কলকাতা: ২৯৪ আসনের বিধানসভা নির্বাচন হলেও বাংলায় একটি মাত্র আসন নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা, সেটি হল নন্দীগ্রাম। কারণ এই আসনে সম্মুখ সমরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। যখন প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হয়নি, সেই সময় থেকেই নন্দীগ্রামের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাফ লক্ষ ভোটে হারানোর দাবি করে এসেছেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার পর ব্যাপারটি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে নন্দীগ্রামে লড়তে চলেছেন এই দুজনেই। সুতরাং, ২ মে কোন একজনের যে পতন হতে চলেছে তা একেবারে বাস্তব। এই প্রেক্ষিতেই এবার সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, যদি নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরুদ্ধে হেরে যান শুভেন্দু অধিকারী তাহলে বিজেপির মুখের কি হবে। কারণ আপাতত যতটুকু প্রার্থী তালিকা ঘোষিত হয়েছে বিজেপির তরফে, সেখান থেকে জানা গিয়েছে আসন্ন বিধানসভায় লড়াই করছেন না বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিধানসভায় বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসেবে তাঁর ব্যাপারেও একাধিকবার আলোচনা হয়েছে।
ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে যাবার পরেও বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে কাউকে সামনে আনতে পারেনি এখনো। তবে স্বাভাবিকভাবে দুটি নাম সামনে আসছে। একটি হলেন দিলীপ ঘোষ, অন্যটি শুভেন্দু অধিকারী। এবার বক্তব্য হল, খড়গপুর সদর থেকে দিলীপ ঘোষ প্রার্থী হতে পারেন এমন জল্পনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আজ প্রথম দুটির অফার সম্পন্ন প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর জানা গিয়েছে, খড়গপুর সদর থেকে প্রার্থী হচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস থেকে আসা হিরণ চট্টোপাধ্যায়। তাই আপাতত মনে করা হচ্ছে দিলীপ ঘোষ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করবেন না। এবার যদি ধরে নেওয়া হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নন্দীগ্রামের হেরে গেলেন শুভেন্দু অধিকারী, তাহলে আগামী দিনে বাংলায় বিজেপির মুখ কে হবে, তাই নিয়ে এখন থেকে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। এর আগে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে একাধিকবার নাম উঠে এসেছিল বিসিসিআই সভাপতি তথা ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের। কিন্তু সেই জল্পনার যবনিকা পতন ঘটে গিয়েছে অনেক দিন। এখন মিঠুন চক্রবর্তী বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় অনেকে মনে করছেন তিনি হয়তো হতে পারেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর মুখ। তবে সেই নিয়ম প্রত্যক্ষভাবে কোনরকম দাবি-দাওয়া এখনো পর্যন্ত শুনতে পাওয়া যায়নি পদ্ম বাহিনীর তরফে।
আরও পড়ুন: ১৪ বছর পর ফের বঙ্গ রাজনীতির কেন্দ্রে নন্দীগ্রাম, ভোট উত্তাপে ফুটছে বাংলা
লোকসভা নির্বাচনের মতো অন্যান্য রাজ্যের নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি শিবির একজনকে সামনে রেখে নির্বাচন লড়ে, তিনি হলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বাংলায় সেইভাবে একটি মাত্র মুখের উপর নির্ভর করে এখনো পর্যন্ত প্রচার চালাতে দেখা যায়নি বিজেপিকে। বারংবার প্রশ্ন উঠলেও, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির মুখ কে তা নিয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি কোন নেতা। তাই অবশ্য ভাবে ২ মে’কে ঘিরে একটা আলাদাই উন্মাদনা তৈরি হয়েছে গোটা রাজ্য জুড়ে।