কলকাতা: গত চারদিন ধরে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করছেন তৃণমূলের মন্ত্রীরা। বিভিন্ন বিষয়ে যেমন রাজ্যের উন্নতির খতিয়ান দেওয়া হচ্ছে, একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করা হচ্ছে। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে ব্রাত্য বসু কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, দেশের কেন্দ্রীয় সরকার বাঙালিদের আপন ভাবে না, তাদের প্রতি ক্ষেত্রে বঞ্চিত করা হয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতে নিজের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ব্রাত্য।
সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, সম্প্রতি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন জো বিডেন। তাঁর মন্ত্রিসভায় রয়েছেন বাঙালি। কিন্তু আমাদের দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রিসভায় কোন বাঙালি পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী নেই। ব্রাত্যর কথায়, আমেরিকার প্রেসিডেন্টও বাঙালি এবং বাঙালিয়ানায় মুগ্ধ, কিন্তু বিগত বছরগুলি ধরে কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও আমাদের দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের সেই জ্ঞান হয়নি। আমেরিকা ভাবতে পারে, কিন্তু দিল্লি পারে না, মোদি পারেন না। গত সাত বছর ধরে হাফপ্যান্ট পরা মন্ত্রীদের রেখে দিয়েছে সরকার, তাও বাঙালিকে ভরসা করে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী করা হয়নি। এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।
ব্রাত্য জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ এবং তার সরকার উদারতায় বিশ্বাস করে। এখানে যে কোন রাজ্য থেকে আসা মানুষ সমান আদর এবং ভালোবাসা পান। কিন্তু উত্তর প্রদেশ বা বিহারে থাকা কোন বাঙালিকে সেই সম্মান দেওয়া হয় না। তাদের রাজ্যের মন্ত্রীসভায় কোনো বাঙালি স্থান পায় না। কিন্তু বাংলায় এটা কখনোই হয় না। বাংলা সবাইকে আপন করে নিতে পারে। বাংলায় সবাইকে আপন করে নেওয়া হয়। কিন্তু দেশের অন্যান্য রাজ্য মূলত বিজেপি শাসিত রাজ্যের মন্ত্রিসভায় কোনো বাঙালিকে দেখা যায় না। এই পরিপ্রেক্ষিতেই ব্রাত্য বলেন, যে বাঙালি উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারের মত রাজ্যে রয়েছে তাদের তারা নিজেদের লোক বলে মানতে পারছেন না। তাদের দূরাগত লোক বলেই মনে করা হচ্ছে। মেনে নেওয়া হচ্ছে তারা বাইরে থেকে এসেছেন।ব্রাত্য বলেন, যে সমস্ত বহিরাগতরা রাজ্যে এসে ঘোরাঘুরি করছেন তারা বাংলার সংস্কৃতি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তাদের রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে যেমন ধারণা নেই, তেমনই বিরসা মুন্ডা সম্পর্কেও জানেন না। এই ধরনের লোকেরাই এখন রাজ্যে এসে বাংলা এবং বাঙালিকে নানাভাবে অপমান করছে, তাদের ছোট করছে। ব্রাত্য বলেন, এই বহিরাগতদের তাণ্ডব বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার পরম্পরার একটা সম্প্রসারণ।