নিজস্ব সংবাদাদাতা, বীরভূম: অপরাধ পরপর দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়া! গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে, আগুন লাগিয়ে এক গৃহবধূকে খুনের অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের ময়ুরেশ্বর থানার বাসুদেবপুরের বেজা গ্রামে। অভিযুক্ত পরিবারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মৃত গৃহবধূর পরিবার৷ ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত শিক্ষক পরিবার। তদন্তে নেমেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, বছর তিরিশের সমাপ্তি সাধুর বাপের বাড়ি বীরভূমের মহম্মদ বাজার থানার পুরাতন গ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের মখদুম নগরে৷
শ্বশুরবাড়ি ময়ুরেশ্বর থানার বাসুদেবপুরের বেজা গ্রাম। প্রায় ১১ বছর আগে শিব শংকর প্রামানিক নামে এক স্কুল শিক্ষকের সঙ্গে বিয়ে হয় সমাপ্তির। গত ২ জানুয়ারি অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় তাঁর। গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ, পরপর দুটি কন্যা সন্তান হাওয়ায় তাঁদের মেয়েকে মেরে ফেলেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। প্রথম কন্যা সন্তানের বয়স ৯ বছর এবং দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের বয়স ৩ বছর৷ জানা গিয়েছে, ওই গৃহবধূ মৃত্যুকালীন ভিডিও জবানবন্দিতে স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের কথা জানিয়েছেন। সে জানায়, দ্বিতীয় কন্যা সন্তান হওয়ার পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন ব্যাপক অত্যাচার শুরু হয়৷ পুত্র সন্তান না হওয়ায় নিয়মিত মারধর করা হত তাঁকে। গত ২৬ ডিসেম্বর শ্বশুরবাড়িতে গৃহবধূ অগ্নিদগ্ধ হন তিনি৷ প্রথমে তাঁকে স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে এবং পরে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন৷
তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। চিকিৎসা শুরু হয় বেসরকারি নার্সিং হোমে। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থার আরও অবনতি হলে সেখান থেকে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হয়৷ কিন্তু সরকারি হাসপাতালে বেড না পাওয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় বর্ধমানে। ফিরিয়ে নিয়ে আসার সময় রাস্তাতেই মারা যান ওই গৃহবধূ। সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গৃহবধূর মৃতদেহ ময়নাতদন্ত হয়। এরপর গত ৬ জানুয়ারি ময়ূরেশ্বর থানায় গৃহবধূর দাদা পল্লব কুমার সাধু লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি ননদ এবং ননদের স্বামীর বিরুদ্ধে। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে শাস্তি দাবি জানাচ্ছে গৃহবধূর পরিবার।