কলকাতা: বহরমপুর গার্লস কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুতপা চৌধুরীর খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া তার প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরীকে ফাঁসির সাজা দিয়েছে আদালত। গতকাল এই মামলার শুনানিতে এমনই রায় দিয়েছেন বহরমপুরের তৃতীয় ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের অতিরিক্ত ও জেলা দায়রা বিচারক। এই রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়ে সুশান্ত নিজে। তবে এখন একটা প্রশ্ন, এই ঘটনা কি পূর্বপরিকল্পিত ছিল? সুশান্ত কি প্ল্যানমাফিক এই কাজ করেছিল? পুলিশ সূত্র কিন্তু তেমনটা বলছে না।
গত বছর ২ মে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের গোরাবাজার এলাকায় খুন হন সুতপা চৌধুরী। তার মেসের দরজার সামনেই সুশান্ত তাকে আক্রমণ করে। ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে সুতপাকে খুন করার পর নকল পিস্তল উঁচিয়ে আশপাশে ভিড় জমাতে থাকা স্থানীয়দের দিকে তেড়ে যায় সুশান্ত। তারপর পালিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, এমন ঘটনা সে পরিকল্পনা করে ঘটায়নি। বরং তীব্র ঘৃণা এবং প্রতিশোধ নেওয়ার তাগিদেই সুতপাকে খুন করে সে। জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন সুতপাকে সুশান্ত তার প্রেমিকের সঙ্গে দেখেছিল। অনেক সময় ধরেই সে তাদের পিছু নিয়েছিল। প্রথমে সুতপাকে তার প্রেমিকের সঙ্গে বহরমপুরের স্কোয়্যার ফিল্ডে সময় কাটাতে দেখে সে। তারপর তাদের সিনেমা হল পর্যন্ত ফলো করেছিল। সিনেমার বিরতিতে সুতপাকে তার প্রেমিকের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠ’ অবস্থায় দেখেই তাকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেয় সুশান্ত।
পুলিশি জেরায় সুশান্ত জানিয়েছে, সুতপা সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এলেও তাঁকে মন থেকে ভুলতে পারেনি সে। শুধু মাত্র সুতপাকে দেখার নেশায় বহরমপুরের একটি মেস বাড়ি ভাড়া করেছিল। যেখানে সুতপাকে দেখার সুযোগ থাকত, সব কাজ ফেলে সেখানেই ছুটে যেত সুশান্ত। কিন্তু সেদিন সুতপা ও তাঁর প্রেমিককে একসঙ্গে দেখে তার ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে। খুনের কিছুক্ষণ আগে সুতপার মেসের সামনেই তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে সে। সুতপা কথা বলতে না চাইলে কাটারি বার করে এলোপাথাড়ি কোপানো হয়।