ইংরেজ বাজার: লকডাউন অনেকের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে রুজি রোজগার। করোনা আবহে অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। যার ফলে নিত্যদিনের সংসার টানা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবার সেই কারণে মানবাধিকার কমিশন, মুখ্যমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানালেন এক মহিলা।
ঘটনাটি ঘটেছে মালদার ইংরেজবাজার থানার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাজি পার্কে। খবর জানাজানি হতেই রাজনৈতিক দলগুলো নড়েচড়ে বসেছে। তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস, সিপিআইএম ও বিজেপি সহ একাধিক রাজনৈতিক দল নেমে পড়েছে আসরে। শাসক দলের বক্তব্য এই রাজ্যে অনাহারে কেউ মরবেন না। তারা কাউকেই অনাহারে মরতে দেবে না। অন্যদিকে কংগ্রেসের মতে এই ঘটনার শাসক দলের ও সভ্য সমাজের জন্য অত্যন্ত লজ্জার বিষয়। সিপিআইএমের মতে ওই সংসারের একজনের রোজগারের ব্যবস্থা নাকি তারাই করে দিয়েছিলেন। এই নিয়ে আপাতত চলছে টানাপোড়েন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ওই মহিলার নাম চুমকি সিংহ। তাঁর স্বামী ও তিনি দুজনেই মুখ ও বধির ছিলেন। গত জুলাই মাসে চুমকির স্বামী মারা যান। দীর্ঘদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। চুমকি তাঁর স্বামী ও একমাত্র ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতেই থাকতেন। সেলাই করে সংসার চালাতেন চুমকি। তাঁর বাবা বিদ্যুৎ পর্ষদের প্রাক্তন কর্মী। কিন্তু তিনি পেনশন পান না। অবসরের পরে যে টাকা পেয়েছিলেন তাতেই তিনি মেয়ের বিয়ে দেন এবং বাড়ি করেন। যার ফলে প্রায় সমস্ত টাকা খরচ হয়ে যায়। এরপর যা টাকা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তা চিটফান্ডে রাখেন। কিন্তু সেই টাকাও হাতছাড়া হয়ে যায়। এরপর থেকেই চুমকি সংসার চালাতে শুরু করেন। কিন্তু এই লকডাউন পরিস্থিতিতে তিনি কাজ পাচ্ছিলেন না। অভাব চরমে উঠেছিল। কিন্তু লজ্জার কারণে কাউকে সে কথা বলতে পারছিলেন না। কার্যত বাধ্য হয়েছে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রপতির কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়েছেন তিনি।