পুজো কার্নিভাল না করলেই নয়? ফের সমালোচনার মুখে রাজ্য

কলকাতা: আরজি কর আবহে রেড রোডে দুর্গাপূজো কার্নিভাল এর প্রিপারেশন। আরও ব্যাকফুটে তৃণমূল! এই মূহুর্তে কার্নিভাল আদৌ কি যুক্তিসঙ্গত? বড় কারণ দেখাল রাজ্য সরকার। উৎসবে…

Picsart 24 09 19 04 20 59 452

কলকাতা: আরজি কর আবহে রেড রোডে দুর্গাপূজো কার্নিভাল এর প্রিপারেশন।
আরও ব্যাকফুটে তৃণমূল! এই মূহুর্তে কার্নিভাল আদৌ কি যুক্তিসঙ্গত?
বড় কারণ দেখাল রাজ্য সরকার।

উৎসবে ফিরুন। বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার উৎসবের শুরু তোড়জোড়। জুনিয়র চিকিৎসকদের টানা কর্মবিরতির মাঝেই, বিরোধীদের সমালোচনা কে উড়িয়ে, কিছু মানুষের ‘উৎসবে ফিরতে না চাওয়া’ কে তোয়াক্কা না করেই পুজো কার্নিভাল এর প্রস্তুতিতে সামিল রাজ্য সরকার।

আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা। সামনেই দুর্গাপুজো। প্রস্তুতি শুরু হয়েছে কার্যত সর্বত্রই। এসবের মাঝেই কার্নিভালের প্রস্তুতি শুরু করল রাজ্য। রেড রোডের উপর মঞ্চ তৈরি, আলোর ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সরাসরি সম্প্রচারের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা, সবকিছুর জন্যই দরপত্র চাইল রাজ্য। বিজ্ঞপ্তিতেই বেঁধে দেওয়া হয়েছে ডেডলাইন। কাজ শেষের সময়সীমা। আর এসব হচ্ছে কখন? আরজি কর হাসপাতালে অন ডিউটি মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ খুনের ঘটনায় সুবিচার এর দাবিতে যখন পথে নামছে মানুষ। আন্দোলন প্রতিবাদ এর ঝড় যখন সর্বত্র। যখন আরজি করের ঘটনায় রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে কার্যত প্রশ্ন তুলে ক্ষোভে ফুঁসছে আট থেকে আশি।‌ ঠিক তখনই কার্নিভাল নিয়ে তোড়জোড় শুরু করতেই ফের তীব্র সমালোচনার মুখে মমতা সরকার।

তাতে কাজ থেমে নেই। কার্নিভালের প্রস্তুতিতে অন্যান্য বছরের মতোই ত্রুটি রাখছে না রাজ্যের পূর্ত দপ্তর। মঞ্চ তৈরি থেকে রেড রোড এলাকার বড় গাছের ডাল কাটা, আলো থেকে ইন্টারনেটের ব্যবস্থা সবের জন্যই টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ষষ্ঠীর মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে বলেও সেখানে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু আরজি কর কাণ্ডে যখন উত্তাল বাংলা, যখন পুলিশ থেকে স্বাস্থ্য দফতরের কীর্তিতে ক্রমেই কোণঠাসা তৃণমূল তখন এই কার্নিভাল কী খুব দরকার ছিল? আড়ালে আবডালে অলরেডি যখন কিছু মানুষ এই প্রশ্নটা করতে শুরু করেছে, তখন সরকার মোটের উপর যা জবাব দিয়েছে তাতে চিরে ভেজার নয়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, পুর্ত দপ্তর বলছে, কার্নিভাল সরকারি অনুষ্ঠান। কয়েকমাস আগেই এর সময় ধার্য হয়ে যায়। ফলত নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শুরু করতেই হবে। সেই কারণেই আর জি কর আবহেই এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ।
কিন্তু তার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেরই প্রশ্ন, এবছর কার্নিভাল এড়ানো যেত না? যদিও আরেকাংশের মতে, গরীব দুঃস্থদের জন্য উৎসব হলে, কার্নিভালে দোষ কোথায়?

বলাই বাহুল্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ২০১৬ সাল থেকে শুরু হয়েছে পুজো কার্নিভাল। ২০২৩ সালে বাংলার দু্র্গাপুজো ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার পর কার্নিভালের জাঁকজমক আরও বেড়েছে। প্রতিবছরই পুজোর বেশ কিছুদিন আগেই কার্নিভালের দিনক্ষণ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারও তার অন্যথা হয়নি। মাস তিনেক আগেই তিনি জানিয়েছিলেন ১৫ অক্টোবর রেড রোডে হবে কার্নিভাল। তার পর পেরিয়েছে সময়। এবছরও একইভাবে কার্নিভাল আয়োজনের পরিকল্পনা রাজ্যের। সেই মতোই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে কাজ।

ক্যালেন্ডারের পাতা বলছে, হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটা দিন। মা আসছে। এখন দেখার এবার পুজোয় আরজি কর কাণ্ডে সুবিচারের দাবিতে লড়াই জারি রেখে ঠিক কতটা উৎসব মুখর হতে পারে গোটা বাংলা? আর আপামর বাঙালি..