বোলপুর: আজ আশ্বিন মাসের শুক্লা চতুর্দশী তিথি। পুরানে কথিত রয়েছে, এই দিনে তারাপীঠে তারা মায়ের আবির্ভাব হয়েছিল। স্বভাবতই, ফি বারের মতো এবারও এই দিনে মন্দির চত্বরে তিল ধারনের জায়গা নেই বললেই চলে। মন্দির চত্বরে উপচে পড়ছে ভক্তদের ভিড়। পুজোর প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে।
স্বাভাবিকভাবেই, করোনা বিধি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। যদিও প্রশাসনের দাবি, ভিড় সামলাতে তাঁরা তৎপর৷। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মন্দির প্রাঙ্গনে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশও৷ পাশাপাশি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জমায়েত না করার জন্য৷ যেকোনও ধরণের ভিড় এড়িয়ে চলতে। করোনা বিধি মানার অনুরোধ করা হয়েছে। তবু বাস্তব চিত্র অন্য কথা বলছে৷
কেন এই ভিড়? পুরাণ অনুযায়ী, তারাপীঠের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া দ্বারকা নদ ধরে বাণিজ্য করতে যাচ্ছিলেন বণিক জয় দত্ত। সাপের কামড়ে তাঁর পুত্রের মৃত্যু হয়। বণিক শোকবিহ্বল হয়ে পড়েন। নদের ধারে নৌকো থামান৷ সেখানে বণিকের ভৃত্যরা রান্না করার জন্য কাটা শোল মাছ, নদ সংলগ্ন পুকুরে ধোয়ার জন্য নিয়ে যায়। পুকুরের জলে কাটা মাছগুলি বেঁচে ওঠে৷ অলৌকিক সেই ঘটনার কথা বণিক জানতে পেরে মৃত ছেলেকে সেই পুকুরের জলে স্নান করান। মৃত পুত্র ‘জয় তারা জয় তারা’ বলে ফের বেঁচে ওঠেন। সেই রাতে মা তারার মন্দির প্রতিষ্ঠার স্বপ্নাদেশ পান জয় দত্ত। দিনটি ছিল শুক্লা চতুর্দশী। সেই দিনেই প্রথম তারাপীঠে বণিক মা তারাকে প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন। তখন থেকেই এই দিনটি মা তারার আবির্ভাব দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।
মন্দির সূত্রের খবর, একমাত্র আজকের দিনেই মা তারাকে মূল গর্ভগৃহ থেকে বের করে এনে বিশ্রাম কক্ষে রাখা হয়। সন্ধের পর আবাবও তাঁকে গর্ভগৃহে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়। আবির্ভাব দিবসে মাতারা উপবাসী থাকেন। এদিন দুপুরে মাকে কোনও অন্নভোগই দেওয়া হয় না। রাতে স্নান ও সন্ধ্যারতি হওয়ার পর প্রসাদ হিসাবে শুধুমাত্র দেওয়া হয় ফল। পরে বিশ্রাম কক্ষ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর ভোগ দেওয়া হয়। স্বভাবতই, বিশেষ এই দিনে প্রতিবারের মতো এবারও তারাপীঠের মায়ের মন্দিরে ভিড় জমিয়েছেন ভক্তেরা৷