পরপর দু’টি কন্যা সন্তান, সারা শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা, বধূকে নারকীয় অত্যাচার স্বামীর

পরপর দু’টি কন্যা সন্তান, সারা শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা, বধূকে নারকীয় অত্যাচার স্বামীর

2429299535bc2b0808e3b632af5afebc

কলকাতা: চমকে দেওয়ার মতো ঘটনা৷ পরপর দুটি কন্যা সন্তান হওয়ার অপরাধে স্ত্রীর উপর নারকীয় অত্যাচারের অভিযোগ উঠল কালনায়৷ বধূর সারা শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা, গোপানাঙ্গে আঘাত স্বামীর৷ বিবাহ বিচ্ছেদে রাজি না হওয়ায় চরমে ওঠে এই অত্যাচার৷  আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই মহিলাকে কালনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ 

পর পর দুই কন্যা সন্তান হওয়ায় বছর খানের ধরেই এই অত্যাচার চলছিল৷ তবে মাস খানেক ধরে বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য চাপ দিচ্ছিল তাঁর স্বামী৷ কারণ মেয়ে হওয়ায় স্ত্রীকে পছন্দ নয় তার৷ কিন্তু স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদে রাজি না হওয়ায় শুরু হয় পাশবিক অত্যাচার৷ সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়ার পাশাপাশি শুরু হয় বেধরক মারধর৷ স্ত্রী যাতে বাইরের কাউকে আঘাতের চিহ্ন দেখাতে না পারে, সেই ভাবেই গোপন স্থানে মারধর করা হত তাঁকে৷ দিনের পর দিন অত্যাচার সহ্য করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই গৃহবধূ৷ বাপের বাড়ির লোকজন তাঁকে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে আসে৷ এর পরেই এই পাশবিক অত্যাচারের কথা তাঁরা জানতে পারেন৷ গত এক মাসে এই অত্যাচার মাত্রা ছাড়িয়েছিল৷ গুরুতর আহত অবস্থায় কালনা মহকুমা হাসপাতালে ওই মহিলা চিকিৎসাধীন রয়েছেন৷ তাঁর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, মেয়ে সুস্থ হওয়ার পরেই স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানানো হবে৷ 

ওই গৃহবধূর অভিযোগ, প্রথমবার কন্যা সন্তান হওয়ার পর থেকেই অত্যাচার চলছিল৷ দ্বিতীয়বার কন্যা সন্তান হওয়ায় সেই অত্যাচারের মাত্রা চরমে ওঠে৷ মাস খানের আগে তাঁকে সাফ জানানো হয়, দুই কন্যা সন্তান হয়েছে,  তাই তাঁকে আর ঘরে রাখা যাবে না৷ বিবাহ বিচ্ছেদ করতে হবে৷ 

এই ঘটনা প্রসঙ্গে সমাজকর্মী শাশ্বতী ঘোষ বলেন, স্ত্রীর কন্যা সন্তান হওয়ার জন্য স্বামীরও অবদান রয়েছে৷ এটা সবার আগে ওঁকে বোঝানো দরকর৷ ছেলে হবে না মেয়ে হবে, তা সম্পূর্ণ রূপে স্বামীর উপর নির্ভর করে৷ যে অত্যাচারটি উনি স্ত্রীর উপর করেছেন, সেই অত্যাচারটা স্বামীর উপর করা উচিত ছিল, যদি স্ত্রী যৌগিক বিষয়টি জানতেন৷ এর বিরুদ্ধে সরকারি ভাবে প্রচার করা দরকার৷ ওই স্বামীর হয়তো শাস্তি হবে৷ কিন্তু দুই কন্যা সন্তানকে নিয়ে ওই স্ত্রী কোথায় থাকবেন তা নিশ্চত করতে হবে প্রশাসন ও তাঁর পরিবারকে৷ মাঝপথ যাতে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া না হয় এবং তিনি যাতে ক্ষতিপূরণ পান, সেই বিষয়টিও প্রশাসনকে দেখতে হবে৷  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *