কলকাতা: রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আর কয়েক সপ্তাহ বাকি। ইতিমধ্যেই রাজ্যে পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। জেলায় জেলায় চলছে ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণ। তার মধ্যেই ভোটের কাজে নিযুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীদের জন্য মঙ্গলবার সুখবর দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। প্রতিটি ভোট কর্মীর জন্য নির্ধারিত মূল্যের লাঞ্চের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে। কিন্তু মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা, বীরভূম, নদিয়া-সহ বহু জেলায় নির্দেশ মানা হয়নি বলে অভিযোগ। রাজ্যের বেশিরভাগ জায়গায় এক কাপ চা ও বিস্কুট দিয়ে কাজ সারা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ভোটের কাজে নিযুক্ত শিক্ষক মহলের ধারাবাহিক প্রতিবাদের ফলে সোমবার নির্বাচন কমিশন ভোটকর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট মূল্যের লাঞ্চের প্যাকেট বরাদ্দ করেছিল। প্রশিক্ষণরত ভোটকর্মী শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীদের জন্য ১৭০ টাকার প্যাকেট দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু মঙ্গলবার আদপেই তা হল না। কোনোমতে চা-বিস্কুট খাইয়ে দায় সারা হল। এই নিয়ে ভোটকর্মীরা প্রশ্ন তোলায় বিভিন্ন জায়গায় বাদানুবাদের সৃষ্টি হয়।
শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী ও শিক্ষানুরাগী মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী জানিয়েছেন, “কোচবিহার জেলায় মাত্র কুড়ি টাকা টিফিন বাক্স দেওয়া হয় ভোটকর্মীদের। আলিপুরদুয়ার জেলার ম্যাক উইলিয়াম স্কুলে ৫০ টাকার টিফিন প্যাকেট দেওয়া হয় প্রশিক্ষণরত ভোটকর্মীদের। এই নিয়ে সেখানকার ভোটকর্মীরা বিক্ষোভ দেখালে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভ সামাল দিতে এসে টিফিন প্যাকেটে কারচুপির কথা কার্যত মেনে নিয়েই ভোটকর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বকেয়া ১৩০ টাকা দিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, “মালদা জেলায় ভোটকর্মীরা প্রশ্ন তোলায় আধিকারিকরা তাদের অসম্মানজনক কটূক্তি করেন। একইভাবে মুর্শিদাবাদ-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ করছেন ভোটকর্মীরা। আমরা জেলায় জেলায় আধিকারিকদের এই আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই অস্বচ্ছতা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে প্রতিটি ভোটকর্মীদের অ্যাকাউন্টে বরাদ্দ অর্থ দিয়ে দিতে হবে।”
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার সম্পাদক অনিমেষ হালদার এই নিয়ে জানিয়েছেন, “প্রশিক্ষণে প্রথম থেকেই অনিয়ম চলছিল। গতকাল কমিশন নির্দেশ দিয়ে তাদের অবস্থান জানিয়েছিল। কিন্তু তারপরও আজ মুর্শিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ-সহ বিভিন্ন জেলায় এই নির্দেশ মানা হয়নি। বেশিরভাগ জায়গায় চা ও বিস্কুট দিয়ে দায় সারা হয়েছে, কোনও কোনও জায়গায় সেটাও মেলেনি। সামান্য লাঞ্চের বরাদ্দে যদি এমন দুর্নীতি হয় তাহলে এই নির্বাচন কমিশন কীভাবে ভোটকর্মীদের নিরাপত্তা ও পরিকাঠামো সুনিশ্চিত করবে? এরকম একটি বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে হচ্ছে এটাও অত্যন্ত লজ্জার ব্যাপার।” -ফাইল ছবি৷