কলকাতা: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর রাজ্যে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত লকাউনের মেয়াদ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তবে স্কুল-কলেজ সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১০ জুন পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে৷ ৩০ জুনের পর পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
এদিকে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫৷ এর মধ্যে ৭০ জন ১৬টি পরিবারের সদস্য বলে জানা গিয়েছে৷ এদিন আরও একবার বাংলার সীমান্তগুলি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি জানান, এই বিষয়ে অমিত শাহর সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর৷ অমিত শাহকে তিনি জানিয়েছেন বাংলার তিন দিকে তিনটি সীমান্ত আছে৷ সীমান্ত পেরিয়ে বাইরে থেকে লোক বাংলায় ঢুকে পড়ার চেষ্টা করছে৷ কিছু জায়গায় কাঁটা তার নেই৷ সেই সকল জায়গাগুলির উপর কড়া নজরদারি চালাতে হবে৷ কোনও ভাবেই যেন সীমান্ত পেরিয়ে বাংলায় রোগ ঢুকতে না পারে৷ আর বাংলা বিপদে পড়লে গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতই বিপদে পড়বে৷
অন্যদিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত কেন্দ্রের কাছে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখার আর্জিও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পণ্যবাহী ট্রেন ছাড়া বন্ধ থাকবে রেল পরিষেবা৷ কোথাও কোনওরকম জমায়েত করা চলবে না৷ যে সকল বাজারগুলিতে বেশি ভিড় হয়, সেগুলির উপর বিশেষ নজর দিতে হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আগামী দুই সপ্তাহ গুরুত্বপূর্ণ। কষ্ট হচ্ছে বুঝতে পারছি। কিন্তু বাড়িতে থাকুন।’’
পশ্চিমবঙ্গে কোন কোন এলাকায় লকডাউনের উপর জোর দেওয়া হবে? এই বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা কোনও নির্দিষ্ট এলাকার কথা বলব না৷ কোনোও এলাকা থেকে একজন রোগীর সন্ধান পাওয়া গেলেই সেই এলাকাটির উপর বিশেষ নজর দেওয়া হবে৷ জায়গাটি তৎক্ষণাৎ স্যানিটাইজ করা হবে এবং সেখানকার জনগণকে আরও বেশি সচেতন করা হবে৷ তবে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যে তিনটি টাস্ক ফোর্স তৈরি করা হয়েছে৷ এই টাস্ক ফোর্সগুলি যথাযথ ভাবে কাজ করছে৷ সংবেদনশীল কিছু এলাকা আমরা ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে চিহ্নিত করেছি৷ কিছু এলাকা এনফোর্সমেন্ট টাস্ক ফোর্স চিহ্নিত করেছে৷ এই সকল জায়গাগুলোতে যাতে সম্পূর্ণ লকডাউন হয় তার উপর নজর দেওয়া হবে৷ তবে এর মানে কখনোই মুদিখানা বা ডাক্তারখানা বন্ধ করা হবে না৷ খোলা থাকবে বাজারঘাটও৷ কিন্তু রাস্তায় অযথা জমায়েত করা যাবে না৷
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই মুহূর্তে বাংলায় ২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক আছেন৷ যাঁদরে দু’বেলা সরকারের তরফে খাওয়ানো হচ্ছে৷ ৭১১টা ক্যাম্প করা হয়েছে৷ ৪৪ হাজার লোক হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে৷ যাঁদের উপর নিয়মিত নজর রাখা হচ্ছে৷ সুতরাং এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে সকলকেই দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে৷ তবে কোনও বাড়ির একজন সদস্য আক্রান্ত হওয়া মানে গোটা পরিবারকে অচ্ছুৎ করে দেওয়া নয়৷ বরং তাঁদের আরও সতর্কে রাখতে হবে৷
We are thinking of allowing bakeries to function but proper protocol should be followed so that no violation takes place: West Bengal CM Mamata Banerjee https://t.co/5hUjTgttww
— ANI (@ANI) April 11, 2020