গোবরাডাঙা: সে চাইনিজ যুদ্ধ হোক৷ কিংবা প্রথম বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ৷ কখনও বন্ধ হয়নি এই পুজে৷ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের যুদ্ধ চলাকালীন ভারতীয় সেনা বাহিনীর ক্যাম্প ছিল জমিদারবাড়িতে৷ তখন জমিদার বাড়ির পুজো থেকে শুরু করে ভাসান সবেতেই অংশগ্রহণ করে সেনাবাহিনী জওয়ানরা। এমনকি ২০০০ সালের বন্যায় জলমগ্ন জমিদারবাড়িতে ভ্যানের উপর বসে পুজো পাঠ করানো হয়।
তবে গোবরডাঙা জমিদারবাড়ির ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন পুজোয় করোনার কারণে গত বছর থেকে বন্ধ রয়েছে মূর্তিপুজো । তবে নিয়ম রক্ষার জন্য গোবরডাঙা জমিদার বাড়ির প্রসন্নময়ী কালী মন্দিরে ঘট প্রতিষ্ঠা করে দুর্গাপুজো হবে বলে জানান জমিদার বংশের সদস্যরা। এবার এই পুজো ৩১১ বছরে পড়ল।
এক সময় এই জমিদার বংশের এক সদস্য কনৌজে থাকাকালীন সেখানে পুজোর শুরু করেন। পরবর্তীতে সাগরদাঁড়ি এলাকাতেও বেশ কয়েক বছর এই পুজো হয়। এরপর আনুমানিক ৩১১ বছর থেকে গোবরডাঙা জমিদারবাড়িতে ঠাকুরদালানে হয়ে আসছে এই পুজো। জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজো থেকেই শুরু হয় পুজোর সূচনা। ঠাকুরদালানে বসেই তৈরি হত প্রতিমা। একসময় অবশ্য এই পুজো ঘিরে বসতো সংগীতের আসর। পুজোতে বলিও দেওয়া হত।
কয়েক দশক আগে সেগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছে । কালের নিয়মে ধীরে ধীরে অনেকটাই জৌলুস কমে গিয়েছে জমিদার বাড়ির পুজোর। তবে ঐতিহ্য ধরে রেখে নিয়ম করে পুজো করে আসছে জমিদার পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের সদস্যরা। এলাকার অনেক মানুষ পুজোর সময় ভিড় জমান জমিদার বাড়িতে। দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকা পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়রাও পুজোর কটা দিন এই পুজো নিয়ে মেতে থাকেন। তবে দু’বছর ধরে সেই ছন্দে তাল কেটেছে। জমিদার বাড়িতে পুজো উপলক্ষে যাতে সাধারণ মানুষের ভিড় জমানোর জেরে করোনা রোগ ছড়িয়ে না পড়ে এ কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।