কলকাতা: পূর্ব নির্ধারিত সূচি মেনেই এদিন দুপুরে কালীঘাটের দফতর থেকে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস৷ কোভিড পরিস্থিতিতে ধর্মতলার সমাবেশ করতে না পারার দুঃখ প্রকাশ করেন তৃণমূল নেত্রী৷ তিনি বলেন, হৃদয়ে ব্যথা নিয়েই এই সমাবেশ করছি৷ আগামী বছর ২১ মে ঐতিহাসিক রেজাল্টের পর ঐতিহাসিক সমাবেশ হবে বলে দাবিও করেন তৃণমূল নেত্রীর৷
এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ২০২০ তে আমপানের মতো বিধ্বংসী ঝড় হয়েছে৷ কোভিড চলছে৷ তা সত্বেও রাজ্যে উন্নয়ন কিন্তু থেমে নেই৷ কেন্দ্র আমাদের বঞ্চনা করেছে৷ বাংলাকে চিরকাল অসম্মান করা হয়েছে৷ দিনেদুপুরে আমাদের যে ভাবে অসম্মান করছে, তার বদলা আমরা নেব৷ তবে এই বদলা আমরা মানবিকতাকে জয় করে নেব বলেই মন্তব্য করেন তৃণমূল সুপ্রিমো৷
দিল্লির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার জেনে রেখো, বহিরাগতরা বাংলা চালাবে না৷ বাংলা চালাবে বাংলার মানুষ৷ যারা বাংলাকে ভালোবাসে৷ তৃণমূল কংগ্রেসকে এত দুর্বল ভাবার কোনও কারণ নেই৷ প্রতিদিন সকালে কিছু লোক আসে যাদের না আছে আদর্শ, না আছে দর্শন, না আছে চেতনা, বিবেক, শুভবুদ্ধি৷ রাজনীতি কাকে বলে সেটাই জানে না৷ তাঁরা শুধু এনকাউন্টারের কথা বলতে জানে, গুলি মারার কথা বলতে জানে৷ তাঁদেরকে আমার প্রশ্ন, আপনাদের রাজনৈতিক জন্ম কোথায়? আমরা জন্ম থেকে বাংলায় আছি৷ কোনও দিনও আপনাদের নাম শুনিনি, যে রাজনীতি করেছেন৷ কোনও দিনও শুনিনি মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছেন৷ কেন্দ্রে ক্ষমায় আছেন বলে কি গায়ের জোড় দেখাচ্ছেন? শিল্পীদের আক্রমণ করছেন, প্রশাসনকে আক্রমণ করছেন৷ আন্দোলন করতে গেলে আক্রমণ করছেন৷ আমরা ভুলে যাইনি এনআরসি’র লড়াই৷ কী ভাবে সেদিন দিল্লিতে মানুষগুলোকে খুন করা হয়েছিল৷ নর্দমা বা পুকুরে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন দেহগুলো৷ আজও মানুষ জানেনা, কত মানুষ মারা গিয়েছে৷ মানুষকে প্রতিবাদ করতে দেন না৷ কোভিড চলছে বলে এনআরসি ভুলে যাব, সেটা ভাববেন না৷ ভাববেন না এনসিআর ভুলে যাব৷ আমরা ভুলে যাইনি এনসিআর-এর লড়াই৷ আমরা সবাই এখানকার নাগরিক৷ নতুন করে আপনি আবার কী নাগরিকত্ব দেবেন? বাংলাদেশ থেকে আগত সমস্ত নাগরিককে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে৷ উদ্বাস্তুরা আজকে ভারতের লোক৷
তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, কীসের রাজনীতি চলছে দেশে? কোনও মানুষের কথা বলার অধিকার নেই৷ আমপান হল, বিজেপির কী নাচানাচি বাপরে! প্রধানমন্ত্রী এলেন এক ঘণ্টার জন্য দয়া করে। আমি তাঁকে ছোট করব না৷ কিন্তু বাংলা কি তার প্রাপ্যটা পেয়েছে? এক হাজার কোটি টাকা অগ্রিম দিয়েছিলেন৷ আমরা সঙ্গে সঙ্গে সে টাকা খরচ করে দিয়েছি। ইতিমধ্যে সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে৷ শান্তিতে ক’দিন কাজ করতে পেরেছি। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দেয়নি। বঞ্চনা করেছে। কথায় কথায় অপমান করেছে।