড়া ৪৫০ কোটি টাকা খরচ করে জলপাইগুড়িতে স্টার সিমেন্টের কারখানায় প্রায় ৭ হাজার মানুষের সরাসরি কর্মসংস্থানের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কোচবিহারের মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল, সেই অনুযায়ী আমরা পুলিশের নারায়ণী ব্যাটেলিয়ন তৈরি করেছি।” দীর্ঘ দিনের আবদার মিটিয়ে গোর্খা ব্যাটেলিয়ন তৈরি করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের ফলাফল আশানুরূপ হয় নি। গেরুয়া ঝড় মূলত দেখা গিয়েছিল এই উত্তরেই। এদিন সেকথা স্বীকার করে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “লোকসভায় আমি গো-হারা হেরেছি। তাতেও আমার কোনো লজ্জা নেই।” বিধানসভায় সেই হার পুষিয়ে দেবেন উত্তরবঙ্গের মানুষ, সেই আশাই প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।