কলকাতা: গোটা দেশ তথা রাজ্যজুড়ে যখন ভ্যাকসিন নিয়ে চর্চা চলছে তখন শহর কলকাতার কসবায় নকল ভ্যাকসিন কেন্দ্র এবং নকল ভ্যাকসিনের হদিস মেলে। খোদ তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মিমি চক্রবর্তী সেখান থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন যা পরে জানা যায় সেটা ভুয়ো। সেই ঘটনার পরে এখন জল অনেকদূর গড়িয়ে গেছে, আপাতত এই নকল ভ্যাকসিন কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেব পুলিশ হেফাজতে। তবে আদতে ওই নকল ভ্যাকসিনে কী ছিল, সেই তথ্য এখন প্রকাশ্যে এসেছে। ড্রাগ কন্ট্রোল লালবাজারকে রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছে যে, কসবায় টিকার নামে অ্যামিকাসিন ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল।
কসবায় কী ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে বা আদৌ কোনও ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে কিনা তা জানতে অনেক আগে থেকেই তদন্ত জারি ছিল। পুনের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া আগেই জানিয়ে দিয়েছিল যে কসবায় কোভিশিল্ড দেওয়া হয়নি। নকল স্টিকার ব্যবহার করা হয়েছিল। এবার ড্রাগ কন্ট্রোল স্পষ্ট জানিয়ে দিল, কসবায় করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিনের বদলে অ্যামিকাসিন ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের নাম করে জাল ভ্যাকসিনই দিয়েছিলেন দেবাঞ্জন দেব। উল্লেখ্য, দেবাঞ্জন ও তার তিন সঙ্গীকে আগামী ৬ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে। ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে। আগে জানা গিয়েছিল যে, দেবাঞ্জনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল একটি মাইক্রোফিনান্স কোম্পানির। ওই বেসরকারি সংস্থাটির ১৭২ জন কর্মীকেও ভুয়ো টিকা দিয়েছিল সে। বদলে ওই সংস্থাটির কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা নিয়েছিল দেবাঞ্জন।
আরও পড়ুন- তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার মাঝেই চোখ রাঙাচ্ছে জিকা, জারি সতর্কতা
কসবার এই ঘটনা নিয়ে শীর্ষ আদালতেও স্পেশাল পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। রিপোর্ট ছাড়া ভুয়ো ভ্যাকসিন প্রশাসন জানলো কী ভাবে, এই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করা হয়েছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালতে। আসলে নকল ভ্যাকসিন মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল যে রাজ্যের তদন্তে তারা আপাতত সন্তুষ্ট তাই সিবিআই তদন্তের দরকার নেই এখনই। হাইকোর্টের এই রায়কেও চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। আসলে অভিযোগকারীর বক্তব্য, কলকাতা পুলিশ প্রথমেই কী ভাবে অনুমান করেছিলো যে কসবার ভ্যাকসিন আদতে নকল। কারণ ভ্যাকসিন উদ্ধার হওয়ার পর তার পরীক্ষার রিপোর্ট সামনে না আসার আগে কিছু বলা যায় না।