কলকাতা: বাংলার শিল্পাঞ্চলে দাঁড়িয়ে সিবিআই তদন্তে রাজ্যের ‘না’ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদ৷ সিবিআই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে মোদি বলেন, ‘‘আপনি যদি কিছুই যদি না করে থাকেন, তাহলে তাহলে সিবিআই তদন্তে বিধিনিষেধ চাপালেন কেন? আপনার তো ভয় থাকা উচিত নয়৷ কী দিদি! আপনার এত ভয়? আমিও তো গুজরাটে ৯ ঘণ্টা সিবিআইয়ের জেরার মুখে পড়েছিলাম৷’’ গতবছর বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিনা অনুমতিতে রাজ্যে সিবিআই তদন্ত করতে পারবে না বলে রাজ্যের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়৷ আজ, দুর্গাপুরের দাঁড়িয়ে সেই বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে আক্রমণ করেন মোদি৷
আয়ুষ্মান ভারত যোজনা থেকে সরে আসার ঘোষণায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন নরেন্দ্র মোদি৷ এই প্রকল্প থেকে সরে আসায় রাজ্য সরকার গরিবদের বঞ্চিত করেছে বলে এদিন দাবি করলেন মোদি৷ দুর্গাপুরের সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে মোদি বলেন, ‘‘আজ বাংলার গরিব মানুষের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ফ্রিতে চিকিৎসা পরিষেবা না দিয়ে প্রতারণা করছে দিদির সরকার৷ দেশে এই প্রথম কোনও রাজ্য রাজ্য সরকারের আয়ুষ্মান ভারত যোজনা থেকে নাম তুলে নিয়েছে৷’’ এদিন তিনি কটা করে বলেন, ‘‘আয়ুষ্মান ভারত যোজনার সুবিধা মানুষ পেয়ে গেলে মুখে মোদি মোদি বলবে, তখন দিদির কী হবে? এই ভয়েই দিদি এই প্রকল্প থেকে সরে এসেছে৷’’
গত ১০ জানুয়ারি কৃষ্ণনগরের সভারকারি সভামঞ্চ থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য যোজনায় রাজ্য সরকার এক টাকাও খরচ করবেন বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে সরকারি ভাবে প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ানোর বার্তা পাঠান রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয়কুমার দে৷ চিঠিতে জানিয়ে হয় হয়েছে, আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য যোজনায় জন্য ৪০ শতাংশ টাকা খরচ করতে পারবে না রাজ্য সরকার৷
এদিন সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘‘বিজেপি কর্মীদের রক্ত, ব্যর্থ হবে৷ বাংলার পরিবর্তন নিশ্চিত৷’’ বাংলার সরকার উন্নয়ন বিরোধী বলেও মন্তব্য করেন মোদি৷ বলেন, ‘‘বাংলাকে উন্নয়নের দিশা দেখানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্র, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তা হতে দিচ্ছে না৷ মা মাটি মানুষের নামে সরকারে এসে তৃণমূল সরকার হিংসার রাজনীতি করছে৷’’
এদিন দীর্ঘ বাজেটে কেন্দ্রের একাধিক যোজনার প্রসঙ্গ তুলে উন্নয়নের ঢাক পেটাতে শুরু করেন নমো৷ দেশের ইতিহাসে কৃষকদের জন্য বিজেপি সরকার সব থেকে বড় প্রকল্প এনেছে বলেও দাবি করেন তিনি৷ প্রধানমন্ত্রী শ্রম যোগী যোজনায় শ্রমিকরা তিন হাজার টাকার পেশন দেওয়া হবে বলেও জানান৷ বলেন, ‘‘আমাদের সরকার, কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, মধ্যবিত্ত, পিছিয়ে পড়া সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধান করেছে৷ তাই তো আমরা বলি, সবকা সাথ, সব কা বিকাশ৷’’
বাংলার শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরে দাঁড়িয়ে ঠাকুরনগরের বিশৃঙ্খলার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ এদিন দুর্গাপুরে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘ঠাকুরনগরের সমর্থন দেখে আমি আপ্লুত৷ কিন্তু, ভিড়ের জন্য ওখানে কিছু সমস্যা হয়েছে৷ আমি এর জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি৷ যাঁরা জখম হয়েছেন, তাঁদের জন্য আমি সমব্যার্থী৷’’ ক্ষমা চাওয়ার পরই এদিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করেন মোদি৷