‘ডেকে এনে আপমান’, নেতাজির অনুষ্ঠানমঞ্চে ভাষণ বয়কট মমতার

‘ডেকে এনে আপমান’, নেতাজির অনুষ্ঠানমঞ্চে ভাষণ বয়কট মমতার

 

কলকাতা: আসছে নির্বাচন, চড়ছে উত্তেজনা৷ করোনাকে হারিয়ে চলছে মিছিল-মিটিং৷ তপ্ত বাংলার রাজনীতির ময়দান৷ রাজনীতির উত্তাপের আবহে এবার একমঞ্চে ধরা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সৌজন্যে এবার নেতাজি! ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে মোদী-মমতাকে একমঞ্চে দেখা গেলেও স্লোগান ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷ মুখ্যমন্ত্রী ভাষণ দিতে মঞ্চে উঠতেই ওঠে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান৷ তাতেই তীব্র অনমানিত হন মুখ্যমন্ত্রী৷ ভাষণ বয়কট করে করেন প্রতিবাদ৷

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ দুপুরে কলকাতায় আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ বিমানবন্দরে থেকে নেতাজিভবনে যান প্রধানমন্ত্রী৷ তারপর যান ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে৷ সেখানে নেতাজির মূর্তিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ এরপর ভিক্টোরিয়াল মেমোরিয়ালে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী৷ এরপর দেখা যায় রাজনৈতিক সৌজন্যের ছবি৷ ভিক্টোরিয়াল মেমোরিয়ালে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ছিলেন রাজ্যপাল৷ নেতাজিকে নিয়ে বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী দেখেন তাঁরা৷ এরপর বাধে বিপত্তি৷

চিত্র প্রদর্শনী দেখে ভিক্টোরিয়াল মেমোরিয়ালে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সংগ্রহশালার বাইরে চলে আসেন প্রধানমন্ত্রী-রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী৷ অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছতেই মোদীর নামে ওঠে স্লোগান৷ তাতে বেশখানিকটা তালকাটে নেতাজির শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানের মেজাজে৷ আজ  ভিক্টোরিয়াল মেমোরিয়ালে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী-রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী পাশাপাশি ছিলেন বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতারা৷ ছিলেন দিলীপ-বাবুল-শুভেন্দু৷ এদিনের অনুষ্টানমঞ্চে মোদী-মমতাকে দেখা গেলেও কিছুটা হলেও পিছনের দিকে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে৷ প্রধানমন্ত্রী-রাজপাল পাশাপাশি থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী বেশ খানিকটা পিছনে৷ পরে  সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মোদী-মমতা পাশাপাশি বসতে দেখা গেলেও মুখ্যমন্ত্রীর পাশের আসনে ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়৷ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এহেন ছবি দেখা দিলেও নেতাজির শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে কেন মোদীর নামে জয়ধ্বনি? প্রশ্ন তুলছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷ এখানেই থামেনি বিতর্ক৷ বরং বেড়েছে৷

ভাষণের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা হতেই দর্শক আসন থেকে উঠে আসে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান৷ তাতেই চরম ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী৷ গোটা ঘটনার বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ প্রধানমন্ত্রীর সামনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হাজির অতিথিদের সামনে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, ‘‘আমার মনে হয়, সরকারি অনুষ্ঠানে একটি ডিগনিটি হওয়া দরকার৷ এটা সরকারি প্রোগ্রাম৷ এটা কোন রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠান নয়৷ এটা সাধারন জনগনের অনুষ্ঠান৷ আমি কৃতজ্ঞ প্রধানমন্ত্রীর কাছে, তথ্য-সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে, তারা কলকাতায় অনুষ্ঠান আয়োজন করেছেন৷ কিন্তু কাউকে আমন্ত্রণ করে, কাউকে ডেকে এনে অপমানিত করা উচিত নয়৷ আমি এটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে, এই মঞ্চ থেকে আর কিছু বলতে চাই না৷’’ তবে, ভাষণ বয়কট করলেও গোটা অনুষ্ঠানের রীতিনীতি পালন করেন মুখ্যমন্ত্রী৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × four =