চাঁচল: নারী শিক্ষা ব্যবস্থায় অগ্রসর ঘটাতে চাঁচলে মহিলা কলেজ নির্মাণে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে মিলেছে অনুমতি। শুরু হয়েছে প্রস্তুতিও। ওই মহিলা কলেজের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনকে ৫ একর জমি দেখতে বলা হয়েছে। রাজ্যের এই সিদ্ধান্তে উত্তর মালদার শিক্ষা মহলে এখন খুশির ঢেউ।
করোনা আবহে গত দু’বছর ধরে বন্ধ রয়েছে রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অনলাইনের মধ্যে চলছে ছাত্র-ছাত্রীদের পঠন-পাঠন। এমত অবস্থায় উত্তর মালদায় নারী শিক্ষা ব্যবস্থার আরও মানোন্নয়ন ঘটাতে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হল চাচোল একটি মহিলা কলেজ গঠন করা হবে। গৌড়বঙ্গের তিন জেলার মধ্যে বর্তমানে মাত্র দুটি মহিলা কলেজ রয়েছে। একটি মালদহ শহরে, অন্যটি দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে।
উত্তর মালদায় একটি মহিলা কলেজ স্থাপনের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই দাবি উঠছিল। কারণ, চাঁচল থেকে মালদহ শহরের দূরত্ব প্রায় ৭৫ কিলোমিটার। হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার। চাঁচল লাগোয়া উত্তর দিনাজপুরে কোনও মহিলা কলেজ না থাকায় এই এলাকার ছাত্রীরা সেখানেও যেতে পারতেন না। এদিকে প্রতিদিন মালদা শহরে যাতায়াত করাও তাঁদের পক্ষে অসুবিধেজনক। তাই তাঁরা এলাকাতেই একটি মহিলা কলেজের দাবি তুলেছিলেন। তাঁদের সেই আশা এবার পূরণ হতে চলেছে। গত ১০ অগাস্ট শিক্ষা দফতরের ডেপুটি সেক্রেটারি জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে চাঁচল সংসদীয় ক্ষেত্রে পাঁচ একর জমি মহিলা কলেজের জন্য চিহ্নিত করতে বলেছেন। সেকথা চাউর হতেই চাঁচল সহ গোটা উত্তর মালদায় খুশির ঢেউ।
চাঁচল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী পৃথা মজুমদার জানান, এতদিন এই এলাকার মেয়েদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে মালদহ মহিলা কলেজে পড়তে যেতে হত। এতে একদিকে সময়, অন্যদিকে টাকা খরচ হত। এই এলাকায় গরিব মানুষের বাস বেশি। এখানে মেয়েদের কলেজ হলে তারা এখানেই কলেজ লাইফ উপভোগ করতে পারবে। একাদশ শ্রেণিতে পাঠরত ছাত্রী আতিফা ফারনা হক জানান, চাঁচলে মহিলা কলেজ হলে নারী শিক্ষা ব্যবস্থার আরও মানোন্নয়ন হবে। মেয়েদেরকে ৭০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে মালদা ওমেন্স কলেজ পড়তে যেতে হয়। চাঁচলে সেই কলেজ হলে মহকুমার অনেক মেয়েদের সুবিধা। রাজ্য সরকারের উচ্চ শিক্ষা দফতরের প্রস্তাবকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি।
স্থানীয় বাসিন্দা, পেশায় শিক্ষক তমাল চক্রবর্তী জানান, চাঁচল মহকুমায় স্কুল-কলেজের বেশ অভাব। জানতে পেরেছি, রাজ্য সরকার এখানে মহিলা কলেজ খোলার উদ্যোগ নিয়েছে। এতে এলাকায় নারীশিক্ষার প্রসার ঘটবে। তবে এই এলাকায় মেয়েদের স্কুলের বড্ড অভাব। চাঁচলে একটিমাত্র মেয়েদের স্কুল রয়েছে। এলাকায় মেয়েদের আরও স্কুল খোলা হলে খুব ভাল হয়।