Aajbikel

কীভাবে উত্থান মানিকের? জানেন কত সম্পত্তির মালিক তিনি?

 | 
মানিক

কলকাতা: নিয়োগ দুর্নাতিতে কেন্দ্রীয় এজেন্সির জালে তাবড় তাবড় ব্যক্তিত্ব৷ প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শান্তি প্রসাদ সিনহা, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, গ্রেফতার হয়েছেন একের পর এক রাঘব বোয়াল৷ আর সেই তালিকায় অবশ্যই উল্লেখযোগ্য নাম মানিক ভট্টাচার্য৷ ইডি-র  চার্জশিটে যেভাবে মানিকের সঙ্গে পার্থর কথোপকথনের উল্লেখ রয়েছে, তাতে নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর ভূমিকতা স্পষ্ট৷ সেই সূত্রেই ইডি-র জালে জড়িয়ে পড়েছেন অধ্যাপক থেকে বিধায়ক হয়ে ওঠা মানিক। কী ভাবে হল রাজনৈতিক উত্থান?

আরও পড়ুন- ‘সব টাকা ওঁর কাছে’, দাবি কুন্তলের, কে এই হৈমন্তী? চেনেন গোপাল দলপতির লাস্যময়ী স্ত্রীকে

 মানিক ছাড়া ভট্টাচার্য পরিবারের অন্য কোনও সদস্য কখনই তেমন ভাবে সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত  ছিলেন না। মানিক নিজেও প্রথম জীবনে পিএইচডি সম্পন্ন করে অধ্যাপনা করতেন। পরে তিনি রাজনীতির সংস্পর্শে আসে৷ ২০১১ সালে প্রথমবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মানিক ভট্টাচার্য। নদিয়ার পলাশিপাড়া থেকে তণমূলের টিকিটে ভোটে দাঁড়ান। কিন্তু সিপিএম প্রার্থী এসএম সাদির কাছে স্বল্প ভোটের জন্য হারতে হয় তাঁকে৷ 

২০১৬-র প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়ে মানিক ভট্টাচার্যের নাম। ২০২১-এর ভোটে ফের একবার ভোটে লড়েন মানিক৷ প্রার্থী হন সেই পলাশীপাড়া থেকে। জিতেও যান তিনি৷

নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রথম থেকেই কাঠগড়ায় তৃণমূল সরকার৷  তৃণমূল যে বছর ক্ষমতায় আসে, তার ঠিক পরের বছরই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দায়িত্ব পান মানিক ভট্টাচার্য। ২০১২ থেকে ২০২২ পর্যন্ত অর্থাৎ প্রায় ১০ বছর এই গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন পলাশীপাড়ার বিধায়ক। ফলে পর্ষদের সবটাই যে তাঁর হাতের তালুর মতো চেনা, তা বলাই বাহুল্য। নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ানোর পরই তাঁকে সভাপতি পদ থেকে সরার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।

মানিকের বিধানসভা কেন্দ্র পলাশিপাড়া হলেও তাঁর পৈতৃক ভিটে নদিয়ার নাকাশিপাড়ার ঘোরাইক্ষেত্র গ্রামে। বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁকে সে ভাবে দেখা যেত না বলেই স্থানীয়দের অভিযোগ। নাকাশিপাড়ার বাড়িও থাকত তালাবন্ধ। তবে ৬৬ বছরের মানিকের জন্ম হয়েছিল নাকাশিপাড়াতেই। পরে পড়াশোনার সূত্রে পরিবারের সঙ্গে তিনি বাইরে চলে যান৷ চার ভাইয়ের মধ্যে মানিকই বড় সন্তান। বাকি তিন ভাইয়ের মধ্যে একজন প্রয়াত হয়েছে৷বাকি দুই ভাই চাকরি সূত্রে জেলার বাইরে থাকেন। ফলে নাকাশিপাড়ার বাড়ি এখন ফাঁকা৷ কখনও তাঁরা সেখানে গেলে, দরজা খোলা হয়।

তবে গ্রামের ছেলে ঘরে এলে মন খুলে নিজেদের অভাব অভিযোগের কথা জানাতেন প্রতিবেশীরা। তাঁরা জানান, মানির তত্ত্বাবধানে এলাকায় স্কুল এবং হাসপাতালও তৈরি হচ্ছিল৷ শেষবার পুজোর সময়েও গ্রামে গিয়েছিলেন প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি। কিন্তু তখনও পর্যন্ত এই কেলেঙ্কারি কথা জায়তেন না প্রতিবেশীরা।


মানিক ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র৷ সেখা থেকে বাণিজ্য নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাওয়ার পর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। এর পর যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী ল কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে কাজ শুরু করেন। অবসর গ্রহণের পর পর্ষদ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন৷ যদিও হলফনামায় নিজেকে পেনশনভোগী বলেই উল্লেখ করেছিলেন মানিক। জানান, পর্ষদ সভাপতি হিসেবে সাম্মানিক পেতেন তিনি। পাশাপাশি একটি সিনিয়র সিটিজেন স্কিম করা ছিল তাঁর৷ সেখান থেকেও টাকা পেতেন।

নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোর পর কলকাতা হাই কোর্টের তরফে মানিকের সম্পত্তির হিসেব চাওয়া হয়। আদালতে তার হিসাবও দেন মানিক৷ তবে নির্বাচন কমিশনের হলফনামায় মানিক জানিয়েছিলেন, যাদবপুরে তাঁর দুটি অ্যাপার্টমেন্ট ছাড়া তাঁর সম্পত্তির মূল্য ২ কোটি টাকার কিছু বেশি। ওই দুটি অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য প্রায় ৬৬ লক্ষ টাকা। এছাড়া ব্যাঙ্কে কিছু জমানো টাকা রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে নেই কোনও অপরাধের মামলা।


 

Around The Web

Trending News

You May like