আলিপুর: আজ মহাসপ্তমী৷ বৃষ্টি মাথায় চলছে প্যান্ডেল হপিং৷ শারদ আনন্দে মেতে উঠেছে গোটা বাংলা৷ আর সেই আনন্দের মাত্রা আরও খানিকটা বাড়িয়ে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া দুস্থ মানুষের সঙ্গে শারদ আনন্দ ভাগ করে নিলেন কয়েকজন যুবক৷ আট থেকে আশি, স্টেশনে কার্যত উদ্বাস্তু বাসিন্দাদের হাতে তুলে দেওয়া হল নতুন পোশাক৷ দেওয়া হল খাবার৷ কয়েকজন যুবকের উদ্যোগে তৈরি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এই উদ্যোগের পুজোর আনন্দে মাতোয়ারা তারকেশ্বর স্টেশন সংলগ্ন পিছিয়ে পড়া এলাকার বহু মানুষ৷
‘প্রয়াস’ নামের এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে তারকেশ্বর স্টেশন ও স্টেশন সংলগ্ন দুঃস্থ মানুষদের বস্ত্র, কেক, বিস্কুট ও শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য একটি ফুটবল তুলে দেওয়া হয়৷ সংস্থার অন্যতম সদস্য দীপাঞ্জন বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের এই প্রয়াস৷ যত বেশি সংখ্যক মানুষ আমাদের পাশে দাঁড়াবেন, ততই প্রয়াসের ব্যাপ্তি বাড়বে৷ আরও বেশি মানুষের দুঃখ-সুখের সঙ্গী হতে পারব৷ তাই সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি৷
‘মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য’, গানটির প্রতিটি লাইন মনে করিয়ে দেয় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মগরাহাট থানার ধামুয়ার অন্তর্গত ‘প্রয়াস’ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কথা! নামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে মানবিকতার! প্রতি উৎস্বর্গকৃত মানব জীবনের প্রতিশ্রুতি যা প্রয়াসের মূলমন্ত্র৷ এই কর্মযজ্ঞের অশ্বমেধ ঘোড়া যারা প্রথম পরিচলনা করেন, তাঁরা হলেন দীপাঞ্জন, সুজয়, রমেশ, শুভেন, বলরাম৷ এটি মূলত একটি ফেসবুক গ্রুপ৷ যেখানে বিনোদনের সঙ্গে সঙ্গে সর্বদা সমাজকল্যাণমূলক কর্মসূচি চালিয়ে আসছে৷ মাত্র ১০ মাসের মধ্যে ১১০০ যজ্ঞরথের সারথী খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা৷ কয়েক মাসের মধ্যে সাধরণ মানুষের বিশ্বাস, ভালোবাসে দুঃখ-সুখের সাথী হতে পেরেছেন৷
নব পল্লবপ্রান্তে নব মল্লিকার মতো ফুটে ওঠা এই ‘প্রয়াস’ এই মুহূর্তে ছড়িয়ে গিয়েছে দিকে দিগন্তে৷ তারই ফলস্বরূপ গত ১৯ ডিসেম্বর গ্রুপটি শুরু হওয়ার মাত্র সাত দিনের মধ্যে অর্থাৎ ২৬ ডিসেম্বর শীতের সুপ্রভাতে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে গরীব, দুঃখী মানুষ ও ফুটপাতবাসীর কম্বল ও বস্ত্র বিতরন করে৷ গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরে পুলওয়ামা হামলায় শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন৷
মার্চ মাসে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জল, কলম ইত্যাদি দিয়ে উৎসাহিত করেন তাঁরা৷ দুঃস্থ ছাত্র-ছাত্রীদের পঠন-পাঠনের বিভিন্ন উপকরণ ও বই খাতা তুলে দেওয়া হয়৷ এছাড়া কবিগুরুর স্মরণে ২৫ বৈশাখ ধামুয়াতে ‘রবিবন্দনা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ এবার এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে তারকেশ্বর স্টেশন ও স্টেশন সংলগ্ন গরীব দুঃস্থ মানুষের অন্ন ও বস্ত্র প্রদানের মধ্যে শারদীয়ার আনন্দ ভাগ করে নেওয়া হল৷