কলকাতা: ফনির প্রভাব জানতে মুখ্যমন্ত্রীকে এড়িয়ে রাজ্যপালকে ফোন মোদির৷ মোদির রাজনৈতিক শিষ্টাচার নিয়ে প্রশ্ন তোলা তৃণমূলকে জবাব দিল দিল প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর৷ একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে ফোন করেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাওয়া যায়নি৷ আর সেই কারণে কথা হয়নি মমতা-মোদির৷ এই নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ভুল খবর প্রকাশ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলা হয় মোদির দপ্তরের তরফে৷
প্রধানমন্ত্রী দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণি ঝড় ক্ষয়ক্ষতি ও বিপর্যয় পরবর্তি পরিস্থিতির বিষয়ে খোঁজ দিতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথা বলিয়ে দেওয়া। পরপর দু’বারের চেষ্টাই ব্যর্থ হয়৷ কারণ দু’বারই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরকে জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ফোন করে নেবেন৷ তার মধ্যে একবার বলা হয়, মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে রয়েছেন৷ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়৷ রাজ্যপালের কাছ থেকে নরেন্দ্র মোদি রাজ্যের সাম্প্রতিক অবস্থার খোঁজখবর নেন৷
শুক্রবার ওড়িশায় অতি সক্রিয় ঘূর্ণিঝড় ফনির তাণ্ডব চালানোর খবর মিলতেই আতঙ্কে কাঁটা হয়েছিল বাংলা। বিপর্যয় মোকাবিলায় সরকারি প্রস্তুতি ছিল যথেষ্ট। বেসরকারি উদ্যোগেও সাহায্যের জন্য প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু যতটা শঙ্কা ছিল, বাংলায় ততটা প্রভাব ফেলেনি ফনি। তবে কয়েকটি জেলায় ঘরবাড়ির যেটুকু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বা ভেঙে গিয়েছে, সেইসব সরকার তৈরি করে দেবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে, এ রাজ্যে ফনির প্রভাব কতটা পড়ল, দুর্যোগে কোনও বিপদ হল কি না, সেই সম্পর্কে খোঁজ নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এসব জানতে তিনি ফোন করেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠিকে। রাজ্যপালও শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনায় হাজির হন ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত অবস্থা সরেজমিনে দেখতে। তবে বাংলার বিষয়ে খোঁজখবর নিতে প্রধানমন্ত্রী কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি ফোন করলেন না, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়৷
প্রধানমন্ত্রী ট্যুইটারে জানিয়েছেন, তিনি ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক ও রাজ্যপাল গণেশি লালের সঙ্গেও কথা বলেছেন। যেখানে পড়শি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হল, সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কেন কথা এড়িয়ে গেলেন মোদি, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়৷ বিষয়টির নিন্দা করেছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ মোদির রাজনৈতিক শিষ্টাচার নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শিক্ষামন্ত্রী৷