হলদিয়া: হলদিয়ায় অরাজনৈতিক সভা থেকে তৃণমূলের নাম না করেই বহিরাগত ইস্যুতে শাসক দলকে বিঁধলেন শুভেন্দু অধিকারী৷ সতীশ চন্দ্র সামন্তের ১২১ তম জন্ম জয়ন্তী অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে তাঁর গলায় শোনা গেল বিদ্রোহের সুর৷ কোনও রাজনৈতিক দলের নাম না করেই তিনি বলেন, যে দেশের সংবিধানে ফর দা পিপল, অফ দা পিপল, বাই দা পিপল বলা আছে সেখানে ‘ফর দা পার্টি, অফ দা পার্টি , বাই দা পার্টি’ ব্যবস্থা কেন থাকবে? এখানে কেউ বহিরাগত নয়৷ আমরা সবাই ভারতীয়৷
আরও পড়ুন- দীর্ঘ লড়াই শেষে ছুটি পেলেন বুদ্ধদেব! চোখে-মুখে বাড়ি ফেরার আনন্দ
এদিন সুর চড়িয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘যাঁরা আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন তাঁরা শুনে রাখুন, আমি অনেক লড়াইয়ের সাক্ষী৷ এখানে আসতে আমাকে বাধা দেওয়া হয়েছে৷ ১১ বার আমার উপর হামলা হয়েছে৷ কিন্তু জনশক্তি, যুব শক্তি আর মাতৃ শক্তির আশীর্বাদ ঠিক জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে৷’’ তিনি বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী কোনও পদের লোভ করে না৷ মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরেও আমার সভায় লোক আসে৷ এই লোককে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম বা কংগ্রেসের যাঁরা পদে আছে তাঁরা আনেনি৷ জনগণর সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক৷ কেউ বা কারও ইচ্ছায় এই সম্পর্ক ছিন্ন করা অত সহজ নয়৷’’ তাঁর কথায়, ‘‘শুভেন্দুর পরিবার বাংলা বাঙালির পরিবার৷ আগামী লড়াইয়ে গ্রামের মানুষ জিতবে, জেলা জিতবে৷ সতীশ সামন্তের দেখানো পথেই আমি চলব৷’’ তাঁর বার্তা, বেকার যুবকের কর্ম সংস্থান, কৃষকের অধিকারের দাবিতে চলবে তাঁদের লড়াই৷ মিলে মিশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই হবে আমাদের একমাত্র পথ৷
শুভেন্দুবাবু বলেন, রাজনৈতিক পথ ও মতের পরিবর্তন হতে পারে৷ পদের পরিবর্তন হতে পারে৷ কিন্তু আমাদের প্রথম পরিচয় হল আমরা ভারতীয়৷ তার পর আমরা বাঙালি৷ এদিন নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গও উঠে আসে তাঁর কথায়৷ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের আন্দোলন কোনও দল বা ব্যাক্তির ছিল না৷ ওই আন্দোলন ছিল মানুষের৷ মানুষই জয়ী হয়েছে৷’’ ২১-এর ভোট যুদ্ধে তৃণমূলের হাতে অন্যতম অস্ত্র হয়ে উঠেছে বহিরাগত৷ এদিন বহিরাগত ইস্যুতেও নাম না করে তৃণমূলকে তুলোধোনা করলেন শুভেন্দু৷ তিনি বলেন, ‘‘সতীশবাবু কোনও দিন জওহরলাল নেহরুকে বহিরাগত বলে ভাবতেন না৷ আর পন্ডিত জওহরলাল নেহরুও কখনও সতীশ সামন্তকে অহিন্দিভাষী বলে ভাবতেন না৷ এটাই হল ভারতবর্ষ৷ স্বামী বিবেকানন্দের একমাত্র আরাধ্য দেবী ছিলেন ভারত মাতা৷ তাই ভারতকে বাদ গিয়ে হলদিয়া নয়৷ ভারতকে বাদ দিয়ে বাংলা নয়৷ আমরা ভারতীয় আমরা বাঙালি৷’’
আরও পড়ুন- কয়লা পাচারকাণ্ডে সিবিআই তদন্ত কীভাবে? হাইকোর্টে মামলা ঠুকলেন লালা!
শুভেন্দুর কথায়, আগে সতীশ সামন্তের জন্য কোনও কাজ হয়নি৷ হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ সতীশবাবুর কোনও চিহ্ন রাখেনি৷ যাঁরা এখানকার চেয়ারম্যান, সাংসদ থেকে জনপ্রতিনিধিরা ছিলেন তাঁরা কোনও কাজ করেননি৷ এইচজিএ-এর দায়িত্বে থাকার সময় কাজ করেছিলাম৷ তিনি বলেন, ‘‘তবে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের অট্টালিকায় আমি যেতাম না৷ বরং হলদিয়া ভবনের নীচের তলায় একটা ছোট ঘরে আপনাদের কাজ করার জন্য বসতাম৷ ’’ ৫০ কোটি টাকা দিয়ে তৈরি বিশাল অট্টালিকা সতীশ সামন্তের নামে করে তাঁকে অক্ষয় করার চেষ্টা করা হয়েছে৷ হলদিয়া ট্রেড সেন্টারকে সতীশবাবুর নামে করা এবং সেখানে তাঁর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করার দাবি ও রয়েছে৷ হলদিয়া বন্দরের নামও সতীশবাবুর নামে করা হোক, এটাই তাঁদের দাবি৷