বিশ্বভারতীতে লজ্জার তাণ্ডব, তৃণমূল বিধায়ক-সহ ১২ জনের নামে FIR

বিশ্বভারতীতে লজ্জার তাণ্ডব, তৃণমূল বিধায়ক-সহ ১২ জনের নামে FIR

বোলপুর: শান্তিনিকেতনে পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে লজ্জার তাণ্ডব দেখেছে গোটা বাংলা৷ তৃণমূল বিধায়কের নেতৃত্বে বিশাল মিছিল থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ৷ উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস৷ জেসিবি দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বিশ্বভারতীর তোরণ৷ লন্ডভন্ড করে দেওয়া হয় অস্থায়ী ক্যাম্প অফিস৷ তাণ্ডবের নিন্দ না করলেও নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ওখানে কোনও নির্মাণকাজ হোক, তা আমি চাই না৷ পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূল বিধায়কের নেতৃত্বে বিশাল মিছিল থেকে বিশ্বভারতীতে লজ্জার তাণ্ডবের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়৷ পুরো বিষয়টি কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক ও প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে৷ এরপর অভিযুক্ত তৃণমূল বিধায়ক সহ  ১২ জনের বিরুদ্ধে ইমেল করে এফআইআর দায়ের করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ৷ উল্টে বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে অভিযোগ৷

পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে আশান্তি ও রবিঠাকুরের স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানে লজ্জার তণ্ডবের বিরুদ্ধে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক-সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ৷  শান্তিনিকেতন থানায় গভীর রাতে ইমেল করে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে খবর৷ নির্দিষ্ট ১২ জনের নামে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে৷ তালিকায় এক নম্বরের নাম রয়েছে দুবরাজপুরের তৃণমূল বিধায়ক নরেশ বাউড়ি৷ অন্যদিকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও দায়ের হয়েছে অভিযোগ৷ এদিকে বিশ্বভারতীকাণ্ডে আগামীকাল জেলাশাসকের নেতৃত্বে বৈঠক রয়েছে৷ তার আগে বিশ্ববিদ্যালয় আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী৷বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিং গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন গণ্ডগোলের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়৷ সেখান থেকে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷

অন্যদিকে, পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৫টি মামলা রুজু হয়েছে৷ বিশ্বভারতীর ঠিকাদারকে মারধর করার অভিযোগ তুলে বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে অভিযোগ৷ একইভাবে মহিলা আশ্রমিককে হেনস্থার ঘটনায় বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে৷ এছাড়া, করোনা আবহে জমায়েত করায় দায়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে অভিযোগ৷ রাস্তা বন্ধ করে স্থানীয়দের হেনস্থা করার ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃবপক্ষের বিরুদ্ধে৷

কিন্তু অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, পাঁচিল তোলা বা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি থাকতেই পারে, কিন্তু তাই বলে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান মধ্যে বুলডোজার নিয়ে এভাবে তাণ্ডবলীলা চালানোর কি মানে? আদতে কি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানকে আরও বাড়াল? নাকি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অবমাননা করলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী সংগঠনের একাংশ?
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙাকে কেন্দ্র করে গোটা বাংলায় যে লজ্জার তাণ্ডবলীলা দেখেছিল, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় বুলডোজার নিয়ে ভাঙচুর, তাণ্ডব কি একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল? প্রশ্ন তুলছেন রবি অনুরাগীদের একাংশ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 5 =